এক ব্যাংক কর্মচারির বন্দুকবাজিতে অতিষ্ঠ খোদ পরিবারের স্বজনরা। বিষয়টি একাধিকবার গড়িয়েছে থানা-পুলিশে। হয়েছে পুলিশ প্রতিবেদনে বন্দুক জব্দের সুপারিশ। কিন্তু এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন না করায় বেপরোয়া হয়েছে উঠেছে ওই বন্দুকধারি ব্যাংক কর্মচারি।
এনিয়ে ভুক্তভোগীসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
ওই ব্যাংক কর্মচারির নাম মো: নজরুল ইসলাম বাবুল (৬০)। তিনি ময়মনসিংহ নগরীর ফায়ার সার্ভিস রোডস্থ জনতা ব্যাংক (মহিলা) শাখা থেকে বরখাস্ত হয়েছেন। জেলার তারাকান্দা উপজেলার ৪ নং গালাগাঁও ইউনিয়নের মুলাবাড়ী এলাকার মৃত আলী আকবরের ছেলে।
বুধবার (১৭ মে) বিকালে তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের এই অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
গত ১৩ মে উপজেলার মুলাবাড়ী এলাকায় পারিবারিক জমি বিরোধের জের ধরে আপন ভাতিজা এনামুল করিম রাসেলকে লাইসেন্স করা এক নালা বন্দুক দিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন মর্মে অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলে জানান ওসি।
তিনি আরও জানান, রাসেলের দায়ের করা অভিযোগটি তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এই ঘটনা ছাড়াও এই ব্যাংক কর্মচারির বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ৬ অক্টোবর তার সহোদর ভাই আলী আহাম্মদের ওপর বন্দুক নিয়ে হামলা করে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া ঘটনা ঘটে।
ওই ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের হলে কোতয়ালি মডেল থানার বর্তমান ওসি (তদন্ত) ফারুক হোসেন এক পুলিশ প্রতিবেদনে এই ব্যাংক কর্মচারিকে একজন বদমেজামি উশৃংখল লোক বলে উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে যে কোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশঙ্কায় জনস্বার্থে তার বন্দুকটি জব্দ করা একান্ত আবশ্যক, বলেও প্রতিবেদনে এই পুলিশ কর্মকর্তা সুপারিশ করেন।
এসব ঘটনায় ভুক্তভোগী এনামুল করিম রাসেল জানান, নজরুল ইসলাম তার লাইসেন্স করা এক নালা বন্দুক দিয়ে আমাকে খুন করার হুমকি দিয়েছে। এ ঘটনায় আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।
এছাড়াও এই নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় হয়রানির অভিযোগ করেছেন ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবি সমিতির সিনিয়র সদস্য অ্যাডভোকেট শরাফ উদ্দিন খান পাঠান, ক্যান্টমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক আহসান হাবিব, নগরীর হাবিব মার্কেটের ব্যবসায়ি শাহীন আহম্মেদ, নগরীর বাউন্ডারি রোড এলাকার বাসিন্দা আতিকসহ আরও অনেকে।
অ্যাডভোকেট শরাফ উদ্দিন খান পাঠান বলেন, নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে চেক প্রতারণাসহ আমার নিজের ৩টি মামলা আদালতে চলমান আছে।
ভুক্তভোগী প্রফেসর আহসান হাবিব এবং আতিক মিয়া জানান, বিনা কারণে নজরুল ইসলাম আমাদের মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করছে। শুনেছি অনেকের সাথে তার এই ধরনের বিরোধ চলছে।
অপরদিকে নজরুল ইসলাম বাবুল ব্যাংক থেকে বরখাস্থ হওয়ায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহ জনতা ব্যাংক (মহিলা) শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নাঈম পারভেজ। তিনি জানান, নজরুল ইসলাম এই শাখাতে কর্মরত ছিলেন। তবে বর্তমানে তিনি বরাখাস্ত, তার পেনশন আটকে আছে। এনিয়ে আদালতে মামলা চলমান।
এসব অভিযোগ বিষয়ে মো: নজরুল ইসলাম বাবুল বলেন, বন্দুক নিয়ে কোন ধরনের হামলা বা হুমকির ঘটনা ঘটেনি। পূর্বশত্রুতার জের ধরে আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করা হয়েছে। তবে ব্যাংক সংক্রান্ত বিষয়ে আমি কোন কথা বলতে চাই না।