প্রকাশ: বুধবার, ১৯ জুলাই, ২০২৩, ৯:৪২ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
লালমনিরহাটে ৫ শতাধিক গবাদি পশু (গরু) ল্যাম্পি স্কিন (এলএসডি) রোগ আক্রান্ত হয়েছে। তারমধ্যে দু’টি গরু মারাও গেছে। “লাম্পি স্কিন” রোগে মৃত্যুহার কম হলেও ঝুঁকি বাড়াচ্ছে দুগ্ধ ও চামড়া শিল্পে। এ রোগে আক্রান্ত হলে পশুর চামড়া অনেকটাই অকার্যকর হয়ে যায়।
লালমনিরহাট প্রাণি সম্পদ অফিস জানান, এটি একটি ভাইরাস জনিত রোগ। ভাইরাসটি গরু, ছাগল ও ভেড়ার পক্স ভাইরাসের সাথে এ ভাইরাসের খুবই সাদৃশ্য পাওয়া যায়। এ ভাইরাস গরু ছাড়া মহিষেও ছড়াতে পারে। এক গরু থেকে আরেক গরুতে ছড়িয়ে পড়ে। ছাগল ও ভেড়া সাধারণত লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয় না। এছাড়াও এ ভাইরাস মানুষকে আক্রমণ করে না।
রোগটি প্রধানত বর্ষার শেষে, শরতের শুরুতে বা বসন্তের শুরুতে মশা-মাছির বেশি বিস্তারের সময় ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। আক্রান্ত গরু প্রথমে জ্বরে আক্রান্ত হয় এবং খাবার রুচি কমে যায়।
জ্বরের সাথে সাথে নাক-মুখ দিয়ে লালা বের হয়, পা ফুলে যায়, দুই পায়ের মাঝে পানি জমে যায়। পশুর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চামড়া পিন্ড আকৃতি ধারণ করে, লোম উঠে যায় এবং ক্ষত সৃষ্টি হয়। আর এ ক্ষত শরীরের অন্যান্য জায়গায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষতস্থান থেকে রক্তপাত হতে পারে। শরীরের কোথাও কোথাও ফুলে যায়। যা ফেটে টুকরা মাংসের মতো বের হয়ে ক্ষত হয় এবং পুঁজ বের হয়। পাকস্থলি বা মুখের ভেতরে সৃষ্ট ক্ষতের কারণে গরুর পানি পানে অনীহা তৈরি হয় এবং খাদ্য গ্রহণ কমে যায় বলে রোগের লক্ষণ দেখা যায়। তাছাড়াও গাভী আক্রান্ত হলে দুধ উৎপাদন শূন্যের কোটায় নেমে আসে। দেশের দুধ উৎপাদনকারী খামারগুলোয় এ রোগের প্রভাব পড়ছে। দুধ উৎপাদন কমে যাওয়ায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন খামারিরা।
আঃ রহিম নামক একজন খামারি বলেন, আমার গরুর খামারে ৮টি বিদেশী গরু আছে। তারমধ্যে ২টি গরুর ‘লাম্পি স্কিন’ রোগ শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে। লাম্পি স্কিন রোগের লক্ষণ দেখে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিচ্ছি। ৭/৮দিনের কিছুটা কমলেও এখনো পুরোপুরি সুস্থ হয়নি গরু ২টি। এতে সরকারী পশু হাসপাতালের তেমন কোন সাড়া পাচ্ছি না। এতে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা শুধু বলছেন, খুব সাধারণ চিকিৎসায় গবাদি পশুর এই রোগ সারানো সম্ভব। সচেতনতা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এই রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারে।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এখন পর্যন্ত লালমনিরহাট জেলায় ল্যাম্পি স্কিন রোগে গরু আক্রান্ত সংখ্যা বাড়ছে। আক্রান্ত গরুকে সঠিক ভাবে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। বেশি আক্রান্ত যেনো না হয়, সে বিষয়ে বিভিন্ন উপদেশ দেওয়া হচ্ছে গরু পালনকারী খামারীকে।