প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৮ মে, ২০২৩, ৮:২৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
নরসিংদীতে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে গলাকেটে জবাই করে হত্যার দায়ে পাষন্ড স্বামী ফখরুল ইসলামের মৃত্যুদন্ড (ফাঁসি’র) আদেশ দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে নরসিংদী অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিজ্ঞ বিচারক শামিমা পারভিন এ আদেশ প্রদান করেন। একই সাথে আসামীকে আরো ২০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করে আদালত।
দন্ডপ্রাপ্ত ফখরুল ইসলাম ঘোড়াদিয়া সঙ্গীতা এলাকার মো: সাইফুল্লার ছেলে। সে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে বেসরকারী একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করতো।
মামলা সূত্রে জানাজায়, ২০১৯ সালে পারিবারিক ভাবে পৌর শহরের দত্তপাড়া এলাকার পারভেজ মিয়ার মেয়ে রেশমীর সাথে ঘোড়াদিয়া সঙ্গীতা এলাকার মো: সাইফুল্লার ছেলে ফখরুলের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই স্বামী ও শুশুরবাড়ীর লোকজন রেশমীর উপর শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন চালাতো। ফখরুলের চাকরি না থাকায় প্রায় সময় রেশমীর নিকট টাকা পয়সা চাইতো, টাকা না দিলে রেশমীকে মারধোর করতো। এরই মধ্যে তাদের কোল জোড়ে ফুটফুটে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু নির্যাতন বন্ধ হয়নি। সবশেষ ২০২১ সালের ১৩ই ডিসেম্বর গভীর রাতে শহরের ঘোড়াদিয়ার সংঙ্গীতা নিজ বাড়ীতে স্ত্রী রেশমী আক্তার (২৬) ও তার দেড় বছরের শিশু সন্তান ফাহিম মাহমুদ সালমান সাফায়াতকে গলাকেটে জবাই করে হত্যা করেন। হত্যার পর অভিযুক্ত ফখরুল পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। হত্যার বিষয়টি টের পেয়ে ফখরুলের বড় ভাই শরীফ ধাওয়া দিয়ে এলাকাবাসীর সহায়তায় ব্রাহ্মন্দী এলাকা থেকে তাকে ধরে পুলিশের নিকট শোপর্দ করে। খবর পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করেন। হত্যার ঘটনায় নিহত রেশমীর পিতা পারভেজ মিয়া বাদী হয়ে মেয়ের জামাই ফখরুল ইসলামকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ দেড় বছর মামলায় ১১ জনের সাক্ষ্য প্রমান শেষে সন্দেয়াতিত ভাবে হত্যার অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় নরসিংদী অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিজ্ঞ বিচারক শামিমা পারভিন হত্যা মামলার এমকাত্র আসামী ফখরুল ইসলামের ফাঁসির আদেশ প্রদান করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন নরসিংদী জজ কোর্টের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এ পি পি) এড. এম এন অলিউল্লাহ,সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এ পি পি) এড.মো: আসাদুজ্জামন। অতন্ত্য দ্রুত সময়ের মধ্যে অথ্যাৎ ১৩ কার্য দিবসের মধ্যে মামলা শেষ হয়েছে। মামলায় ১১ জন সাক্ষির সাক্ষ্য গ্রহন করেছেন আদালত। আমরা আসামীর সবোর্চ্চ শাস্তি দাবী করেছি। আদালত সকল সাক্ষির সাক্ষ্য প্রমান শেষে আসামীর মৃত্যুদন্ড (ফাঁসির) আদেশ প্রদান করেছে। এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আমরা মনে করি মামলার বাদী সল্প সময়ের মধ্যে সঠিক বিচার পেয়েছে। আসামী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এড.রোজিনা আক্তার।