প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন মামলাজট কমাতে বিচারক-আইনজীবীদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে। সাধারণ মানুষ যাতে সহজেই বিচার পায় সে কথা মনে রেখেই আমরা আমাদের বিচারকগণ ও বিজ্ঞ আইনজীবীদেরকে বারবার অনুরোধ করেছি যে আপনারা একে অপরের পরিপূরক। আপনারা বিচারকদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করুন। যাতে করে মামলার জট ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় ছাড়ানো যায়।
শনিবার (১৫ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে ময়মনসিংহ জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে বিচার প্রার্থীদের বিশ্রামের জন্য ‘ন্যায়কুঞ্জ’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, সবার দায়িত্ব হলো এই বিচার বিভাগকে রাষ্ট্রের অগ্রগতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। সেই প্রচেষ্টাই আমরা করে যাচ্ছি। যাতে করে যে মামলার জটটা শুরু হয়েছে সেটিকে ছাড়িয়ে নেওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, সারাদেশের মধ্যে ২০২২ সালে ময়মনসিংহ জেলায় সর্বোচ্চ সংখ্যক মোকদ্দমা নিষ্পত্তি হয়েছে এবং এই বছরেও মামলা নিষ্পত্তির অগ্রগতির পরিমাণ গত বছরের চেয়ে বেশি। আমরা যদি এভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি তাহলে ইনশাআল্লাহ এই মামলার জট ছাড়াতে সক্ষম হবো।
বিচারকদের উদ্দেশে হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, আপনারা প্রচ- পরিশ্রম করেন। এমন কোনো জাতি নেই এই পরিশ্রম ছাড়া এগিয়েছে। আমি আইনজীবীদের বলব, আপনারা আদালতকে সহায়তা করেন। আদালত, বে , বার একটা ছাড়া আর একটা চলতে পারে না। একটার সহায়তা ছাড়া আর একটা আগাতে পারে না। আপনাদেরকে (আইনজীবীদের) মনে রাখতে হবে বিচারপ্রার্থীরা আদালতের বারান্দায় বিচারের প্রত্যাশায় আসে। তারা এই দেশের মালিক। তাদেরকে বিচারিক সেবা দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের। এটা আমাদের যেভাবেই হোক বাস্তবায়ন করতে হবে। বছরের পর বছর যদি কেউ আদালতের বারান্দায় ঘুরতে থাকে ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায়, তারা যদি ন্যায়বিচার না পায় এবং তারা বলেও ফেলতে পারেন যে এদেশে বিচার-আচার নেুই। তা আমরা হতে দিতে পারি না। এজন্য দেশ স্বাধীন হয়নি।
প্রধান বিচারপতি বলেন, দেশে ১৯৭১ সালে ৩০ লাখ শহীদ রক্ত দিয়েছে। এই রক্তের ঋণ পরিশোধ করবো পরিশ্রমের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে। প্রতিটি ক্ষেত্রে যেন দেশ এগিয়ে যায় এবং আগামী ২০-৩০ বছরে আমাদের অবস্থান হবে সিঙ্গাপুর-মালয়েশিয়ার মতো।
এর আগে ময়মনসিংহ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধন করেন প্রধান বিচারপতি। এছাড়াও সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের পাশে জজেস গার্ডেনের উদ্বোধন করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. ওবায়দুল হাসান, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. জাকির হোসেন এবং জেলা ও দায়রা জজ মমতাজ পারভীন।
পরে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং জেলা আইনজীবী সমিতির সঙ্গে নগরীর টাউন হলের তারেক স্মৃতি অডিটরিয়ামে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রধান বিন ফয়েজ সিদ্দিকী।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান, হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান, হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার (বিচার) এসকে এম তোফায়েল হাসান প্রমুখ।