বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলেও বরগুনার বেতাগীতে অচল সতর্কবাতা প্রচারের উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন পলিফোনিক সাইরেন। এতে ভেস্তে যাচ্ছে সরকারি উদ্যোগ। যা দেখার কেউ নেই।
দেশের উপকূলীয় এ জনপদে দুর্যোগকালীন মহাবিপদ সংকেত বাজিয়ে মানুষকে সতর্কবাতা প্রচারের জন্য এটি স্থ্াপনের দীর্ঘ আট বছরেও চালু না হওয়ায় অকেজো ও অরক্ষিত অবস্থায় পরে রয়েছে। ফলে মোখা সহ ঘূনিঝড়ের সময় মানুষ আতঙ্কে ভূগলেও এটি কোন কাজে আসছে না দেড় লাখ জনসংখ্যা অধ্যূষিত একটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়নের সন্বয়ে গঠিত এ উপজেলা বাসীর।
জানা গেছে, ২০০৭ সালের সুপার সাইক্লোন সিডরে এখানে মানুষের প্রাণ হানির পর সরকার ঘুর্ণিঝড়ের ছোবল থেকে মানুষকে বাঁচাতে এবং মহাবিপদ সংকেতের প্রচারের জন্য ২০১৪ সালের শেষ দিকে দুর্যোগ ও ত্রাণমন্ত্রণালয় তৎকালীণ উপজেলা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের সাথে সেখান থেকে কার্যালয় স্থানান্তরের পর বর্তমানে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের সাথে একটি স্টীলের খুটিতে ছাদে ৬টি ছোট মাইক সম্বলিত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পলিফোনিক সাইরেন স্থাপন করেন।
স্থাপনের সময় সাথে এটি ব্যবহারের জন্য উপকরণ হিসেবে ব্যাটারি ওয়ারলেস সেট সিষ্টেম দেওয়া হয়। ৮ বছর ধরে সেসব মালামাল এখন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ের ফটোমেশিনের কক্ষে অরক্ষিত অবস্থায় তা পড়ে রয়েছে এবং দিন দিন মরিচিকা পড়ে পুরানো হয়ে যাচ্ছে এবং কারা এর দায়িত্বে তাও কেউ সঠিকভাবে বলতে পারছেন না।
সাইরেনটির আওয়াজ ৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত পৌছাতে সক্ষম। কেবলমাত্র ৮নং মহাবিপদ সংকেত দেখা দিলে এই সাইরেনটি বাজিয়ে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়ার জন্য বাজানোর কথা। কিন্ত দূর্যোগ কালীন সময়ে এই সাইরেনটি এখন নিজেই অক্ষমতার রোগে আক্রান্ত হয়ে পরে থাকায় কোন আসছেনা।
অবশ্য বরগুনা জেলা দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা কার্যালয়ের বেতার যন্ত্র চালক বিজন দাস জানান, তিনি যতটুকু জানেন, এটি এখনো হস্তান্তর করা হয়নি। ২০১৩ সালে প্রকল্পটি শুরু হলেও প্রকল্পের শেষ দিকে ২০১৫ সালেও অনেক জায়গায় কাজ করা হয়। ফলে আর কাজটি হস্তান্তর করা যায়নি। দুর্যোগকালীন সময় সংকেত প্রচারে এটি স্থাপন করা হয়েছিল।
সংবাদ মাধ্যম এবং সরকারী ভাবে মোখা সুপার সাইক্লোন সিডরের চেয়েও গতিপথ পরিবর্তন করে ভয়াবহ আকার ধারন করতে পারে এমন আশঙ্কার মাঝেও কোন কাজে আসেনি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এই সাইরেনটি।
দুর্যোগকালীন এখানকার পলিফোনিক এই সাইরেনটি খুবই জরুরী বলে মনে করেন বরগুনা রেড ক্রিসেন্টের আজীবন সদস্য আব্দুস সালাম সিদ্দিকী। ৮নং মহা বিপদ সংকেত প্রচারে এবং মানুষের নিকট সাইরেনের শব্দ পৌছাতে এই পলিফোনিক উচ্চ ক্ষমতাতার সাইরেনটির অতি প্রয়োজনয় বলে দাবি করেন এ উপজেলার যুবরেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা।
বেতাগী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জিএম ওলিউল ইসলাম বলেন, উচ্চ ক্ষমতার এই সাইরেনটি বাজিয়ে মানুষকে ৮নং মাহাবিপদ সংকেত প্রচারের জন্য বসানো হয়েছিল। এটির ক্ষমতা ৩ বর্গকিলোমিটার। বর্তমানে সাইরেনটি অকেজো।
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো:সুহৃদ সালেহীন বলেন, অকেজো সাইরেনটি সারানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।