গত জুন মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫৫৯টি। এরমধ্যে নিহত হয়েছেন ৫১৬ জন। আর ৮১২ জন আহত হয়েছেন। নিহতের মধ্যে নারী ৭৮ ও শিশু ১১৪ জন।
বেসরকারি সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বুধবার (১২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মে মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় গড়ে প্রতিদিন নিহত হয়েছিলেন ১৩ দশমিক ১৬ জন। জুনে গড়ে প্রতিদিন নিহত হয়েছেন ১৭ দশমিক ২ জন। এ হিসাবে জুনে প্রাণহানি বেড়েছে ৩০ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
জুনের শেষ সপ্তাহে ঈদুল আজহা উদ্যাপন উপলক্ষে ব্যাপকসংখ্যক মানুষ ঘরমুখী যাত্রা করেছিলেন। যেহেতু দেশে সড়ক পরিবহন ব্যবস্থাপনা উন্নত নয়, সে কারণে দুর্ঘটনা বেড়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৬৯ জন, যা মোট নিহতের ৩২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ৩৭ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ৯৯ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ১৯ দশমিক ১৮ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৭৬ জন, অর্থাৎ ১৪ দশমিক ৭২ শতাংশ।
এ সময়ে ১২টি নৌ দুর্ঘটনায় ৯ জন নিহত ও ৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এই সঙ্গে ৩৮টি কোরবানির গরুর মৃত্যু হয়েছে। ২১টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৮ জন নিহত ও ১১ জন আহত হয়েছেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেলের চালক ও আরোহী ১৬৯ জন, বাসযাত্রী ৭, ট্রাক-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি আরোহী ৬৫, প্রাইভেট কার-মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুলেন্স-র্যাবের জিপ আরোহী ২৪, থ্রি–হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান) ১১৪, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নছিমন-করিমন-ভটভটি-টমটম-মাহিন্দ্রা) ২০ ও বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-রিকশা ভ্যান আরোহী ১৮ জন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৮২টি জাতীয় মহাসড়কে, ২৪৭টি আঞ্চলিক সড়কে, ৬৮টি গ্রামীণ সড়কে, ৫৯টি শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৩টি সংঘটিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনাকবলিত বাহনের সংখ্যা ৯০৭টি। সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ভোর–সকালে ঘটেছে সবচেয়ে বেশি—প্রায় ২৭ শতাংশ। দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারি পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা হয়েছে সবচেয়ে বেশি—৩০ দশমিক ৫ শতাংশ। ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ১৬৮টি দুর্ঘটনায় ১০৯ জন নিহত। বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে কম ২৪টি দুর্ঘটনায় ১৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
একক জেলা হিসেবে ঢাকা জেলায় সবচেয়ে বেশি ২৬টি দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং টাঙ্গাইল জেলায় ২৪ জন নিহত হয়েছে। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে নড়াইল, পিরোজপুর ও রাঙামাটি জেলায়। এই ৩ জেলায় সামান্য মাত্রার ১১টি দুর্ঘটনা ঘটলেও কোনো প্রাণহানি ঘটেনি।