ঈদুল আজহার যাতায়াতে দেশের সড়ক ও মহাসড়কে ২৭৭টি দুর্ঘটনায় ২৯৯ জন নিহত ও ৫৪৪ জন আহত হয়েছেন।
শনিবার (৮ জুলাই) এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, সড়ক, রেল ও নৌ পথে সম্মিলিতভাবে ৩১২টি দুর্ঘটনায় ৩৪০ জন নিহত ও ৫৬৯ জন আহত হয়েছেন।
ঈদযাত্রা শুরুর দিন ২২ জুন থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত ১৫ দিনের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তারা 'ঈদুল আজহায় সড়ক দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ ২০২৩' প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
এতে বলা হয়েছে, এবারের ঈদে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও পরিবহন ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়াসহ নানা কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ মানুষের কম যাতায়াত হয়েছে। ঈদযাত্রায় মোট যাতায়াতের প্রায় ৮ শতাংশ মোটরসাইকেলে হয়েছে। কিছু কিছু সড়কের অবস্থা ভালো হওয়ায় এসব রুটে ভোগান্তি কমার পাশাপাশি ২০২২ সালের ঈদুল আজহার তুলনায় সড়ক দুর্ঘটনা ১৫ দশমিক ১৬ শতাংশ, প্রাণহানি ৩৩ দশমিক ১১ শতাংশ ও আহত ৪২ দশমিক ২৭ শতাংশ কমেছে। তবে, পরিকল্পনার গলদে উত্তরাঞ্চলের পথে যানজটের ভোগান্তির পাশাপাশি কিছু কিছু রুটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য হলেও কর্তৃপক্ষ বরাবরের মতো দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে।
'ঈদযাত্রার ১৫ দিনে রেলপথে ২৫টি দুর্ঘটনায় ২৫ জন নিহত ও ১০ জন আহত, নৌ-পথে ১০টি দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত, ১৫ জন আহত ও ৬ জন নিখোঁজ হয়েছেন', প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
সংগঠিত দুর্ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মোট যানবাহনের ২২ দশমিক ৩৭ শতাংশ মোটরসাইকেল; ২৩ দশমিক ০৫ শতাংশ ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান বা লরি; ১৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক, ভ্যান বা সাইকেল; ১৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ বাস; ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ কার, মাইক্রো বা জিপ; ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ নছিমন, করিমন, ট্রাক্টর, লেগুনা বা মাহিন্দ্রা এবং ৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা।
প্রতিবেদন আরও বলা হয়েছে, বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে দুর্ঘটনার শীর্ষে মোটরসাইকেলের অবস্থান থাকলেও এবারের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, পশুবাহী যানবাহনের ব্যাপক চলাচল ও ঈদযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ট্রাক, পিকআপ বা কাভার্ডভ্যানের অবাধ চলাচলের কারণে এবার দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে ট্রাক, পিকআপ বা কাভার্ডভ্যান।
এবারের ঈদে ৮৮টি ট্রাক, পিকআপ বা কাভার্ডভ্যান দুর্ঘটনায় ৯৩ জন নিহত ও ১৯৩ জন আহত হয়েছেন, যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৩১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এবার ৯১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৯৪ জন নিহত ও ৭৭ জন আহত হয়েছেন, যা মোট দুর্ঘটনার ৩২ দশমিক ৮৫ শতাংশ।