রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, শ্রমজীবী মানুষের অধিকার, স্বার্থ ও কল্যাণের সঙ্গে মহান মে দিবসের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
মহান মে দিবস উপলক্ষে রোববার দেওয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন তিনি। রাষ্ট্রপ্রধান অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি ‘মহান মে দিবস ২০২৩’ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল শ্রমজীবী মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বিশ্বের সব শ্রমজীবী-কর্মজীবী মানুষের জন্য সংগ্রামী চেতনায় উদ্ভাসিত একটি দিন ‘মহান মে দিবস’।
তিনি আরো বলেন, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিশ্বব্যাপী শ্রমজীবী মানুষের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিল্প ও শ্রমবান্ধব বর্তমান সরকার শ্রমিকের সার্বিক কল্যাণ সাধন ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে।
মো. সাহাবুদ্দিবন বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে উন্নত কর্মপরিবেশ, শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্ক, শ্রমিকের পেশাগত নিরাপত্তা ও সুস্থতাসহ সার্বিক অধিকার নিশ্চিতকরণের কোনো বিকল্প নেই। এ বিবেচনায় মহান মে দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক ঐক্য গড়ি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি’ যথাযথ ও সময়োপযোগী হয়েছে।
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করে গেছেন। স্বাধীনতার পরই মে দিবসকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান এবং ১ মে সরকারি ছুটি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিতে বঙ্গবন্ধু মজুরি কমিশন গঠন করেন এবং শ্রমিকদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা দেন। ১৯৭২ সালে জাতির পিতার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সদস্যপদ লাভ করে এবং আইএলও’র ৬টি কোর কনভেনশনসহ ২৯টি কনভেনশন অনুসমর্থন করে। শ্রমজীবী মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও অধিকার রক্ষায় এ এক অনন্য মাইলফলক।
তিনি বলেন, ১৯৭৩ সালে অলিজিয়ার্সে অনুষ্ঠিত জোট নিরপেক্ষ শীর্ষ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘বিশ্ব আজ দুই ভাগে বিভক্ত, একদিকে শোষক আর অন্যদিকে শোষিত- আমি শোষিতের পক্ষে।’ বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি জাতির অর্থনৈতিক মুক্তির স্বপ্ন দেখতেন। তার সেই স্বপ্নপূরণে শ্রমজীবী মানুষের উন্নয়নে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। এ লক্ষ্য পূরণে শ্রমিক-মালিক সম্প্রীতি ও যৌথ প্রয়াস দেশের উন্নয়নকে আরো বেগবান করবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশের শিল্প ও বাণিজ্যের অগ্রযাত্রার ক্ষেত্রে প্রয়োজন বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ, শ্রমিকের নিষ্ঠা এবং শ্রমিক-মালিকের পারস্পরিক সৌহার্দ্য। শ্রমিক ও মালিকের অংশগ্রহণের মাধ্যমে শ্রমক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা ও উৎপাদনশীলতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, শ্রমজীবী মানুষের অধিকার, স্বার্থ ও কল্যাণের সঙ্গে মহান মে দিবসের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাদের জীবনমান উন্নয়ন এবং ন্যায্য অধিকার রক্ষায় সকলে স্ব স্ব ক্ষেত্রে ঐকান্তিকভাবে দায়িত্ব পালন করে যাবেন।
মহান মে দিবস ২০২৩ উপলক্ষ্যে গৃহীত সব কর্মসূচির সফলতা কামনা করেন তিনি।