রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: কর্মোপযোগী শিক্ষার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি সম্ভব   নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়: রাষ্ট্রপতি   নির্বাচনে ২১ সদস্যের মনিটরিং সেল গঠন ইসির   দেশজুড়ে যে তিনদিন মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা!   মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানি ৯ জানুয়ারি   প্রাথমিকের ছুটি বাড়ল ১৬ দিন (তালিকা)   নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিএনপির প্রচারণা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
বর্ষার আগমনে নৌকা তৈরি ও মেরামত কাজে ব্যস্ত দৌলতপুরের মাঝি-কারিগররা
দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১১ জুলাই, ২০২৩, ৯:২৩ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

পদ্মা নদীতে বাড়ছে পানি। আগাম বর্ষাকে মোকাবেলা ও প্রস্তুতি নিতে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ছোট-বড় নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। এছাড়াও কারিগরদের পাশাপাশি পুরনো নৌকাগুলোও মেরামতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চরা লের নৌকার মাঝিরা। 

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের প্রায় ৫টি ইউনিয়ন পদ্মা নদী দ্বারা বিধৌত। বর্ষার সময় নদীর অববাহিকায় বসবাসরত এলাকাবাসীর চলাচলের জন্য একমাত্র যানবাহন হয়ে ওঠে নৌকা। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বন্যার আশঙ্কায় চরবাসী ও নৌকা ব্যবসার সাথে জড়িতরা নতুন নৌকা তৈরি এবং পুরাতন নৌকা মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বেড়েছে কারিগরদের কদর।সেই সাথে কাঠ চেরাইয়ে ব্যাস্ততা বেড়েছে ‘স’মিল শ্রমিকদের।

 বিশাল জলরাশি ভরা পদ্মায় জেগেছে অসংখ্য চর। চরের জমিতে এখন বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত চরা লের মানুষগুলো। কারণ প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হয় তাদের। আহার সংগ্রহ করতে হয়।প্রয়োজনে  প্রায়ই পাড়ি দিতে হয় পদ্মার বিশাল জলরাশি। যেখানে পারাপারের মাধ্যম নৌকা। মাছ ধরার কাজেও ব্যবহৃত হয় এই বাহনটি। সবমিলে পদ্মাপাড়ের মানুষের জীবিকা নির্বাহের অন্যতম মাধ্যম এই নৌকা। দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের  আবেদ মাঝির ঘাটে নৌকা মেরামতে ব্যস্ত মাঝি-মাল্লারা। সঙ্গে রয়েছেন একাধিক দক্ষ কারিগর। কেউ তৈরি করছেন লগি-বৈঠা। কেউ আবার পুরানো নৌকার বিভিন্ন অংশ সংস্কারে মত্ত। নৌকার ছাউনি বা ছই তৈরিতে ব্যস্ত কেউ কেউ। সারাক্ষণ চলছে ঠক ঠক শব্দ। আবার গুণ গুণ করে গানও গাইছেন তাদের কেউ কেউ। 

পদ্মা বেষ্টিত কুষ্টিয়ার দৌলতপুর ও ভেড়ামারা উপজেলা। এরমধ্যে দৌলতপুরের ৫টি ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বহমান পদ্মা। তবে হিংস্র পদ্মা এখন চরম শান্ত। তার বিশাল জলধারা এখন অনেকটাই ফাঁকা। সেখানে জায়গা করে নিয়েছে অসংখ্য বালুচর।

আর পদ্মার এই বিশাল জলধার পাড়ি দেওয়ার মাধ্যম নৌকা। পাল তুলে সঙ্গে দড়ি বেঁধে মাঝি-মাল্লারা নৌকা বেয়ে নিয়ে যেতে নদীর কূল ঘেঁষে। এটা অবশ্য অনেক আগের কথা। বর্তমানের চিত্রটা অবশ্য ভিন্ন। এখন সেই জায়গায় স্থান করে নিয়েছে ইঞ্জিনচালিত নৌকা। তবে আগের নৌকাও এখনো চলে পদ্মায়। কম আর বেশি তবে সারাবছরই পদ্মায় চলে নৌকা।

সেই নৌকা মেরামতের এখনই উপযুক্ত সময়। নতুন করেও অনেকে তৈরি করছেন পদ্মায় চলাচলের এই বাহনটি। কেননা এখন প্রকৃতি পুরোপুরি শান্ত। আর সেই সুযোগে পদ্মায় চলাচলের বাহন মেরামত বা নতুন করে তৈরীর কাজে ব্যস্ত মাঝি-মাল্লা ও নৌকা বানানোর কারিগররা।
রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলা থেকে আসা আব্দুল হাসেম তাদেরই একজন। বহুকাল ধরে নৌকা মেরামত ও নতুন নৌকা তৈরির কাজ করে থাকেন। আলাপচারিতায় তিনি জানান, আগে তো ইঞ্জিনচালিত নৌকা ছিলো না। লগি-বৈঠা দিয়ে নৌকা চালাতো মাঝি-মাল্লারা। কালের আবর্তে এসব নৌকার জায়গার স্থান করে নিয়েছে ইঞ্জিনচালিতা নৌকা। তবে লগি-বৈঠার নৌকার কদর একেবারে ফুরিয়ে যায়নি যোগ করেন আব্দুল হাসেম। 

নৌকা তৈরির আরেক কারিগর ভবেশ মন্ডল জানান, প্রতি বছরের এ সময়ে পুরানো নৌকা মেরামত বা সংস্কার আর নতুন নৌকা তৈরির হিড়িক পড়ে যায় পদ্মা বেষ্টিত এলাকায়। এবারও ব্যতিক্রম ঘটেনি। নিয়মিত পুরানো নৌকা মেরামত বা সংস্কারের কাজ করছেন তারা। আবার অনেকেই নতুন নৌকা বানিয়ে নিচ্ছেন।

তিনি আরও জানান, ভাল মানের একটি নতুন নৌকা তৈরিতে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার মতো ব্যয় হয়। তবে বর্তমানে নতুন নৌকা তৈরির চেয়ে পুরানো নৌকা মেরামতের কাজই বেশি। আর মেরামতের এই কাজটি করতে তারা প্রতিদিন ৭শ’ টাকা মজুরি পেয়ে থাকেন।

নৌকার মালিক হবিবুর রহমান কবিরাজ জানান, যুগের অনেক পরিবর্তন হলেও পদ্মা পারাপারে এখনও নৌকার কোনো বিকল্প নেই। এছাড়া মাছ ধরার কাজেও নৌকা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অবশ্য প্রযুক্তির ছোঁয়ায় ইঞ্জিনচালিত নৌকার ব্যবহার অনেক বেড়েছে। তবে লগি-বৈঠাওয়ালা নৌকার ব্যবহার একেবারে ফুরিয়ে যায়নি। অনেক মানুষ এখনও এ ধরনের নৌকা চলাচল করতে অনেকটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে থাকেন।

হাবলু কবিরাজ নামে আরেক নৌকার মালিক জানান, দীর্ঘদিন ধরে পদ্মা তাদের গ্রাস করেই চলছে। কিন্তু মাথা গোঁজার অন্য কোনো ঠাঁই না থাকায় ইচ্ছে থাকলেও পদ্মা ছেড়ে অন্যত্র যাওয়ার সুযোগ নেই। ফলে নৌকার মাধ্যমেই দীর্ঘকাল ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। তাই উপযুক্ত সময়ে তার পুরানো নৌকাটি ঠিকঠাক করে নিচ্ছেন নৌকার এই মালিক।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]