শনিবার (১৫ জুলাই) বিকেলে এফবিসিসিআইয়ের উদ্যোগে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ব্যবসায়ী সম্মেলনে এ কথা বলেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান।
বসুন্ধরা চেয়ারম্যান বলেন, ব্যবসায়ীদের ম্যান্ডেট তো আমার মনে হয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পেয়ে গেছেন। এখানে যে কজন ব্যবসায়ী আছেন―তারা এ দেশের মেরুদণ্ড বলেন, চাবিকাঠি বলেন, তারা এ দেশ পরিচালনা করেন। এখন তো আপনার ম্যান্ডেট সম্পর্কে আমার মনে হয় না কারো কোনো সংশয় আছে।
প্রধানমন্ত্রী দেশের জন্য কী কী করেছেন তা সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরে বসুন্ধরা চেয়ারম্যান বলেন, ওনার সম্বন্ধে যদি বলতে হয় তাহলে সাত দিনেও শেষ হবে না। যদিও ওনার সংস্পর্শে খুব কম যাই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে যত দূর জানি, যদি সাত দিনও বলি তবুও বলার শেষ হবে না। উনি (প্রধানমন্ত্রী) প্রথমেই কাজ করেছেন আমাদের গ্রামীণ অর্থনীতি নিয়ে। শহর সম্বন্ধে প্রথম দিকে তিনি কম চিন্তা করেছেন। গ্রামের অর্থনীতিকে উন্নত করার জন্য পাঁচ কোটি মানুষকে ভাতা দিয়েছেন। বিধবা ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, বিকলাঙ্গ ভাতা―এ ধরনের বিভিন্ন ভাতা দিয়ে বছরে ৫৭ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছেন। এসব কিছুর সুফল ভোগ করছেন আমাদের দেশের গ্রামীণ গরিব জনসাধারণ। সবাই বলেছে, শেখ হাসিনা সরকার বারবার দরকার। আমি বলব, আমরা যেমন বঙ্গবন্ধুর কোনো বিকল্প পাইনি, আজকে শেখ হাসিনার বিকল্পও শুধু শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমরা ব্যবসায়ীরা একটা অনুরোধ জানাব সবাইকে, ব্যবসায়ীরা চায় সব সময় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ। শান্তিপূর্ণভাবে আমরা থাকি, শান্তিপূর্ণভাবে আমরা ব্যবসা করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাই। কিন্তু আজকে আমাদের দুর্ভাগ্য যে প্রতিটা দিন…, একসময় আমরা দেখেছি আগুন সন্ত্রাস। আবার শুরু হয়েছে হরতাল, অবরোধ। আমরা মনে হয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার কাছে আমার একটা অনুরোধ―মিছিল করুক, মিটিং করুক; জনজীবনকে বিচ্ছিন্ন করে, জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে কোনো রাজনীতি হতে পারে না। আমাদের সব রাজনীতির মূল লক্ষ্য অর্থনীতি। এ দেশের কোটি মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন। গণতন্ত্র মানে এই না যে যা খুশি তাই করব। মানুষের জানমাল রক্ষা করতে হবে। মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, একসময় বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ বলত, এখন বঙ্গবন্ধু প্লাস শেখ হাসিনার বাংলাদেশ বলে। সি ইজ এ ব্র্যান্ড ওব দ্য ওয়ার্ল্ড। সারা দেশ আজকে বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে কী এমন জাদুর কাঠি আছে সেটা দিয়ে সারা বিশ্বকে তিনি আকর্ষণ করেন। সারা বিশ্বের মানুষের কাছে আজকে কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী।
বসুন্ধরা চেয়ারম্যান বলেন, আজ আরেকটা কথা আমার বলতে হয়। এখানে যারা আছেন তারা অনেকেই ওয়ান-ইলেভেনে জেলে গেছেন, অত্যাচারিত হয়েছেন। আমার সৌভাগ্য আমি বাংলাদেশে ছিলাম না। তবু আমার কর্মচারীদের জেলে নিয়ে গেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার মানে আবার সেই ১/১১-এর সরকার। এই স্বপ্ন যদি কেউ দেখে, আমার মনে হয় আমাদের এই ব্যবসায়ীরা যথেষ্ট, এটাকে কিভাবে প্রতিহত করতে হবে। সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্বপ্ন দেখে আর কারো কোনো লাভ নাই।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আজকে এসব ষড়যন্ত্র রুখতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন, সেই অনুযায়ী যদি আমরা এগিয়ে যাই তাহলে এ দেশে গরিব মানুষ বলে কোনো শব্দ থাকবে না। আমাদের ১৭ কোটি মানুষ একটা শক্তি। আজকে চীনের শক্তি তার মানুষ। আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি মানুষ। আজকে ইউরোপ-আমেরিকা সবাই এখানে কেন, সবাই এখানে কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বলেছে। ওদের আন্ডার সেক্রেটারি বলে গেছেন যে আমরা সম্পর্ক জোরদার করার জন্য বাংলাদেশে এসেছি। তারা এমন কিছু আমাদের ওপর চাপিয়ে দেয়নি যে তোমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার করো, তোমরা এই করো, সেই করো। আমাদের নেত্রীও চান, আমরা সবাই চাই একটা সুন্দর নির্বাচন হোক। এই ব্যাপারে তো কারো কোনো অপস নেই।
এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, এখানে একশভাগ মানুষ বর্তমান সরকার, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে ম্যান্ডেট দিয়েছেন। আমরা ব্যবসায়ীরা আছি। আজীবন আপনার সঙ্গে থাকব, আমৃত্যু আপনার সঙ্গে থাকব। কারণ, আপনার ব্যতিক্রম তো আপনি। আজ সারা দুনিয়ার চমক শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা সারা দুনিয়াকে আকৃষ্ট করতে পারেন। ইউরোপ-আমেরিাকা-ভারত এবং কূটনীতির দিকে তিনি আমাদের দেশকে একটা মিডল অবস্থানে রাখছে। আমাদের সঙ্গে সবার ভালো সম্পর্ক। কারো সঙ্গে খারাপ সম্পর্ক নেই। তার যে একটা অভিজ্ঞতা, ২০-২৫ বছর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যে অভিজ্ঞতা, এটা আরেক জনের ২০ বছর লাগবে। সুতরাং আমাদের সার্বক্ষণিক ওনার সেবা নিতে হবে।
শেষে আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, আমি আশা করি, বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ বুঝবে, আগামী দিনে তার ফল পাবে। আজ পদ্মা সেতু, পদ্মা সেতুর ওই সময় এয়ারপোর্টটা হওয়ার কথা কিন্তু বিভিন্ন মিডিয়ার কারণে হলো না। আজকে পদ্মা সেতুর সুবিধাভোগী কারা, আজকে মোংলা থেকে তরকারি (সবজি) নিয়ে বিক্রি করে যাচ্ছে। আগে যে তরকারি বিক্রি করতে পারত না আজকে সেই তরকারি অনেক বেশি দামে বিক্রি করতে পারছে। এই সেতু নিয়ে কত রকমের ষড়যন্ত্র। তার পরও আমাদের নেত্রী সাহসের সঙ্গে মোকাবেলা করেছেন। আল্লাহ ওনাকে দীর্ঘজীবী করুক। দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য ওনার বিকল্প শুধু উনি।