প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই, ২০২৩, ৯:৩১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
মোংলায় দুই অসহায় এতিমের বাড়িঘর দখলের নেয়ার চেষ্টা ও প্রান নাশের হুমকি দিচ্ছে মতিউর রহমান রানা সহ কয়েক প্রতারক বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু বাড়িঘর ও জমি দখলের চেষ্টা করে ক্ষান্ত হয়নি। এতিম সাইফুর রহমান সাব্বির, তার ছোট বোন সুমনা ও ভগ্নীপতি সাহিন সিকদারের বিরুদ্ধে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগও দায়ের করেছে প্রতারক মতিউর রহমান রানা। একের পর এক হয়রানী মুলক অভিযোগ ও প্রতিনিয়ত জীবন নাশের হুমকির শিকার হয়ে এতিম সাব্বির ও সুমনা এখন দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। অবশেষে বিষয়টি সঠিক তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া এবং হয়রানীর হাত থেকে বাঁচতে বাগেরহাট আদালতে ভুক্তভোগী সাইফুর রহমান সাব্বির মামলা দায়ের করেছেন। কিন্ত আদালতের এ মামলা তোয়াক্কা না করে ক্ষমতা বলে বাড়ীর সামনে মতিউর দলবল নিয়ে বাড়ি দখলের মহড়া দিচ্ছে।
আদালতের অভিযোগ সুত্রে ও এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, মোংলা পোর্ট পৌর শহরের ১নং ওয়ার্ড টিএফারুক স্কুল সংলগ্ন কুমারখালী মোরর্শেদ সড়ক এলাকার মোতালেব জমাদ্দার নামের এক ব্যাক্তি সংসারে অভাব অনাটনের ফলে গত ২০০৩ সালে সাড়ে ১৫শতকের এক খন্ড জমি একই এলাকার সাবেক সেনা সদস্য মিজানুর রহমানের কাছ বিক্রয় করেণ। কিন্ত ততকালীন সময় ভুমি অফিসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে ওই জমি সরকারী খাস সম্পত্তি তাই রেজিষ্ট্রি করে দিতে পারেনী দাতা মোতালেব। তবে গ্রহিতা মিজানুর রহমানকে প্রয়োজনিও কাগজ পত্র দিয়ে জমি তার দখল সত্য বুঝিয়ে দেয় মোতালের জমাদ্দার। সেই সময় থেকেই প্রায় ২০ বছর যাবত পরিবারের সদস্যদের নিয়ে টিনের চালার ঘর বাড়ি তৈরী করে বসবাস করতে থাকেন সাবেক সেনা সদস্য মিজানুর রহমান। কয়েক মাস যেতে না যেতেই দাতা মোতালেব জমাদ্দার নিরুদ্ধেশ হয় বলে আদালতের মামলায় উল্লেখ করা হয়। এরই মধ্যে মিজানুর রহমানও গত ২০২০ সালের ১৩ আগষ্ট করোনা রোগে আক্রান্ত হয়ে ন্ত্রী নাছিমা বেগম, ছেলে সাইফুর রহমান সাব্বির ও মেয়ে সুমনাকে রেখে মৃত্যু বরণ করেণ মিজানুর রহমান। কয়েক মাস পর স্বামীর মৃত্যু সইতে না পেরে স্ত্রী নাছিমা বেগমও ব্রেন ষ্টোক করে সয্যাসয়ী হয়ে পড়েণ। পরে সেও চলতি বছর ১১ জুন বৃহস্পতিবার দুই এতিম সন্তান রেখে মৃত্যু বরণ করেণ। এ সুযোগে কিছু প্রতারক ব্যক্তির পরামর্শে মোতালেবের ছেলে মতিউর রহমান রানা ও তার লোকজন নিয়ে জোর পুর্বক কয়েক দফায় বাড়িঘর ভাংচুর করে জমি দখলের চেষ্টা করে এবং দুই এতিমের বিরুদ্ধে মোংলা থানা সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়ে হয়রানী করতে থাকে। খবর পেয়ে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে মতিউর রহমান রানা তার লোকজন নিয়ে চলে যায়। বর্তমানে সাইফুর রহমান সাব্বির ও তার বোন সুমনাকে নিয়ে দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর যাবত ওই বাড়িতেই বসবাস করছেন। তবে প্রতি ঘন্টায় তারা নিরাপত্তা হিনতায় সময় পার করছে বলে মনের কষ্ট নিয়ে অভিযোগ করেণ সাব্বির ও বোন সুমনা।
স্থানীয়রা জানান, সাবেক সেনা সদস্য মিজানুর রহমান মোতালেব জোমাদ্দারের কাছ থেকে সাড়ে ১৫ শতক জমি ক্রয় করেছেন সত্য কিন্ত সরকারী খাস জমি হওয়ায় তিনি রেজিষ্ট্রি দিতে পারেনী, তবে টাকা পয়সা নিয়ে দখল বুঝিয়ে দিয়েছে মোতালেব। এখন শুনছি মোতালেবের ৩ স্ত্রীর ও ছেলে মেয়ে সহ ১৬ জন ওয়ারেশ রয়েছে। তার মধ্য প্রতারক মতিউর রহমান রানাও এ এতিমদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে অস্বীকার করছে। পুনরায় সেও তার দলবল নিয়ে এ জমির ঘর বাড়ি দখলে নেয়ার জন্য থানা, পৌরসভা সহ বিভিন্ন দপ্তরে বার বার অভিযোগ দিয়ে এতিম ছেলে মেয়ে দুইটাকে হয়রানী করছে।
মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহম্মাদ সামসুদ্দিন বলেন, মতিউর রহমান রানা নামের এক ব্যাক্তি থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছে। যদি আদালতে মামলা চলমান থাকে সে ব্যাপারে আমাদের কিছুই করনীয় নেই। তবে কোন ব্যাক্তি বা কেউ জোর পুর্বক এতিমদের জমি বা ঘর বাড়ি দখল করার চেষ্টা করে তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন থানার এ কর্মকর্তা।