বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: কর্মোপযোগী শিক্ষার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি সম্ভব   নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়: রাষ্ট্রপতি   নির্বাচনে ২১ সদস্যের মনিটরিং সেল গঠন ইসির   দেশজুড়ে যে তিনদিন মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা!   মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানি ৯ জানুয়ারি   প্রাথমিকের ছুটি বাড়ল ১৬ দিন (তালিকা)   নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিএনপির প্রচারণা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে আবাদি জমি, সরিয়ে নেয়া হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: রোববার, ১৬ জুলাই, ২০২৩, ৮:২৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

ভারতের গঙ্গা, পদ্মা হয়ে ঢুকেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। সারা বছর আগ্রাসী এ পদ্মায় ভাঙন আতঙ্ক থাকলেও সম্প্রতি ভাঙন তীব্রতর হয়েছে। এতে ঝুঁকিতে রয়েছে হাজার হাজার হেক্টর আবাদি জমি, সরকারি স্থাপনাসহ পদ্মা পাড়ের বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি। এছাড়াও ভাঙনের কবল থেকে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে একটি কলেজ নিরাপদ দূরত্বে সরাতে পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে। 

স্থানীয়রা বলছেন উজানের ঢল আর আষাঢ়ের বর্ষণে বাড়ছে পদ্মার পানি। ফলে দিনদিন আগ্রাসী হয়ে উঠছে পদ্মা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘ এক দশকে সরকারি হিসেবে ভিটামাটি হারিয়েছে প্রায় হাজার খানেক পদ্মা পাড়ের শ্রমজীবী মানুষ। সামান্য সরকারি সহায়তা আর ঘুরে দাঁড়ানোর প্রবল ইচ্ছাতে পদ্মা পাড়ের বাসিন্দারা নতুন করে স্বপ্ন দেখলেও, স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় প্রতি বছরে নদী ভাঙনের কবলে পানিতে মিশে যাচ্ছে বহুল কাক্সিক্ষত স্বপ্নগুলো।

স¤প্রতি তীব্র হয়েছে পদ্মা নদীর ভাঙন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের চরপাঁকা ঈদগাহ থেকে সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের ছাব্বিশ রশিয়া পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে প্রায় ৪০ হাজার পদ্মাপাড়ের মানুষ নদী ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছেন। ইতিমধ্যে চরপাঁকার তেররশিয়া গ্রামের শতাধিক বাসিন্দা নদী ভাঙনের কবলে ভিটামাটি হারিয়ে বিশ রশিয়ার নামোচর এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন।

স্থানীয়রা বলছেনÑ নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে সদর উপজেলার নারায়ণপুর আদর্শ মহাবিদ্যালয় ও নারায়ণপুর দারুল হুদা আলিম মাদ্রাসা সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে মহাবিদ্যালয়টি সরিয়ে নেয়ার জন্য কাজ চলছে পুরোদমে। কয়েকদিনের মধ্যেই শুরু হবে মাদ্রাসা ভবন ভাঙার কাজ। এছাড়াও সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদ, কমিউনিটি ক্লিনিক, দোতলার আশ্রয়ণ কেন্দ্র, দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নারায়ণপুর এমএ উচ্চ বিদ্যালয়, নারায়ণপুরের বাতাস মোড় বাজার, কয়েক হাজার কৃষকের আবাদি জমিসহ প্রায় ৫ হাজার পদ্মা পাড়ের বাসিন্দার ঘরবাড়ি।

ইউসুফ আলী নামে পদ্মা পাড়ের এক বাসিন্দা চাঁপাই চিত্রকে জানান, পদ্মা নদীতে পানি বাড়লে এবং কমলে নদী ভাঙনের সৃষ্টি হয়। বর্তমানে উজানের ঢল আর বর্ষার কারণে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙন হচ্ছে। প্রতিবছরই এমন প্রতিক‚লতার সৃষ্টি হয়, কিন্তু স্থায়ী পদক্ষেপ নেয় না সরকার।

তিনি বলেন, পদ্মা পাড়ের হাজার হাজার মানুষের বসবাস। এখানকার বাসিন্দাদের দাবি পদ্মা নদীতে ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের। সরকারি মহলের কর্মকর্তারা পরির্দশনে আসেন কিন্তু যথাযথ উদ্যোগ নেন না। অস্থায়ী জিও ব্যাগ জিও টিউব ব্যবহার করে নদী ভাঙন রোধের চেষ্টা করেন। এতে কোন কাজই হয় না।
নারায়ণপুর আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ বলেন, নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে  কলেজটি ধুলাউড়ি এলাকা থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু হয়েছে। দরপত্র আহŸান করে কলেজটির ভবনসহ কিছু সরঞ্জামদি বিক্রি করা হয়েছে।

বর্তমান স্থান থেকে নারায়ণপুর আদর্শ মহাবিদ্যালয়টি প্রায় ৫০০ মিটার দূরের এলাকা বাগপাড়ায় কলেজটি অস্থায়ীভাবে স্থাপন করে কার্যক্রম শুরু করা হবে বলেও জানান অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ। 
নারায়ণপুর দারুল হুদা আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম জানান, নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে মাদ্রাসাটি সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় গণ্যমান্যদের নিয়ে কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই মাদ্রাসা সরিয়ে নেয়ার কার্যক্রম শুরু হবে।

এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি ধুলাউড়ি ঘাট এলাকা থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকা দূরের ঈদগাহপাড়ায় স্থানান্তরের খসড়া সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান শফিকুল ইসলাম।

নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যসেবা কর্মকর্তা স্বপন আলী বলেন, এ বছর শিবগঞ্জের দক্ষিণ পাঁকা থেকে ধুলাউড়ি ঘাটের কাছাকাছি পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদী ভাঙন হয়েছে। এতে কৃষকের আবাদি জমি, মানুষের ভিটামাটি সবই নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। পদ্মা পাড়ের বাসিন্দারা এখন নদী ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছেন।

শিবগঞ্জের পাঁকা থেকে সদরের নারায়ণপুর ইউনিয়নের ভাঙন প্রতিরোধে প্রায় ৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয় বলে জানান চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. ময়েজ উদ্দিন। তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা অর্থ মন্ত্রণালয়ে এ প্রকল্পের কাগজপত্র দাখিল করেছেন। প্রস্তাবিত এ প্রকল্পটি এখনও পাস হয়নি।

নদী ভাঙন রোধে প্রস্তাবিত প্রকল্পের এ ৯ কোটি টাকা পদ্মা নদীর তীরে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ব্যবহারে খরচ করা হবে বলেও জানান পাউবোর এই কর্মকর্তা।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]