বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: কর্মোপযোগী শিক্ষার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি সম্ভব   নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়: রাষ্ট্রপতি   নির্বাচনে ২১ সদস্যের মনিটরিং সেল গঠন ইসির   দেশজুড়ে যে তিনদিন মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা!   মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানি ৯ জানুয়ারি   প্রাথমিকের ছুটি বাড়ল ১৬ দিন (তালিকা)   নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিএনপির প্রচারণা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
চাঁপাইনবাবগঞ্জে দেশের প্রথম ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র
পুকুরে একসাথে মাছ চাষ ও বিদুৎ উৎপাদন
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১ জুন, ২০২৩, ৯:২৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

পাশাপাশি থাকা দুইটি পুকুরের উপরে সারি সারি সাজানো সোলার প্যানেল। বাতাস ও ঢেউ সামলাতে সক্ষম ফ্লোটারের উপরে ভাসছে প্রায় ১৫০০ সোলার প্যানেল। এর নিচেই রয়েছে বিভিন্ন জাতের মাছ। এভাবেই পুকুর পানির উপরে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও পানির নিচে মাছ চাষ করা হচ্ছে একই সাথে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে চালু হয়েছে পুকুরের পানিতে দেশের প্রথম ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র। 

সদর উপজেলার আতাহার-বুলনপুরের নবাব অটো রাইস মিলের বিদুৎ চাহিদা পূরণ করে এই ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদুৎ যাচ্ছে জাতীয় গ্রিডে। নবাব অটো রাইস মিলের নবাব মৎস্য খামার প্রকল্পের পুকুরে স্থাপন করা হয়েছে এই ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র। গত সোমবার (২৯ মে) বিকেলে বিদুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানি জুলস পাওয়ার লিমিটেড। 

এই ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে মোট উৎপাদন ক্ষমতা ২.৩ মেগাওয়াট হলেও প্রাথমিকভাবে পিক আওয়ারে (সূর্যের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকাকালীন ৪ ঘন্টা) গত তিন দিনে ঘন্টাপ্রতি সর্বোচ্চ ১.৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সূর্যের আলোকে কাজে লাগিয়ে ও কোনপ্রকার জমির ব্যবহার না করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। অন্যদিকে, সোলার প্যানেল পানির উপরে ভাসমান অবস্থায় থাকায় টেকসই হয় বেশিদিন। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রাথমিকভাবে এক বছর এই ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পর্যবেক্ষনে রাখা হবে। পরে মাছ চাষের কোন ক্ষতি না হলে ব্যাপকহারে বাড়ানো হবে এমন প্রকল্প। প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ ৮ টাকা ১০ পয়সায় পাওয়ায় মিল মালিকের সাশ্রয় হচ্ছে  প্রতি ইউনিটে আড়াই টাকা করে। পুকুরের অর্ধেক জায়গায় সোলার প্যানেল থাকায় ও সোলার প্যানেল সরানোর সুযোগ থাকায় মাছের পরিচর্যায় নেই নেই কোন সমস্যা। 

জুলস পাওয়ার লিমিটেডের হেড অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট মো. নাহিদুজ্জামান বলেন, ভাসমান সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ৬ একর আয়তনের একটি জলাশয়ের ৫০ শতাংশ জমি ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে যেহেতু মাছ চাষ হচ্ছে তাই ফুডগ্রেড প্লাস্টিকের ফ্লোটার ব্যবহার করা হয়েছে যাতে মাছের ক্ষতি না হয়। এর লাইফ টাইম হচ্ছে প্রায় ২৫ বছর। ঝড় কিংবা টর্নেডোর কথা বিবেচনায় অ্যাংকরিং সিস্টেমও রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে সোালার বিদ্যুৎ উৎপাদন নিয়ে কাজ করছি। এতোদিন ধরে ঢাকায় কাজ করলেও এই প্রথম ঢাকার বাইরে এবং ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অভিজ্ঞতা এই প্রথম। এই প্রকল্পটি সম্পূর্ণভাবে পরিবেশবান্ধব ও ব্যয়সাপেক্ষ৷ আগামীতে আরও ব্যাপকভাবে এর বিস্তার ঘটাতে চাই আমরা। 

মো. নাহিদুজ্জামান বলেন, নবাব অটো রাইস মিলে দৈনিক ২ দশমিক ৫ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। দিনের বেলা সোলার বিদ্যুৎ থেকে চাহিদার প্রায় পুরোটাই সরবরাহ দেওয়া যাবে। আর কারখানায় কোনো কারণে লোড না থাকলে বিদ্যুৎ চলে যাবে জাতীয় গ্রিডে। জাতীয় গ্রিড থেকেও উর্ধ্বতন কর্মকতারা সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। এই ব্যাপারে তারা সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন। 

নবাব গ্রুপের চীফ অপারেটিং অফিসার নাহিদ হোসেন বলেন, আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মাছ চাষ। সেই পুকুরে আমরা পরীক্ষামূলকভাবে সৌর বিদ্যুৎ স্থাপন করেছি। ইতোমধ্যে গত ৩ দিন ধরে আমাদের পুকুরে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। ভালো ফলাফল আসলে এটা বাংলাদেশের অন্যান্য মৎস্য খামারের জন্য একটা লাভজনক প্রকল্প হিসাবে জনপ্রিয় হবে। 

প্যানেলে মাছ চাষে কোন অসুবিধা হচ্ছে না জানিয়ে নাহিদ হোসেন আরও বলেন, আমরা এখানে আগে থেকেই রুই, কাতলার মতো দেশি মাছ চাষ করছি। আমরা কয়েকবার মাছও ধরেছি। পানির অংশে যেহেতু কোনো স্থাপনা নেই তাই মাছ ধরতেও কোনো সমস্যা হয়নি। আবার চাইলে সৌর প্যানেলগুলো এদিক সেদিন স্থান পরিবর্তনও করা যায়। 

প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ খরচ বাবদ কতটা সাশ্রয়ী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের সর্বোচ্চ আড়াই মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ প্রয়োজন রয়েছে। কারখানার জন্য মাসে গড়ে প্রায় ৫০ লাখ টাকার বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয়। প্রকল্প সফল হলে খরচের ৭০ শতাংশ সাশ্রয় হবে বলে আশা করছি। 

জুলস পাওয়ার লিমিটেডের সহকরী ব্যবস্থাপক হাসানুল জামি বলেন, প্রকল্পটি দেখভাল ও পর্যবেক্ষণের জন্য এখানে সর্বদায় আমাদের লোকজন থাকে। পুকুরে প্রায় ১৫০০ সৌর প্যানেল রয়েছে। এছাড়াও নবাব অটো রাইস মিলের ছাদের উপর রয়েছে আরও ২২০০ সোলার প্যানেল স্থাপন করা হয়েছে। পুকুরের উপরে ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু করতে গত ৪ মাস ধরে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চালানো হয়েছে। 

উল্লেখ্য, সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের চুক্তি অনুযায়ী, আগামী ১২ বছর জুলস পাওয়ার লিমিটেডকে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করবে নবাব অটো রাইস মিল। এরপরের ১৫ বছর সম্পূর্ণ ফ্রিতে বিদ্যুৎ পাবে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানটি। আনুষ্ঠানিকভাবে শীগ্রই এর উদ্বোধন করা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। 



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]