দক্ষিণ কোরিয়ায় টানা কয়েকদিনের তুমুল বর্ষণ আর বন্যায় নিহতের সংখ্যা দাড়িতেছে ৩১ জনে।
রয়টার্স জানিয়েছে, ভারি বর্ষণে দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় ভূমিধস এবং বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
দুর্গত এলাকাগুলো থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে ৭ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
বিবিসি জানিয়েছে, উত্তর চুংচেওং প্রদেশের বন্যা কবলিত চেওংজু টানেলে কত মানুষ আটকা পড়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে অন্তত ১৯টি গাড়ি সেখানে আটকে আছে বলে খবর আসছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপ জানিয়েছে, চেওংজু শহরের ওই টানেলটি হঠাৎ ঢলের কবলে পড়ে। এত দ্রুত সেটি জলমগ্ন হয়ে পড়ে যে, গাড়ি চালকরা সরে যাওয়ার সময় পাননি।
বেশিরভাগ প্রাণহানি ঘটেছে উত্তর গিয়ংসাংয়ের পার্বত্য অঞ্চলে, যেখানে ভূমিধসে বিলীন হয়ে গেছে বহু ঘরবাড়ি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, শনিবার দেশটিতে প্রায় ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এমনিতে দক্ষিণ কোরিয়ায় সারা বছরে ১০০০ থেকে ১৮০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়।
আকাশ থেকে তোলা বন্যাকবলিত এলাকার ছবিতে দেখা গেছে, বাদামী কাদা মেশা পানির উচ্চতা এতটা বেশি যে, শুধুমাত্র ছাদের উপরের অংশই পানির বাইরে রয়েছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ হাজার হাজার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সু সেনাবাহিনীকে উদ্ধার অভিযানে অংশ নিতে বলেছেন।
বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপ জানিয়েছে, শনিবার ভোরে, গোয়েসান বাঁধ উপচে পড়তে শুরু করলে ওই এলাকার প্রায় ৬,৪০০ বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
বাঁধের কাছাকাছি নিচু এলাকার কিছু গ্রাম এবং অনেক সড়ক ডুবে গেছে। সেসব গ্রামে বাসিন্দাদের অনেকে বাড়িতে আটকা পড়েছেন।
শুক্রবার রাতে উত্তরের চুংচেং এলাকায় ভূমিধসের কারণে একটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। তাতে একজন প্রকৌশলী আহত হন। ট্রেনে সে সময় কোনো যাত্রী না থাকায় বড় ধরনের প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার রেল পরিচালানাকারী কোম্পানি কোরাইল জানিয়েছে, বন্যার কারণে বহু ট্রেনের যাত্রা স্থগিত করা হয়েছে।
আগামী বুধবার পর্যন্ত আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়ে দেশটির আবহাওয়া অফিস বলেছে, আবহাওয়ার পরিস্থিতি গুরুতর বিপদ ডেকে আনতে পারে।