প্রকাশ: শুক্রবার, ১৯ মে, ২০২৩, ৮:৪১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
বরগুনার বেতাগী উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের কাইয়লকাটা এলাকার দীর্ঘ এক কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
সড়কটির পাকাকরণ কাজ করছে পটুয়াখালীর মেসার্স শাকিল এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। এলাকাবাসীর অভিযোগের তীর স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিইডি) লোকজনকে ‘ম্যানেজ’ করে ঠিকাদার দায়সারাভাবে রাস্তার কাজ করছেন। অন্যদিকে ঠিকাদারের পক্ষে সাফাই গাইছে স্থানীয় এলজিইডি অফিস।
উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্র জানায়, মোকামিয়া ইউনিয়নের কাইয়লকাটা থেকে চরখালি পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণ কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৭৬ লাখ টাকা। দরপত্রের মাধ্যমে শাকিল এন্টারপ্রাইজকে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। গত এক মাস আগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাস্তাটির নির্মাণ কাজ শুরু করে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, দীর্ঘ এক কিলোমিটার পুরো বালি ভরাটের কাজ শেষ হয়েছে। এখন রাস্তার সাববেজের (নিচের স্তর) কাজ চলছে। রাস্তার পাশের মাটি ভরাটও করা হয়েছে কোনমতে। পুরো সাববেজের জন্য ব্যবহৃত খোয়া নিম্নমানের ইটের। স্থানীয়ভাবে যা রাবিশ বলে পরিচিত। রাস্তার মাঝে মাঝে স্তূপ করে রাখার পর ইটের গুঁড়ামিশ্রিত ব্যবহার অযোগ্য ইটের খোয়া রাস্তায় বিছিয়ে (স্প্রেডিং) বালু দিয়ে ঢেকে দেয়া হচ্ছে। অবশ্য উক্ত রাস্তার নির্মাণ কাজ দেখার দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারি প্রকৌশলী জানিয়েছেন তিনি খোয়া বিছিয়ে (স্প্রেডিং) বালু দিয়ে ঢেকে দেয়ার বিষয়ে কিছু জানেন না।
নির্মাণাধীন সড়ক এলাকার বাসিন্দা আ: মন্নান জোমাদ্দার, জালাল কাজী, চান মৃধাসহ আরও একাধিক ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাস্তা নির্মাণে যে ইটের খোয়া ব্যবহারের চেষ্টা করা হচ্ছে, এমন খোয়া দিয়ে কোন কাজ হয় না। লাঞ্ছিত হবার ভয়ে এ নিয়ে তারা প্রতিবাদ করছেন না। তাদের আশংকা নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহার করে ঠিকাদার এভাবে কাজ শেষ করে গেলে অল্পদিনের মধ্যে রাস্তা দেবে ও কার্পেটিং উঠে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়বে।
রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার হচ্ছে না দাবি করে মেসার্স শাকিল এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটর মো. মহিউদ্দিন বলেন, এক নম্বর খোয়া দিয়ে কাজ চলমান রয়েছে। হয়তো সাথে কিছু খারাপ খোয়া থাকতে পারে। আমি সেগুলো ফেলে দিতে বলেছি। ভালো মন্দ অভিযোগ থাকবেই। আমার খোয়া ল্যাব টেস্ট করা ও তা পাশও হয়েছে। রাস্তায় তড়িঘড়ি করে ফাস্ট কাজ হচ্ছে। বরগুনা জেলার ভিতরে ৭৫ দিনে দেড় কিলোমিটার রাস্তার কাজ শেষ করা একমাত্র ঠিকাদার আমি।
রাস্তাটির নির্মাণ কাজের দেখভালের দায়িত্বে থাকা বেতাগী এলজিইডি অফিসের উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. মেহেদী হাসান বলেন, আপাত দৃষ্টিতে আমাদের কাছে খোয়ার মান ভালো মনে হয়েছে। আমারা খোয়া পরীক্ষা করার জন্য ল্যাবে পাঠিয়েছি। যদি রিপোর্টে খোয়ার মান খারাপ আসে তবে ঠিকাদারকে খারাপ খোয়া পরিবর্তন করে ভালো খোয়া দিতে হবে।
বেতাগী উপজেলা প্রকৌশলী মো. রাইসুল ইসলাম বলেন, আমি সরেজমিন রাস্তায় গিয়ে দেখেছি খোয়ার মান ভালো। কিছু খারাপ খোয়া থাকতে পারে। আপনারা হয়তো শুধু সেই খারাপ খোয়ার ছবি তুলেছেন। খোয়া পরীক্ষার জন্য ইতোমধ্যে ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। ল্যাবে পরীক্ষায় না টিকলে ঠিকাদারকে অবশ্যই খোয়া পাল্টাতে হবে। নিম্নমানের খোয়া ব্যবহারের কোন সূযোগ নেই।