প্রকাশ: শনিবার, ১৩ মে, ২০২৩, ৯:১৭ পিএম আপডেট: ১৩.০৫.২০২৩ ৯:২৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
প্রচন্ড গতিতে বাংলাদেশ উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় মোখা। উপকূল দুই উপজেলা খুলনার পাইকগাছা-কয়রা উপজেলার লাখ লাখ মানুষ শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। পাইকগাছায় অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ দ্রুত মেরামতের নির্দেশনা দিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন।
উল্লেখ্য, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখা উপকূলীয় অ লে আঘাত হানতে পারে এমন আশঙ্কায় একদিকে যেমন উপজেলা প্রশাসন সহ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে, তেমনি যে সব এলাকার ওয়াপদার বেড়িবাঁধ অধিক ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে সেসব এলাকার মানুষ শঙ্কিত রয়েছেন। অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের মধ্যে সুন্দরবন সংলগ্ন ইউনিয়ন গড়ইখালীর ১০/১২ নং পোল্ডারের খুদখালী এলাকার ওয়াপদার বেড়িবাঁধটি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। ইতোপূর্বে ফনি, বুলবুল ও আম্ফান সহ প্রায় প্রতিটি প্রাকৃতিক দুর্যোগে খুদখালী এলাকার বাঁধ ভেঙ্গে যায়। এজন্য ঘূর্ণিঝড় মোখা যত ঘনিভূত হচ্ছে এলাকার মানুষের মধ্যে ততবেশি আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। মফিজুল সানার বাড়ী হতে মিজানুর গাজীর বাড়ি পর্যন্ত কয়েক’শ ফুট এলাকা জুড়ে বাঁধের অবস্থা খুবই খারাপ। ওই এলাকার বাসিন্দা বাবুল শেখ জানান, আমরা প্রতিটা মূহুর্ত উদ্বেগ এবং উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছি। এদিকে খুদখালী, বাইনতলা ও আলমতলার ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধের উন্নয়নে ৫০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী আরাফাত হোসেন জানান, আমরা প্রাথমিক কাজ শুরু করেছি, মূল কাজ শুরু করতে একটু দেরি হবে, তবে দুর্যোগ আঘাত হানার সম্ভাবনা দেখলে আমরা দ্রুত বস্তা ডাম্পিং করে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ রক্ষা করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাজু হাওলাদার জানান, ইতোমধ্যে আমার অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ চিহ্নিত করে সেগুলো মেরামতের কাজ শুরু করেছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি সভা করে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ মেরামতের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড সহ সকল ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দিয়েছি। কয়রায় কপোতাক্ষ ও শাকবাড়িয়া নদীসংলগ্ন পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৪/১ ও ১৪/২ পোল্ডারের ৮০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের বেশিরভাগ অংশ দুর্বল ও ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়ায় এখানকার লক্ষাধিক মানুষ চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। এর আগে সিডর, আইলা, আম্পান ও ইয়াসের ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাসে কয়রা এলাকার ৫ ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি জায়গার বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা লোনা পানিতে প্লাবিত হয়ে হয়। একটানা ৩ বছর তলিয়ে থাকায় কয়রার মানুষের ঘরবাড়ি, জমি জায়গা, সহায় সম্পদ, গাছপালা, গবাদি পশু সবকিছু ধ্বংস হয়ে যায়। দক্ষিণ বেদকাশির ইউপি চেয়ারম্যান মোড়ল আছের আলী জানান, যুগ পার হয়ে গেছে; কিন্তু বেড়িবাঁধ মেরামত করা হয় না। মোখা আঘাত হানলে দুর্বল বেড়িবাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বেদকাশি ইউপি চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম বলেন, বেড়িবাঁধের অবস্থা নাজুক, তাই ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে শঙ্কিত এলাকার মানুষ। পাউবোর সাতক্ষীরা জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহনেওয়াজ তালুকদার বলেন, ১৪/১ ও ১৪/২ পোল্ডারের ঝুঁকিপূর্ণ ৩০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে। এগার দিনেও উদ্ধার হয়নি