সালমান এফ রহমান বলেন, ‘বিএনপি অনেক জ্বালাও পোড়াও আন্দোলন করেছে, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দাবি জানিয়ে অনেক ডেট (তারিখ) দিয়েছে- শেখ হাসিনার সরকারকে যেমন করেই হোক ক্ষমতায় থেকে নামিয়ে দেবে। হাস্যকর বিষয় হলো তাদের আন্দোলন, দাবি ধুলোয় মিশিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ক্ষমতা রয়েই গেছেন।’
সম্প্রতি বিদেশিদের বাংলাদেশে সফরের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা বলেন, ‘বিএনপির কথার সঙ্গে বিদেশিদের কথার কোনো মিল নেই। বিএনপি দাবি করছে, ‘‘আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাব না।’’ কিন্তু বিদেশিরা বলছে, ‘‘আমরা তত্ত্বাবধায়ক নয়, আমরা চাই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন।’’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই প্রস্তাবে রাজি আছেন। আপনারা জানেন, ইতোমধ্যে কয়েকটি দেশ থেকে নির্বাচন অবজার্ভ (পর্যবেক্ষণ) করতে বিদেশ থেকে লোক আসছে। আমরাও তাদের সহযোগিতা করছি।’
তিনি বলেন, ‘মার্কিন সরকার ভিসানীতিতে বলেছে, যারা নির্বাচনকে বাধা দিবেন তাদের বিরুদ্ধেই নিষেধাজ্ঞা দেবে। কিন্তু আমার কথা হলো- আমরা তো নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। বিএনপি তো নির্বাচন হতে দিতে চাচ্ছেন না। তাই সবাই আগে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে।’
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সালমান এফ রহমান বলেন, ‘নির্বাচন সন্নিকটে, কে নৌকার মনোনয়ন পাবে তা এখনো ঠিক হয়নি। তবে এখন থেকেই আমাদের নৌকার জন্য ভোট চাইতে হবে। কারণ ঢাকার এই পাঁচটি আসন আমি প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে চেয়েছি।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, ‘১৯৭১ সালে যুদ্ধের মতো আবার আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের বিরুদ্ধে কঠিন ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে ঐক্যবদ্ধের বিকল্প নেই।’
কামরুল ইসলাম বলেন, ‘মনে রাখতে হবে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। বিদেশি দেশগুলো বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যে নাক গলাচ্ছে, মনে হচ্ছে আমরা তাদের অঙ্গরাজ্য। তারা চায় বিএনপির মতো সরকার পরিবর্তন। কিন্তু কোনো দিনও তা হবে না। বিএনপি যদি আবারও আগুন সন্ত্রাসে মেতে ওঠে, আমরা তার দাঁতভাঙা জবাব দেব। পরিষ্কার কথা, নির্বাচন হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে।’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, ‘আমি আজ কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য রাখব না। আজ শুধু সাংগঠনিক কথা বলব। আজ এই বর্ধিত সভা আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বর্ধিত সভায় সংগঠনের বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনেছি। আমি অনেক বর্ধিত সভায় গিয়েছি সেখানে চেয়ার ছোড়াছুড়িসহ অনেক সংঘর্ষ হয়েছে। কিন্তু ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা চমৎকারভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমি ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
অনুষ্ঠানের আরেক বিশেষ অতিথি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, ‘আমরা অনেক কষ্ট করে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমরা আর সন্ত্রাসীদের ক্ষমতায় যেতে দেব না। এবারের নির্বাচন সত্তরের নির্বাচনের মতো সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী করতে হবে।’
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজীর আহমদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল বাতেন মিয়া, নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহমেদ ঝিলু, দোহার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন, নবাবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান ভূঁইয়া কিসমত, কেরানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ম.ই মামুন, দোহার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তৈবুর রহমানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।