ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম ঢাকার মার্কিন দূতাবাসে একটি চিঠি দিয়েছেন।
এতে তিনি লিখেছেন, আমি আশরাফুল হোসেন আলম আগামী ১৭ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।
এর আগে ১৬ জুন আমি আপনাদের জানিয়েছিলাম, আমি ভয় পাচ্ছি যে নির্বাচন কমিশন আমার নমিনেশন প্রত্যাখ্যান করবে। তারা শেষ পর্যন্ত তাই করেছিল। তবে পরে আমি আপিল করে নমিনেশন ফেরত পেয়েছিলাম। আমি বিশ্বাস করি, আপনাদের কাছে আমার পাঠানো মেইল তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
সম্প্রতি সাততলা বস্তি এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার সরাসরি নির্দেশে আমি ও আমার অনুসারীদের ওপর হামলা হয়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমি নির্বাচন কমিশনে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু সেখান থেকে কোনো ফলাফল ছাড়াই আমাকে ফিরতে হয়।
হিরো আলম ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের উদ্দেশ্যে বলেন, অন্য কোনো উপায় না থাকায় আমি আপনাদের জানানো ও বিবেচনার স্বার্থে এই চিঠি লিখেছি।
এর আগে গত বুধবার (৫ জুলাই) মহাখালীর সাততলা বস্তিতে প্রচার চালাতে গেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম ও তার কর্মী সমর্থকদের প্রথমে বাধা প্রদান ও পরে মারধর করা হয়। এ ব্যাপারে তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে বলে জানায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
পরে বিষয়টি নিয়ে কথা হলে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন সাংবাদিকদের কাছে হিরো আলমের অভিযোগ সম্পর্কে জানান। তিনি বলেন, আমরা লিখিত পেয়েছি। কর্তৃপক্ষকে দেবো। তারা যা নির্দেশনা দেবেন তাই হবে। মৌখিকভাবে বলেছেন তিনি যে প্রচার চালাতে দেননি। আঘাতও করেছে। আচরণ বিধি ভঙ্গ হয়েছে কিনা আমরা সেটা দেখবো। তদন্ত করবো, তারপর ব্যবস্থা নেবো। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা প্রয়োজন সব ব্যবস্থা আমরা নেব।
তার আগে হিরো আলম অভিযোগ করেন, সাততলা বস্তিতে প্রচারে গিয়েছিলাম। সেখানে আওয়ামী লীগের কিছু নেতা-কর্মী বস্তির গেইটে দাঁড়িয়ে বলল তোমরা ঢুকতে পারবে না। এখানে তোমরা ঢুকতে পারবে না। আরাফাত (নৌকার প্রার্থী) ভাইয়ের ভোট করবো (প্রচার চালাবো)। এর পর আমরা যখন ঢুকতে চাচ্ছি তখন মহিলারা আমাদের গায়ে হাত তুললো। একজন এখন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। তারা ইট মেরেছে, জুতো মেরেছে, গায়ে হাত তুলেছে। তারা বোঝাচ্ছে যে নৌকা ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেবে না। আজকেই যদি এমন পরিস্থিতি হয়, তাহলে ভোটের দিন ডাইরেক্ট বলবে নৌকা ছাড়া কোনো ভোট হবে না। ডাইরেক্ট নৌকায় সিল মারবে। আজকে ভোটারদের কাছে পৌঁছতে দিল না। ভোটের দিন আমাকে ভোট দিতে দেবে এই বিশ্বাস হারায়ে গেছে।
রিটার্নিং অফিসারকে বলেছি আমরা জানের নিরাপত্তা দেখতেছি না। আমি না হয় আমার জানের মায়া করলাম না। কিন্তু আজকে আমার একটা কর্মী হাসপাতালে। আমি তো চাই না হিরো আলমের জন্য কোনো মায়ের বুক খালি হোক। আপনারা জানেন, এই নির্বাচন নির্বাচন করে কত মায়ের বুক খালি হয়েছে শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার আশায়। কিন্তু তারা ক্ষমতায় ঠিকই আছে, কিন্তু মা তার সন্তানকে ফিরে পায়নি। এর রকম ঘটনা যদি হয়, আমার কর্মী যদি মারা যায়, তাহলে কী হবে?