নানা নাটকীয়তার পর অবশেষে বিশ্বের সর্ববৃহৎ সামরিক জোট নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশনে (ন্যাটো) যোগ দিতে যাচ্ছে সুইডেন। জোটে দেশটির সদস্যপদকে সমর্থন জানাতে সম্মত হয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে সর্বশক্তি নিয়ে হামলা শুরুর পর নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আসছিল রুশ সীমান্তবর্তী দেশ ফিনল্যান্ড ও সুইডেন। ফিনল্যান্ড ন্যাটোতে যোগ দিতে পারলেও তুরস্কের আপত্তিতে আটকে যায় স্টকহোমের সুযোগ।
তুরস্কের অভিযোগ ছিল, সুইডেন কুর্দি জঙ্গি ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠী পিকেকে-কে মদদ ও সহায়তা করে। দেশটিকে এসব সন্ত্রাসীদের আশ্রয় ও অস্ত্র কিনতে আর্থিক সহায়তা বন্ধ করতে হবে। এরপর তারা ন্যাটোর সদস্যপদে ছাড় দেওয়ার বিষয়ে ভাববে বলে জানায় আঙ্কারা। এ নিয়ে জলঘোলা কম হয়নি।
ন্যাটো মহাসচিব জেন্স স্টলটেনবার্গ সোমবার (১০ জুলাই) ঘোষণা করেছেন, সুইডেন সদস্যপদ পেতে রাজি হয়েছেন এরদোয়ান।
ন্যাটোতে যোগ দেওয়া এবং তুরস্কের উদ্বেগের বিষয়ে করণীয় নিয়ে সোমবার লিথুয়ানিয়ার ভিলনিয়াসে বৈঠকে বসেন এরদোয়ান ও সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী ওলফ ক্রিস্টারসন। এরপরই তারা সম্মত হন। তাদের আলোচনার পর স্টলটেনবার্গ বলেছেন, বিষয়টিকে এগিয়ে নিতে আপত্তি নেই তুরস্কের।
সংবাদ সম্মেলনে ন্যাটো মহাসচিব বলেছেন, আমি ঘোষণাটি দিতে পেরে খুবই আনন্দিত। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান সুইডেনের সদস্যপদের আবেদন সংসদে পাঠাতে এবং দ্রুত সময়ে অনুমোদন দিতে সম্মত হয়েছেন। আজ ঐতিহাসিক দিন।
আলোচনার পর জারি করা যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তুরস্ক -সুইডেন সন্ত্রাসবাদ দমনে এবং বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়াতে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে।
তার আগে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান সোমবার আবারও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-এ তুরস্কের যোগদানের দাবি তুলেছিলেন। অপ্রত্যাশিত অবস্থান পরিবর্তন করে তিনি বলেছিলেন, তুরস্কের পার্লামেন্টে ন্যাটো সামরিক জোটে সুইডেনের যোগদানের প্রস্তাব অনুমোদন করার আগে ইইউ ব্লকে আঙ্কারার যোগদানের পথ উন্মুক্ত করা উচিত।
লিথুয়ানিয়ার ভিলনিয়াসে ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলনের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে তুর্কি প্রেসিডেন্ট ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে বলেছেন, আমি এখান থেকে এই দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যারা ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তুরস্ককে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দরজায় অপেক্ষা করিয়ে রেখেছে।
উল্লেখ্য, ন্যাটোয় নতুন কোনও দেশকে অন্তর্ভুক্ত করতে হলে জোটের ৩০ সদস্যের প্রত্যেকের অনুমোদন পেতে হয়। ৭০ বছরের বেশি সময় ধরে পশ্চিমা জোটের সদস্য তুরস্ক এবং জোটটির দ্বিতীয় বৃহত্তম সেনাবাহিনীও তাদের।