প্রকাশ: রোববার, ১৩ আগস্ট, ২০২৩, ৯:০১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
কক্সবাজারে সদ্য বিদায়ী সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল বলেছেন, 'কক্সবাজারের প্রধান সমস্যা মাদক চোরাচালান। বর্তমানে কক্সবাজারের আদালতে ১০ হাজারেরও বেশি মাদক মামলা রয়েছে। এছাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলো হচ্ছে ক্রিমিনাল তৈরি ও মাদকের কারখানা। রোহিঙ্গাদের মাদক, অস্ত্র ও খুনের মামলার আসামিদের জামিনের জন্য কতিপয় আইনজীবী ও দালাল বছরে কোটি কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। তারা জজ কোর্টে জামিন না পেলে হাইকোর্টে চলে যাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের অপরাধের কারনে কক্সবাজারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এই ক্যাম্প গুলো এখন ইয়াবা কারবারিদের মুল কেন্দ্র।
শনিবার (১২ আগষ্ট) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সম্মেলন কক্ষে কক্সবাজার নাগরিক ফোরাম আয়োজনে এই বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত সবাই তিনি এসব মন্তব্য করেন।
এ-সময় এই বিচারক আরও বলেন, ‘কক্সবাজারের আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে চিহ্নিত সব অপরাধীদের জামিন বন্ধ রেখেছি মাদক নিয়ন্ত্রন এর জন্য আসামিদের জামিন মঞ্জুর না মন্জুর বন্ধ রেখেছি।মাদক ব্যাবসায়ীদের জরিমানা প্রথা চালু করে তাদের অর্থনৈতিক শাস্তির ফলে সরকারি কোষাগারে লাখ লাখ টাকা জমা করেছি। এছাড়া দেশে মোট জনসংখ্যার চেয়ে মামলার সংখ্যা অনেক বেশি।তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিথ্যা মামলা ও নাগরিক হয়রানি বাড়ছে। তাই সরকারের শীর্ষমহল ও বিবেকের তাড়নায় চেষ্টা করেছি,মামলা জট কমিয়ে সাধারণ মানুষকে আদালত থেকে বিদায় করতে।তারা যেন আদালতের বারান্দায় অযথা ঘুরাঘুরি না করে নিজেদের কাজকর্ম করে চলতে পারে। একারণে যোগদানের পর থেকে প্রায় ১৫হাজার এর মত ফৌজদারি মামলা নিষ্পত্তি করেছি।
জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল কক্সবাজারে সাড়ে তিন বছর দায়িত্ব পালনকালে নানা অভিজ্ঞতা, বিচারাঙ্গনের নানা সমস্যা ও সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরেন তিনি আরও বলেন দেশে সবচেয়ে হত্যা মামলা বেশি কক্সবাজারে। এরমধ্যে রোহিঙ্গাদের কারণে খুন খারাবি সহ নানা অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে। মেজর অবঃ সিনহা হত্যা মামলা সহ কক্সবাজারের বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর মামলা নিষ্পত্তির কারনে তার নিরাপত্তা জনিত সমস্যার আশংকাও রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। মেজর সিনহা হত্যা মামলার মৃত্যু দন্ড প্রাপ্ত আসামি বরখাস্ত ওসি প্রদীপ ও তার সহযোগীরা নানা ষড়যন্ত্রে রয়েছে বলে জানান তিনি। এছাড়া ওসি প্রদীপের মৃত্যু দন্ড হওয়ায় কক্সবাজারে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড বন্ধ হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে তিনি আরও জানান, বর্তমানে আইনজীবীদের অধিকাংশই জামিনের পেছনে দৌড়ায়। তারা মুল মামলা পরিচালনা কিংবা ট্রায়াল শুনানি করেনা। তাদের প্রশিক্ষণের অভাব রয়েছে। তার আবেদনের ভিত্তিতে বদলিজনিত বিষয়কে ওএসিড করা হয়ে বলে কোন মাধ্যমে যে সংবাদ প্রচার হয়েছে তা সত্য নয় বলে দাবি করেন। অনুষ্ঠানে আইনজীবী,সাংবাদিক ও বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।