নরসিংদীর রায়পুরায় শাশুড়ীকে হত্যার চেষ্টায় কোপানো সেই পুত্রবধূ্ অনামিকার ফাঁসির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী ও তার পরিবার।
রবিবার (৪জুন) বিকালে উপজেলার হাইরমারা ইউনিয়নের হাইরমারা বাজার সংলগ্ন মাঠে শতাধিক পুরুষ ও মহিলাদের উপস্থিতিতে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মো. আবু কাইয়ুম। তিনি বলেন, গত ৩০শে মে, রোজ বুধবার সকালে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে ফাঁকা বাসার খবর পেয়ে দুইজন সঙ্গীকে সাথে নিয়ে তার ছোট ভাই কামরুলের স্ত্রী অনামিকা প্রবেশ করেন। পরে অনামিকা তার শাশুড়ীর কাছে ঘরের আলমারি ও বাইকের চাবি চায়। চাবি না জানালে ক্ষুব্ধ হয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে তার হাতে থাকা ধারালো দা'দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এসময় আমার মা লুৎফা বেগম (৭৫) ডাক চিৎকার করিলে প্রতিবেশীরা এসে রক্তান্ত অবস্থায় উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে রোগী অবস্থা অবনতি দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। বর্তমানে আমার মায়ের অবস্থা আশংকা জনক। শরীরের বিভিন্ন স্থানে ১২০টি সেলাই করা হয়েছে। এমতাবস্থায় হামলাকারী অনামিকার সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য যে, উল্লেখ্য যে, বিষয়টি প্রতিপক্ষ মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করে আমাকে ও আমার স্ত্রী লিজাকে জড়িয়ে বিভিন্নভাবে মনগড়া মতো অপবাদ ছড়াচ্ছে। উক্ত প্রকাশিত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।
কাইয়ুম আরো জানান, অনামিকার বাবা জাহাঙ্গীর ও তার বোন প্রিয়াংকা অনামিকার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামালা তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছেন। এমনকি মামলা তুলে না নিলে কাইয়ুম ও তার স্ত্রী লিজাকে প্রাণে মেরে লাশ গুম করার হুমকি দিয়েছেন। তাই এবিষয়ে রায়পুরা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন কাইয়ুম।
এসময় তিনি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
কাইয়ুম এর স্ত্রী লিজা জানান, কামরুল বিদেশ যাওয়ার পর অনামিকা গর্ভবতী ছিলো। সে তার পরিবারের পরামর্শক্রমে বাচ্চা নষ্ট করে ফেলে, তখন আমি তাকে বলছিলাম বোন তুমি কাজটা মোটেও ঠিক করনাই, এইকথা বলার কারণে সে আমাকে প্রতিপক্ষ ভাবা শুরুকরে। আমি ও আমার স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিচ্ছে। এই দেশে পুত্রবধূর হাতে কোনো শাশুড়ী এমন ভাবে রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লরতে না হয়। দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করছি।
এই স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিক কলহের জের ধরে এই ঘটনার সূত্রপাত।
পুত্রবধূক অনামিকা হাইরমারা ইউনিয়ন ১নং ওয়ার্ডের জাহাঙ্গীর খানের মেয়ে। তার বিয়ে হয়েছিলো একই ইউনিয়নের মনিপুরা স্কুল সংলগ্ন মামুদপুর এলাকার আব্দুল মজিদের ছেলে কামরুলের সাথে। কামরুল বিয়ের মাসখানেক পর প্রবাসে চলে যায়। তার পর থেকে শুরু হয় তাদের পারিবারিক কলহ। কামরুল বিদেশ যাওয়ার পর অনামিকা গর্ভবতী ছিলো। কিন্তু সে তার পরিবারের পরামর্শক্রমে বাচ্চা নষ্ট করে ফেলে। এখবর পেয়ে স্বামী কামরুল ও তার পরিবারের লোকজনের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও দূরত্বের সৃষ্টি হয়। একদিকে বাপের বাড়ীর লোকজনের পরামর্শক্রমে বাচ্চা নষ্ট করা অন্যদিকে কেন বাচ্চা নষ্ট করলো শুশুর বাড়ীর লোকজনের এমন অভিযুক্ত পুত্রবধু অনামিকা অনেকটা দিশেহারা হয়ে যায়। তাই হয়তো এমন জগন্নতম অপরাধ করেছে পুত্রবধূ অনামিকা।
রায়পুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আজিজুর রহমান বলেন, উক্ত ঘটনায় একটি মামলা রুজু হয়েছে। আসামিকে গ্রেফতার পুলিশ প্রহরায় করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।