ঘরের মাঠে আফগানিস্তানকে গুঁড়িয়ে টি-২০তে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। বৃষ্টি বিঘ্নিত এ ম্যাচে আফগানদের ডার্ক লুইস মেথডে (বৃষ্টি আইন) ছয় উইকেটে হারিয়েছেন সাকিব-লিটনরা। এরমধ্য দিয়ে এই ফরম্যাটে আফগানদের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো সিরিজ জিতল চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা।
রোববার সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টি-২০তে বাংলাদেশের মুখোমুখি হয় আফগানিস্তান। বৃষ্টি বিঘ্নিত কার্টেল ওভারের ম্যাচে ১৭ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে ১১৬ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান। এতে ডার্ক লুইস মেথডে (বৃষ্টি আইন) বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়িয়েছে ১১৯ রান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে সহজেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভালো শুরু পায় বাংলাদেশ। এদিন টাইগারদের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন লিটন দাস ও আফিফ হোসেন। ম্যাচের শুরু থেকেই দ্রুত গতিতে রান তুলতে থাকেন এ দুই ব্যাটার।
ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে আসেন আফগানিস্তানের অভিষিক্ত বোলার ওয়াফাদার মোমান্দ। তবে লিটন-আফিফের ব্যাটে অভিষেক ওভারেই ১৯ রান দিয়ে যান তিনি।
এরপর ধীরে ধীরে দলীয় ইনিংস এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন লিটন-আফিফ জুটি। তবে ম্যাচের দশম ওভারে মুজিব ঘূর্ণিতে দুই বলের ব্যবধানে উইকেট বিলিয়ে দেন এ দুই ব্যাটার।
পরে বাইশ গজে আসেন নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই আউট হয়ে যান তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে মাত্র ৪ রান করেন এ বাঁহাতি ব্যাটার। এরপর ক্রিজে এসে দ্রুত গতিতে রান তুলতে থাকেন তাওহীদ হৃদয়। তবে ওমরজাইয়ের বলে মোহাম্মদ নবীর তালুবন্দী হয়ে ১৯ রানেই সাজঘরে ফেরেন তিনি।
ম্যাচের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন টাইগার দলপতি সাকিব আল হাসান (১৮) ও শামীম হোসেন পাটোয়ারী (৭)।
আফগানদের হয়ে দুটি করে উইকেট শিকার করেন মুজিব উর রহমান ও ওমরজাই।
এর আগে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। সিরিজ ড্র’য়ের লক্ষ্যে এক পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে আফগানিস্তান। এ ম্যাচে ফরিদ আহমেদের পরিবর্তে সুযোগ পেয়েছিলেন ওয়াফাদার মোমান্দ।
আফগানিস্তানের হয়ে যথারীতি ইনিংস উদ্বোধনে নামেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও হজরতউল্লাহ জাজাই। মাঠে নেমেই তাসকিনের চতুর্থ বল মাঠ ছাড়া করেন গুরবাজ। তবে পরের বলেই তাসকিনের হাতেই ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। আউট হওয়ার আগে ৮ রান করেন তিনি।
এরপর উইকেটে আসেন ইব্রাহিম জাদরান। ম্যাচের তৃতীয় ওভারেই মুশফিকের তালুবন্দী করে হজরতউল্লাহ জাজাইকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান তাসকিন।
দলের হাল ধরতে ক্রিজে আসেন মোহাম্মদ নবী। পরে ইব্রাহিমকে নিয়ে দলীয় ইনিংস এগিয়ে নিতে থাকেন তিনি। অবশ্য বৃষ্টি বাঁধায় প্রায় সোয়া ঘন্টা খেলা বন্ধ ছিল। বৃষ্টি থামলে আবারো মাঠে গড়ায় খেলা।
বৃষ্টির পর ব্যক্তিগত ইনিংস লম্বা করতে পারেননি নবী। মুস্তাফিজের বলে ১৬ রানে লিটনের তালুবন্দী হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। পরের ওভারেই সাকিবের বলে বোল্ড হন ইব্রাহিমও (১৬)।
পরপর উইকেট হারিয়ে খানিকটা চাপে পড়ে আফগানরা। তবে আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও করিম জানাতের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় সফরকারীরা। এই জুটি থেকে ৪২ রান আসে। তবে টাইগার শিবিরে ভয় ধরানো এ জুটি ভাঙেন মুস্তাফিজ। নবীকে (১৬) লিটনের তালুবন্দী করে সাজঘরে ফেরান ফিজ।
এরপর জুটি বেঁধে দ্রুত রান তুলতে থাকেন ওমরজাই-করিম। অবশ্য ম্যাচের ১৬তম ওভারে ফুল লেংথের বলটি এক্সট্রা কভারে খেলতে চেয়েছিলেন ওমরজাই। তবে বলটি ব্যাটের কানায় লেগে ডিপ থার্ড ম্যান শামীম হোসেনের কাছে চলে যায়। এতে ২৫ রানে থামেন এ ডানহাতি ব্যাটার।
ম্যাচের শেষ মুহূর্তে তাসকিনের থেকে বাউন্ডারি ও ছক্কা আদায় করে নিয়ে দলীয় রান বাড়াতে থাকেন করিম জানাত। কিন্তু তাসকিনই তাকে আউট করেন। সাজঘরে ফেরার আগে ২০ রান করেন তিনি। এতে আফগানিস্তানের ইনিংস থামে ১১৬ রানে।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট শিকার করেন তাসকিন। এছাড়াও দুই উইকেট তুলে নেন মুস্তাফিজ।