প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের উন্নত দেশে পরিণত হতে হলে বাণিজ্য সম্প্রসারণ, সীমান্ত বাণিজ্য ও যোগাযোগ সহজীকরণে স্থলবন্দরসমূহকে দক্ষ ও স্মার্ট হতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশকে ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশে এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের উন্নত দেশে পরিণত হতে হলে বাণিজ্য সম্প্রসারণ, সীমান্ত বাণিজ্য ও যোগাযোগ সহজীকরণে স্থলবন্দরসমূহকে দক্ষ ও স্মার্ট হতে হবে। বর্তমান সরকার অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার পাশাপাশি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-২০৩০ এবং ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ গ্রহণ করেছে। এসব পরিকল্পনা, রূপকল্প ও অভিলক্ষ্যের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণের জন্য কাজের সুযোগ সৃষ্টি, খাদ্য ও বাসস্থানের সংস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।’
বুধবার (১৪ জুন) বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দেয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তিনি সংস্থার সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বন্দর ব্যবহারকারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ট্রান্সপোর্ট ও ট্রান্সশিপমেন্ট কেন্দ্র হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশ। বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানের এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে স্থলবন্দরসমূহ দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। বিশেষ করে ভারত, নেপাল, ভুটান এবং মিয়ানমারের সাথে স্থলসীমান্ত পথে কম খরচে ও সহজে যোগাযোগের সুযোগ ব্যবহার করে যাত্রী চলাচল ও মালামাল পরিবহনের মাধ্যমে স্থল বাণিজ্য বিকাশিত হচ্ছে, পাশাপাশি এসকল দেশের জনগণের মাঝে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্যস্বাধীন দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে অভ্যন্তরীণ ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্পায়ন এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেন। জাতির পিতা ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সর্বপ্রথম বেনাপোল শুল্ক চেকপোস্ট পরিদর্শন করেন। তাঁর পরিদর্শনকালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম আন্ত:দেশীয় নৌপরিবহন ও বাণিজ্য প্রোটোকল স্বাক্ষরিত হয়, যা স্বাধীন দেশের বাণিজ্য ব্যবস্থায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত করে। দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণ আমাদের সরকারের অগ্রাধিকারমূলক উন্নয়ন কৌশল। এরই ধারাবাহিকতায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এবং জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছানোর লক্ষ্যে সেবা সহজীকরণ ও ই-সার্ভিসের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে, যার ফলে স্থলবন্দরসমূহে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পেয়েছে এবং আন্ত:দেশীয় পণ্য চলাচল ও সরবরাহ ব্যবস্থা সহজ হয়েছে। এসব উন্নয়ন কার্যক্রমের সুফল হিসেবে কোভিড-১৯ এর মতো ভয়াবহ অতিমারির মধ্যেও বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সার্বক্ষণিক বন্দরের কার্যক্রম চালু রাখার মাধ্যমে হাসপাতালগুলোতে জরুরি অক্সিজেন সরবরাহ কাজে অসামান্য অবদান রেখেছে এবং যাত্রীদের সীমান্ত পারাপারে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করেছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখার পাশাপাশি দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে কাজ করে যাবে এবং সরকারের রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। খবর: বাসস