প্রকাশ: শুক্রবার, ১১ আগস্ট, ২০২৩, ৮:০৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
খুলনার পাইকগাছায় অবৈধভাবে কৃষি জমি ও সরকারি খাল দখল করে ইটভাটা নির্মাণ চলছে। তোয়াক্কা করছে না আদালতে নিষেধাজ্ঞা। নেইনি কোন অনুমোদনও। এদিকে জমি ফিরে পেতে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ধর্ণা দিচ্ছেন সত্তর ঊর্ধ্ব বৃদ্ধা মাহমুদা খাতুন।
অভিযোগ সূত্রে ও সরেজমিনে জানাগেছে, উপজেলার চাঁদখালী-মৌখালী সড়কের দক্ষিণ পাশে চাঁদমুখি মৌজায় বৃদ্ধা মাহমুদা খাতুনের প্রায় আড়াই বিঘা জমি। এলাকার প্রভাবশালী শফিকুল ইসলাম শফি অন্য একজনের মাধ্যমে ধান ও মাছ চাষ করার শর্তে মৌখিক লিজ গ্রহণ করেন। ধান ও মাছ চাষ না করে সেখানে ইট ভাটা তৈরি করার জন্য কাজ শুরু করে। খবর পেয়ে গত ১৭ জুলাই জমির মালিক মাহমুদা খাতুন ভাটা তৈরির কাজে বাধা দেন। সে সময় সে বাঁধা উপেক্ষা করে কাজ চালাতে থাকলে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৪ ধারার মামলা করেন। যার নম্বর ৩২৮/২৩। আদালাত উক্ত জমির উপর ইটভাটা তৈরি বন্ধ করতে নিষেধাজ্ঞা দেন। আদালতের নোটিশ পাওয়ার পর প্রভাবশালী শফিকুল ইসলাম অদৃশ্য ক্ষমতা বলে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে আরো বেশি লোকবল নিয়ে ভাটা তৈরির কাজ অব্যাহত রেখেছেন।
সরেজমিনে পরিদর্শন যেয়ে দেখা যায় প্রভাবশালী শফিকুল ইসলাম শফির লোকজন ভাটার চিমনি ও ক্লিনার তৈরির কাজ অব্যাহত রেখেছেন। এদিকে নতুন তৈরি ইটভাটা বন্ধের দাবী জানিয়ে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদপ্তর, উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন এলাকার জিয়ারুল গাজী ও হাফিজুল ইসলাম নামে দুই ব্যাক্তি।
জিয়ারুল গাজী জানান, আমাদের কৃষি জমির পশে অন্যের জমি দখল করে প্রভাবশালী শফি নতুন ইটভাটা তৈরি করছেন। এখানে ভাট হলে কৃষি ও পরিবেশ মারাত্বক হুমকির মুখে পড়বে। সে কারনে ভাটা বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসকের নিকট অভিযোগ দিয়েছি। শফিকুল ইসলাম শফি মুঠফোনে পরিবেশ অধিদপ্তরে ছাড় পত্র আছে কিনা প্রশ্নে বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান ট্রেড লাইসেন্ম দিচ্ছে না, পরিবেশ অধিদপ্তর মৌখিক অনুমতি দিয়েছে। আমাদের জমিতে ইটভাটা করছি। চাঁদখালী ইউপি চেয়ারম্যান শাহাজাদ্ ামো. আবু ইলিয়াস বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা সহ এলাকাবাসী কৃষি জমিতে ইটভাটা নির্মাণ বন্ধে আবেদন করেছেন। যেখানে সরকার ২০২৫ সালের পর পরিবেশ বিধ্বংসী ইটভাটা বন্ধে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেখানে নতুন করে ইটভাট নির্মাণ?
ইউপি সচিব মো. আব্বাস আলী জানান, নতুন ইটভাটা তৈরি হচ্ছে শুনেছি কিন্তু তারা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কোন ট্রেড লাইসেন্স নেননি বা কোন অনুমতিও নেইনি। পাইকগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ইটভাটা তৈরির বিষয়টি আমি জেনেছি। আদালতের নোটিশ বিবাদী পক্ষকে দেয়া হয়েছে তাদের কাজ বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যদি বিবাদী পক্ষ আদালতের আদেশ অমান্য করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম জানান, পরিবেশ অধিদপ্তর খুলনা অফিস থেকে ভাটাটি ইতিমধ্যে পরিদর্শন করেছেন। তারা এ বিষয়টি দেখভাল করছেন। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।