বরিশাল সিটি নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইজ আহমেদ মান্নাসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী খায়ের আব্দুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাতের কর্মীদের কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় তাদের আটক করে কাউনিয়া থানা পুলিশ।
রবিবার রাত ১টার দিকে পিজুস কান্তির বাসার পেছন থেকে দুজন ও বিসিকের কোকোনাট মাঠ থেকে আট জনকে আটক করা হয়।
আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন-রইজ আহমেদ মান্না, তার ছোটভাই নাদিম, সম্পদ, মামুন। বাকি পাঁচজনের নাম তাৎক্ষণিক জানা যায়নি।
শীর্ষস্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাসহ তার ১০ কর্মীকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি রাত সোয়া ১টার দিকে নিশ্চিত করেন কাউনিয়া থানা পুলিশের সেকেন্ড অফিসার (এস আই) সাইদুল হক সরদার।
অভিযোগ করা হয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় নগরীর কাউনিয়া মহাশ্মশান এলাকায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর কর্মী মনা আহম্মেদ, আব্দুল হালিম, মো. জাহিদ এবং সুজনের ওপর ছাত্রলীগ নেতা মান্না সদলবলে হামলা চালিয়ে তাদের কুপিয়ে জখম করেন।
তবে ছাত্রলীগ নেতা রইজ আহম্মেদ মান্না তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগে অস্বীকার করেন।
আহত মনার ছেলে ইরফান বলেন, সন্ধ্যায় কাউনিয়া মহাশ্মশান এলাকায় নৌকার পক্ষে প্রচারে যান তার বাবাসহ ৬-৭ জন। এ সময় মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মান্নার নেতৃত্বে তাদের ওপর হামলা করে। একপর্যায়ে তারা রড দিয়ে পিটিয়ে বাবার মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। অপর তিনজনকে বেধরকভাবে রড দিয়ে পিটিয়েছে।
ইরফান বলেন, আহত সবাই বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় মামলা করা হবে।
নৌকার নির্বাচনি কার্যালয়ে দায়িত্বে থাকা আফজালুল করিম বলেন, ঘটনা শুনেছি। এ ঘটনায় অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনা ঘটেছে। এখনও নির্বাচনি কোনো কার্যক্রম শুরু হয়নি। যারাই জড়িত থাকুক না কেন কঠোরভাবে দমন করা হবে। আমি সেই নির্দেশনা দিয়েছি।
এর আগে গত ৬মে রাত পৌনে একটায় বরিশাল সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর নৌকা প্রতীকের পক্ষে মিছিল করায় মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়কের নেতৃত্বে দুই কর্মীকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে কাউনিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
এর আগে গত ৭ মে কাউনিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন নগরীর ২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের কর্মী মো. সোহাগ। জিডিতে মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইজ আহম্মেদ মান্না ও তার ভাইসহ ১৭ জনের নামসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ১৫ জনের বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র ঠেকিয়ে হত্যার হুমকির অভিযোগ করা হয়।
আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাতের ব্যক্তিগত সহকারী মো. রুবেল রাতে জানিয়েছেন, খোকন সেরনিয়াবাত বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকের কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কর্মীদের দেখতে গিয়েছিলেন।
তবে ঘটনার পরপর মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইজ আহম্মেদ মান্না হামলার কথা অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। গত ৫ দিন ধরে তিনি সিসি ক্যামেরার আওতাভুক্ত রয়েছেন। ঘটনার সময়ের সিসি ক্যামেরা চেক করলে বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, আমার বিরুদ্ধে এখন এই মামলা কেবল রাজনৈতিক প্রতিহিংসা।