মোংলা সমুদ্র বন্দরের ৮নম্বর জেটিতে যমুনা নদীতে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর স্টিলের পাইপ (স্টাকচার) সহ বিভিন্ন (যন্ত্রাংশ) নিয়ে নোঙ্গর করেছে বিদেশি বানিজ্যিক জাহাজ “এমভি সান ইউনিটি”।
বুধবার সকাল ১১ টার দিকে মোংলা বন্দরের ৮ নম্বর জেটিতে পৌঁছে পন্য খালাস শুরু করে পানামা পতাকাবাহী এ জাহাজটি। এটি বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর পুর্ব জোনের স্টিলের পাইপ সহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশের এ আমদানীকারককের ১০ম জাহাজের শেষ চালান বলে জানায় জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট কর্তৃপক্ষ।
বিদেশি জাহাজ “এমভি সান ইউনিটি” স্থানীয় শিপিং এজেন্ট এনশিয়েন্ট স্টিম শিপ কোম্পানি লিমিটেড এর ব্যাবস্থাপক মোঃ ওহিদুজ্জামান বলেন, পানামা পতাকাবাহী জাহাজ “এমভি সান ইউনিটি” গত ২ মে ভিয়েতনামের হাইফং বন্দর থেকে সরাসরী মোংলা বন্দরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। এরপর (১৭ মে) বুধবার সকালে মোংলা বন্দরের ৮ নম্বর জেটিতে ভিড়ে। জাহাজটিতে বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুর ১৬৯ প্যাকেজে ১ হাজার ৫৪৮.০৪৬ মেঃ টন যন্ত্রাংশ সহ বিভিন্ন মালামাল রয়েছে।
বুধবার সকালে জাহাজটি বন্দর জেটিতে নোঙ্গর করার পর, এদিন দুপুরের পালা থেকেই মেশিনারি পণ্য খালাস শুরু করা হয়।
সেতুর খালাসকৃত পন্যগুলো বার্জে নামানে হচ্ছে, পরে সেগুলো নদী পথে সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীতে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর কাছে পৌঁছে যাবে।
তিনি আরো বলেন, জাহাজটি মোংলা বন্দরে নঙ্গরের পর ২/৩ দিনের মধ্যেই জাহাজ থেকে মেশিনারি পণ্য খালাস করা সম্পুর্ন হবে বলে আশা করছি।
মেশিনারির পণ্য খালাসকারী শ্রমিক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স খুলনা ট্রেডার্স কোম্পানী লিঃ এর সুপারভাইজার মো: রুহুল আমিন জানান, মোংলা বন্দরে যতগুলো মেশিনারিজ পন্যবাহী জাহাজ খালাস হয়েছে তার প্রায় ৮০ শতাংশ পন্য এ প্রতিষ্ঠান খালাস করেছে। মোংলা বন্দর দিয়ে আমাদানী-রপ্তানীকারক ব্যাবসায়ীদের মালামাল পরিবহন করতে নৌপথ ও সড়ক পথে কোন জানজট না থাকায় নির্বিগ্নে পন্য আনা-নেয়া করতে পারছে। যাতে ব্যাবসায়ীদের সময় ও অর্থ দুই দিকে সাশ্রয় হচ্ছে। তাই এই কোম্পানীর কর্মকর্তা-কর্মচারী,শ্রমিক ও দক্ষ জনবল দিয়ে দেশী-বিদেশী জাহাজ থেকে মুল্যবান এ পন্য খালাস-বোঝাই করে থাকে। তাতে সুন্দর ও সঠিক ভাবে আমাদানীকারকদের ঘরে নিক্ষুতভাবে সঠিক সময় মালামালগুলো পৌছে দেয়া যায় এটাই কোম্পানীর লক্ষ ও উদ্দোশ্যে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলী বলেন, দেশে বড় বড় মেঘা প্রকল্পের আমদানিকৃত মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পন্য, রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও বঙ্গবন্ধ রেলওয়ে সেতুর পন্য সহ দেশের বেশির ভাগ বিদেশী মালামাল মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস হওয়ায় এ বন্দরের সক্ষমতা পুর্বের তুলনায় আনেকগুন বেড়েছে এটা প্রমানিত। যা দক্ষ লোকবলের মাধ্যমে বিভিন্ন মেশিনারিজ জাহাজ থেকে পন্য খালাস ও বোঝাই করা হয়েছে। নৌ-পথে বা সড়ক পথে গন্তব্য স্থনে পৌছাতে সময় ও অর্থ দুটই সাশ্রয় হচ্ছে মোংলা বন্দররের আমদা-রপ্তানীকারক ব্যাবসায়ীদের।
এছাড়া এখানকার ব্যাবসায়ীদের আরো বেশী সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে সর্বক্ষনিক কাজ করছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেলওয়ে সেতুর পুর্ব এ পশ্চিম জোনেন সর্ব মোট ৩৫টি জাহাজে বোঝাই করে আসা ৮২ হাজার ৩২৫ মেট্রিকটন মেশিনারিজ পন্য মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস করা হলো। আগামীতে দেশের মেঘা প্রকল্পের আরো পন্যবাহী জাহাজ এসে এ বন্দর দিয়ে খালাস হবে বলে জানায় বন্দর চেয়ারম্যান।