পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেফতার করেছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় মঙ্গলবার (৯ মে) তাকে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের ভেতর থেকে হেফাজতে নেয় রেঞ্জার্স সদস্যরা। এসময় গুলিতে আহত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর হুইলচেয়ার ছুড়ে ফেলা হয় এবং তাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে ‘অমানবিকভাবে’ গাড়িতে তোলা হয় বলে অভিযোগ করেছে তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)।
পিটিআই’র সহ-সভাপতি ফাওয়াদ চৌধুরী টুইটারে বলেছেন, ইসলামাবাদ হাইকোর্ট রেঞ্জার্সের দখলে। সেখানে আইনজীবীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। ইমরান খানের গাড়ি ঘেরাও করা হয়েছে।
পিটিআই’র অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা যায়, বিপুল সংখ্যক রেঞ্জার্স সদস্য ইমরান খানকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে দ্রুত গাড়িতে তুলছে। আরেকটি ভিডিওতে তার আইনজীবীকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা গেছে।
জিও নিউজের খবর অনুসারে, একাধিক মামলায় জামিনের জন্য হাইকোর্টে গিয়েছিলেন পিটিআই চেয়ারম্যান। সেখান থেকে তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়। তার গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল এনএবি কর্মকর্তাদের কাছে।
জানা গেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে জাতীয় জবাবদিহি অধ্যাদেশ ১৯৯৯-এর ৯এ ধারার অধীনে হেফাজতে নেওয়া হয়।
আল-কাদির ট্রাস্ট মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানির পাঁচ হাজার কোটি রুপি বৈধ করার জন্য কয়েকশ কোটি রুপি নিয়েছেন পিটিআই প্রধান ও তার স্ত্রী।
পিটিআই নেতা আজহার মাশওয়ানি অভিযোগ করেছেন, রেঞ্জার্সরা আদালতের ভেতর থেকে ইমরানকে ‘অপহরণ’ করেছে। এর প্রতিবাদে দলটি তাৎক্ষণিকভাবে দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইসলামাবাদ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. আকবর নাসির খান জানিয়েছেন, রাজধানীজুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
পিটিআই প্রধানকে গ্রেফতারের সময় হাইকোর্টে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার গোহর খান। তিনি অভিযোগ করেছেন, গ্রেফতারের সময় রেঞ্জার্স সদস্যরা সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ‘নির্যাতন’ করেছে।
তিনি পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডনকে বলেছেন, তারা ইমরান খানের মাথা ও পায়ে আঘাত করেছে। গ্রেফতারের সময় পিটিআই চেয়ারম্যানের হুইলচেয়ারটি ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ইমরান ইসলামাবাদ হাইকোর্টের গেট দিয়ে প্রবেশ করার কিছুক্ষণ পরেই আধা-সামরিক বাহিনী এবং সশস্ত্র কর্মকর্তাদের গাড়িবহর ভেতরে ঢোকে।
এর কিছুক্ষণ পরেই পিটিআই নেতা মুসাররাত চিমা টুইটারে এক ভিডিওবার্তায় বলেন, তারা (রেঞ্জার্স) এখন ইমরান খানকে নির্যাতন করছে… তারা খান সাহেবকে মারছে।
পরে আরেক টুইটে ফাওয়াদ চৌধুরীও অভিযোগ করেছেন, ইমরানকে আদালত চত্বর থেকে ‘অপহরণ’ এবং অনেক আইনজীবী ও সাধারণ মানুষকে ‘নির্যাতন’ করা হয়েছে।