নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে কয়েকটি স্থিরচিত্র ও ভিডিও ফাঁসের ঘটনায় মুখ খুলেছেন ঢাকাই সিনেমার চিত্রনায়ক শরিফুল রাজ।
এই ঘটনার জন্য অভিনেত্রী সুনেরাহ বিনতে কামাল, তানজিন তিশা ও নাজিফা তুষির কাছে দুঃখ প্রকাশও করেছেন তিনি। কারণ সেই ফাঁস হওয়া ভিডিওতে এই অভিনেত্রীদেরও দেখা গেছে।
তবে রাজের ‘দুঃখ’ প্রকাশ মানতে নারাজ তানজিন তিশা। বুধবার (৩১ মে) এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে রাজের উদ্দেশে তিশা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘শুধু দুঃখ প্রকাশেই কেন ঘটনা শেষ করতে চাইছো রাজ?’
ঘটনার একদিন পর ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিশা। যেখানে দেশে ফিরে এই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
তিশা তার স্ট্যাটাসে বলেন, দুটি শো-তে অ্যাটেন্ড করার কারণে বেশ কিছুদিন ধরে আমি আমেরিকাতে আছি। বাংলাদেশে যখন সকাল তখন এখানে গভীর রাত। এজন্য বাংলাদেশের খবরাখবর খুব বেশি জানি না আমি। আমাকে জড়িয়ে যে ঘটনাটা ঘটে গেছে সেটি পরে আমি দেখেছি, জানতে পেরেছি।
প্রথমত, বিষয়টি দুঃখজনক। এটা নিয়ে আমি বলতে চাই। সোশ্যাল মিডিয়াতে আমার যে ভিডিও আপ করা হয়েছে, সেটা আমার একান্তই ব্যক্তিগত। ৬-৭ বছর আগে আমরা বন্ধুরা ফান করে ভিডিওটি করেছিলাম। যেহেতু এটা আমার একান্ত ব্যক্তিগত ভিডিও, তাই এটার এক্সপ্লেনেশন দেওয়ার কিছু আছে বলে মনে করি না। প্রত্যেক মানুষের নিজস্ব জীবন আছে, পারসোনালিটি আছে; ব্যক্তিগত ব্যাপার আছে, যেটাকে জাজ করার অধিকার অন্য কাউকে আমি দিতেও চাই না।
তাই আমার দর্শক ও অনুরাগীদের উদ্দেশে এতটুকুই বলব, ৬-৭ বছর আগের সামান্য একটা ক্লিপ দিয়ে ব্যক্তি তানজিন তিশাকে জাজ করে ফেলবেন না, প্লিজ। আপনাদের ভালবাসা আর দোয়ায় আমি আজ এই পর্যন্ত এসেছি...। আমার অভিনয় আর ব্যক্তিগত জীবনকে আলাদা রাখবেন। আমি আমার অভিনয় দিয়েই আপনাদের কাছে বেঁচে থাকতে চাই সবসময়। প্রিয় হয়ে থাকতে চাই। যদিও আমি বলেছি, আমার এই ঘটনা নিয়ে কাউকে এক্সপ্লেনেশন দিতে চাই না। তবে আমার শুভাকাঙ্ক্ষী আর দর্শকদের যদি এই ঘটনা বিব্রত করে, কষ্ট দেয়- আমি মন থেকেই দুঃখ প্রকাশ করছি।
দ্বিতীয়ত, এই ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন চ্যানেল, পত্রিকা, অনলাইন নিউজে, ফেসবুক গ্রুপে, কমেন্টে বলা হচ্ছে/লেখা হচ্ছে ‘শরীফুল রাজের সঙ্গে তিশার আপত্তিকর বা গোপন ভিডিও ফাঁস’।
যথাযথ সম্মান নিয়েই আপনাদের বলছি, এই ভিডিওর মধ্যে শরীফুল রাজ কোথা থেকে এলো? কী গোপনীয়তা এখানে? তার ফেসবুক আইডি থেকে এটি প্রকাশ পেয়েছে বলেই কেন ভাবছেন সেখানে আমি তার সাথে আছি। ভিডিওতে আমি একা এবং সেটা কোনও আপত্তিকর বা গোপন ভিডিও না। বরং সেটা আমার ব্যক্তিগত মুহূর্তের। সুতরাং ‘আপত্তিকর বা গোপন ভিডিও ফাঁস’ শব্দগুলো কারেকশন করা উচিত। এটা বিব্রতকর এবং অসম্মানজনক।
তৃতীয়ত, একজন মানুষের প্রাইভেসি, হেম্পার করা, হ্যারেজমেন্ট করা বা পারসোনাল ভিডিও অনুমতি ছাড়া পাবলিকলি প্রকাশ করা, এটা বিগ ক্রাইম। সো যার আইডি বা যিনি এটি আপ করেছেন বাংলাদেশে ফিরে আমি তার বিরুদ্ধে আইনি উদ্যোগ নিচ্ছি। তবে ইতোমধ্যেই অনেকই ধারণা করতে পারছেন, অনেকের মুখে মুখেও এটি শোনা যাচ্ছে; কে বা কারা এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত। আমি এখানে কারও নাম উল্লেখ করতে চাই না। আমি দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি সম্মান রেখে পদক্ষেপ নেব। সেই আইনই বলে দেবে কে বা কারা এই ব্যক্তিগত ভিডিও ছড়িয়ে দিয়ে আমার সম্মান নষ্ট করেছে। কে বা কারা এই ভয়ঙ্কর অপরাধে জড়িত।
চতুর্থত, শরীফুল রাজের আইডি থেকে ভিডিওগুলো আপ করা হয়েছে এবং রাজ তার ব্যক্তিগত আইডি থেকে দুঃখ প্রকাশ করে স্ট্যাটাস দিয়েছে। শুধু দুঃখ প্রকাশেই কেন ঘটনা শেষ করতে চাইছ রাজ? এই যে তোমাকে জড়িয়ে কয়েকটা মেয়ের সম্মান নষ্ট হলো, তাদের ব্যক্তিগত ও ক্যারিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলল সবাই; পরিবারের সামনে হেয় প্রতিপন্ন হতে হচ্ছে, এত সিলি সিলি ক্যাপশন দিয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ ভিডিওগুলোকেও আপত্তিকর বানানো হলো; এই দায়ভার কি তোমার না? কারণ, তুমিই তো বলেছ তোমার আইডি হ্যাক করা হয়েছে। তোমার দায়িত্বশীলতার জায়গায় তুমি কী করছ? কেন আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছ না? কেন এর পিছনের মূলহোতাকে খুঁজে বের করছ না?
যদিও দেশে এসেই আমি এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেব। তবুও রাজ, আমি তোমার কাছ থেকে এতটুকু দায়িত্বশীল মনোভাব আশা করেছিলাম সত্যি।
আসলে তানজিনা তিশা তার কাজ দিয়েই দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছে এবং কাজ নিয়েই এই পৃথিবীতে যতদিন বেঁচে আছে দর্শকের মনে কাজ নিয়েই থেকে যেতে চায়। তাই দর্শকদের কাছে অনুরোধ, আপনাদের তানজিন তিশাকে কাজের মাধ্যমেই বাঁচিয়ে রাখুন।