বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: কর্মোপযোগী শিক্ষার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি সম্ভব   নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়: রাষ্ট্রপতি   নির্বাচনে ২১ সদস্যের মনিটরিং সেল গঠন ইসির   দেশজুড়ে যে তিনদিন মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা!   মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানি ৯ জানুয়ারি   প্রাথমিকের ছুটি বাড়ল ১৬ দিন (তালিকা)   নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিএনপির প্রচারণা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
আজ বিশ্ব রক্তদাতা দিবস
আমার চোখে স্বেচ্ছা রক্তদাতারা সুপারম্যান
মেহেদী হাসান
প্রকাশ: বুধবার, ১৪ জুন, ২০২৩, ৩:৩০ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

আমি মেহেদী হাসান। থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত একজন মানুষ। বিশ্ব রক্তদাতা দিবসের আজকের এই দিনে দেশের সকল থ্যালাসেমিয়া রোগীর পক্ষ থেকে স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা। আমি ব্যক্তিগতভাবে সুপারম্যানের খুব ভক্ত। সুপারম্যান যেমন অন্যের প্রয়োজনে নিঃস্বার্থভাবে ঝাপিয়ে পড়ে তেমনি স্বেচ্ছা রক্তদাতারাও সবাই আমার কাছে সুপারম্যান। তারাও দিনে-রাতে মানুষের প্রয়োজনে দান করেন শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। স্বেচ্ছা রক্তদাতা সব সুপারম্যানের প্রতি আমাদের আন্তরিক আহ্বান, আপনারা নিয়মিত রক্ত দিন। অন্যকে উদ্বুদ্ধ করুন। জন্মগতভাবে আমরা যারা থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত, আপনাদের দেয়া রক্ত পেয়েই আমরা বেঁচে আছি। এই পৃথিবীর আলো-বাতাস দেখছি। আপনারাই আমাদের সুপারম্যান। 

ইন্সটিটিউট অব কমিউনিটি হেলথ বাংলাদেশ, ঢাকার আমি একজন প্যারামেডিক শিক্ষার্থী। রক্তের গ্রুপ এ পজেটিভ। ২০০৩ সাল থেকেই আমি কোয়ান্টাম ল্যাব থেকে নিয়মিত রক্ত নিচ্ছি। এটি সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের জন্যে। আমার বোনও একই রোগে আক্রান্ত। আমার বোনেরও রক্ত জোগাড় হয় কোয়ান্টাম ল্যাব থেকে। 

আমার বয়স যখন সাড়ে তিন বছর, তখনই আমার থ্যালাসেমিয়া রোগ ধরা পড়ে। তখন থেকেই আমার নিয়মিত রক্তের প্রয়োজন হয়। মনে পড়ে, আমার শরীরে যখন হিমোগ্লোবিন কমে যেত তখনই আমি অসুস্থ হয়ে পড়তাম। খেলাধুলা বন্ধ, স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যেত। এক ব্যাগ নিরাপদ ও বিশুদ্ধ রক্তের জন্যে বাবা সারাদিন বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে যখন বাসায় আসতেন, তখন আমি জিজ্ঞেস করতাম, বাবা বাবা রক্ত পেয়েছ? বাবা আমার পাশে বসে কপালে চুমু খেতেন, আদর করতেন। বাবার চোখে তখন পানি! আমি তেমন কিছুই বুঝতাম না। মনে মনে ভাবতাম, বাবার কাছে আমি তো চকলেট বা মজার কোনো খাবার চাইনি। তাহলে বাবা কাঁদছেন কেন? আমি তখন এটুকু বুঝতাম, রক্ত পেলে আমি আবার খেলতে পারব, স্কুলে যেতে পারব। সেইসব দিনগুলোর কথা মনে হলে খুব কষ্ট লাগে।

আমার মতো এমন নানা ঘটনার জন্ম দিয়ে বেঁচে আছে দেশের ৮০ হাজার থ্যালাসেমিয়া রোগী। রক্তচাহিদার একটা বড় অংশ প্রয়োজন হয় আমাদের মতো নিয়মিত রক্তগ্রহীতা রোগীদের জন্যে। থ্যালাসেমিয়া ছাড়াও রক্তস্বল্পতা, প্রসূতির রক্তক্ষরণ, অগ্নিদগ্ধ রোগী, বড় অপারেশন, দুর্ঘটনা ইত্যাদি নানা কারণে রক্তের প্রয়োজন হয়। আসলে রক্তের বিকল্প কেবল রক্ত। রক্তের এ চাহিদা পূরণে নতুন স্বেচ্ছা রক্তদাতার কোনো বিকল্প নেই। সাধারণত ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী যেকোনো শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ সক্ষম ব্যক্তি প্রতি চার মাস পরপর রক্ত দিতে পারেন। আমাদের সমাজে অনেকে আছেন যারা কারো বিপদ দেখলে টাকা-পয়সা দিয়ে সাহায্য করেন। কিন্তু রক্ত দিতে ভয় পান। তাই রক্তদাতারা রক্তদান করে সত্যিই মানবিক মহত্ত্বেরই পরিচয় দিচ্ছেন। কেননা একজন রক্তগ্রহীতা যখন এক ব্যাগ নিরাপদ রক্ত হাতে পান, তখন তার অনুভূতিই থাকে অন্যরকম। নির্ভরতার এ অনুভূতির মূলে রয়েছেন সুপারম্যান লাখো স্বেচ্ছা রক্তদাতা। আপনাদের জন্যে বিশ্বজুড়ে নিবেদিত আজকের দিন। অভিনন্দন সকল সুপারম্যান। আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]