প্রকাশ: শনিবার, ৮ জুলাই, ২০২৩, ৯:৩৩ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ পৌর এলাকার বাসিন্দা আহসান হাবিব। তাকে সকলে আম পাগল নামেই চেনে এবং একজন সৃষ্টিশীল কৃষি উদ্যক্তা। গত ১০ বছরে গড়ে তুলেছেন আধুনিক মানের আম বাগান। এ ছাড়া তিনি সাধারন আম চাষিদের দাবি আদায়ের জন্যেও কাজ করেন। তবে এবার তিনি নিজেই প্রতারিত হয়েছেন। স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে সরকারি সংরক্ষণাগারে আম রেখে চরম বিপাকে পড়েছেন তিনি।
জানা গেছে, গত ১৪ জুন শিবগঞ্জ পৌর এলাকার একাডেমি মোড়ে অবস্থিত আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের সংরক্ষণাগারে সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে প্রায় ৩ টন আম রেখেছিলেন আহসান হাবিব। কিন্তু সংরক্ষণ তো দূরের কথা। কয়েকদিন পরেই পচতে থাকে আম। এমতাবস্থায় ক্রেতা না পেয়ে অল্প দামে বিক্রি করতে হয় আম গুলা। এছাড়াও প্রায় ৩০ শতাংশর বেশি আম পচে নষ্ট হয়ে গেছে।
আম চাষী আহসান হাবীব বলেন, আমার বাগানের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) সনদ প্রাপ্ত খিরসাপাত ও ল্যাংড়া প্রায় ৩ টন আম ছিল। কিছু দিন আগে একাডেমি মোড়ের সরকারি সংরক্ষণাগারের দায়িত্বে প্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান তাদের এখানে কাঁচা আম ৯০ দিন পর্যন্ত রাখা যায়। এমন প্রস্তাবনায় তিনি শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন। তাদের পরামর্শে প্রায় ৩ টন ল্যংড়া ও খিরসাপাত আম সেই সংরক্ষণাগারে সংরক্ষণের জন্য রাখেন।
পরে ২৫ জুন গিয়ে দেখতে পান আমগুলোতে পচন ধরেছে। এমন চিত্র দেখে তিনি দিশেহারা হয়ে ক্রেতা খুঁজতে থাকেন। পরে অল্প দামে জুস কোম্পানির এজেন্ট এর কাছে আমগুলো অল্পদামে বিক্রি করেন। এতে তার প্রায় আড়াই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমগুলো যখন গাছ থেকে নামাই তখনি ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা মণ দরে আম গুলো বিক্রি করা যেতো। কিন্তু উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে সরকারি সংরক্ষণাগারে রেখে তিনি লোকশানে পড়েছেন। তিনি এর ক্ষতিপূরণ দাবী করেছেন।
শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, আহসান হাবিবের আমগুলো বেশি পরিপক্ক ছিল আমরা বুঝতে পারিনি। মূলত এজন্যই আম গুলো ফেটে গেছে। তবে পচে যাওয়ার ঘটনা আমি জানিনা। আর এখন আমাদের ফজলি জাতের আম রাখা আছে সেগুলো তো পাঁকছেনা।
এ বিষয়ে আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এস এম হাসানুজ্জামান বলেন, এ বিষয়টি আমি অবগত না। আর শিবগঞ্জের সংরক্ষণাগারটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। সেখানে আম রাখার আগে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম তাকে জানাতে পারত। সেই আম চাষিকে অন্য প্রকল্পের মাধ্যমে সহযোগিতা করা হবে। তিনি ওই ক্ষতিগ্রস্ত আম চাষির পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।