প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২ মে, ২০২৩, ৬:০৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় স্বামীর লাশ দাফন করে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে মিম খাতুন (১৬) নামে এক নববধূ।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) ধুনট সরকারি এনইউ পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে মিম বাংলা দ্বিতীয় পত্র বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েছে।
মিম খাতুন ধুনট পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে মানবিক শাখায় পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।
পরীক্ষা কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, উপজেলা সদরের চালাপাড়া চৈতারপাড়ার নায়েব আলীর ছেলে নান্নু মিয়া (৩০) ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফিরে ২৮ এপ্রিল পারিবারিকভাবেই নান্নু মিয়ার সঙ্গে মিম খাতুনের বিয়ে হয়। গত ৩০ এপ্রিল মিম খাতুনের এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। প্রথম দিন স্বামীর সঙ্গে কেন্দ্রে পৌঁছে বাংলা প্রথম পত্র বিষয়ে পরীক্ষা দেয় মিম। এরপর স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে আনারপুর গ্রামে বাবার বাড়িতে যায়। ওই দিন রাত ৯টার দিকে নবদম্পতি বাবার বাড়িতে একটি কক্ষে একই বিছানায় ঘুমিয়ে পড়ে। রাত দেড়টার দিকে ঘুম থেকে জেগে স্বামীকে বিছানায় খুঁজে পায়নি। এ সময় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে ঘরের পাশে গাছের সঙ্গে গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় ন্নানু মিয়ার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়। সংবাদ পেয়ে ১ মে সকালের দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নান্নু মিয়ার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি মো. রবিউল ইসলাম জানান, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে আমরা মৃত্যুর সঠিক কারণ জানাতে পারব। আইনি প্রক্রিয়া শেষে নান্নু মিয়ার লাশ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সোমবার রাতে চালাপাড়া চৈতারপাড়ায় নিজ বাড়িতে নান্নু মিয়ার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
পরীক্ষা শেষে মিম খাতুন জানায়, ওই রাতে একই বিছানায় ঘুমিয়ে ছিলাম। কিন্তু কী কারণে আমার স্বামী আত্মহত্যা করেছে তা সঠিকভাবে বলতে পারছি না। বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা খুব একটা ভালো হয়নি।
এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রসচিব তফিজ উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, স্বামীকে হারানো যে কারো জন্য খুবই কষ্টদায়ক। তারপরও এসএসসি পরীক্ষার্থী মিম স্বামী হারানোর কষ্ট নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। আমরাও তার পরীক্ষার সময় যতটা সম্ভব পাশে থাকার চেষ্টা করেছি।