প্রকাশ: শনিবার, ১ এপ্রিল, ২০২৩, ৮:৩২ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
শ্রীনগরে কাল বৈশাখী ঝড়ে কৃষকের সূর্যমূখীর ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার রাতে দুই দফায় হয়ে যাওয়া ঝড়-বৃষ্টিতে প্রায় জমিতে সূর্যমূখীর ফুলগাছ সব মাটিতে নুয়ে পড়েছে। এতে উদ্যোক্তারা তেলবীজ উৎপাদণের স্বপ্ন ভঙ্গের দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
শুক্রবার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার আটপাড়া, বাড়ৈগাঁও, বীরতারা, তিনটেক, হাঁসাড়া, আলমপুরসহ বিভিন্ন স্থানে সূর্যমূখীর চাষাবাদ করা হচ্ছে। কাল বৈশাখীর ঝড়ে সূর্যমূখীর ক্ষেতগুলো লন্ডভন্ড হয়েছে। এছাড়া ঝড়ের প্রভাবে এ অঞ্চলের ভুট্রা ও সবজি চাষেও ব্যাপক ক্ষতি শঙ্কা করা হচ্ছে। উদ্যোক্তারা জানান, সূর্যমূখীর ফুলের হলুদ আভায় জমি ঢাকা পরেছিল। এ চাষে আশানুরূপ ফলনের স্বপ্ন দেখা হচ্ছিল। গত কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে হওয়া বৃষ্টি ও বৃহস্পতিবার রাতে কাল বৈশাখী ঝড়ে স্বপ্ন ভঙ্গ হতে যাচ্ছে বলছেন তারা।
বাড়ৈগাঁও গ্রামের মো. জুনায়েদ হোসেন নামে এক ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তা বলেন, কাল বৈশাখীর ঝড়ের প্রভাবে জমির মাটিতে সূর্যমূখী ফুল গাছ হেলে পড়েছে। গাছে অসংখ্য সূর্যমূখীর অপরিপক্ক ফুল নষ্ট হচ্ছে। এগুলো রক্ষার জন্য কি করবো বুঝে উঠতে পারছিনা। তবে সূর্যমূখী ফুলের সৌন্দর্য ও ভালোবাসার টানে বাঁশ-রশি নিয়ে জমিতে যেতে বাধ্য হই। অতিরিক্ত অর্থ দিয়েও প্রয়োজনীয় শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছেনা। এলাকার কয়েকজন শ্রমিকে বুঝিয়ে শুনিয়ে জমিতে কাজ শুরু করি। জমিতে বাঁশের খুঁটি গেড়ে তার সঙ্গে রশি দিয়ে সূর্যমূখীর গাছ বেঁধে দাড় করার চেষ্টা করছি। এখনও অসংখ্য সূর্যমূখীর ফুলসহ গাছ মাটি পরে রয়েছে। এই মূহুর্তে সংশ্লিষ্ট কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগীতা কামনা করছি। তা নাহলে আমার এক একর জমিতে এ চাষ থেকে সূর্যমূখীর তেলবীজ উৎপাদণ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
বীরতারা আমির হোসেন বলেন, কাল বৈশাখী ঝড়ের আঘাতে তার জমিতে অসংখ্য সূর্যমূখী ফুল গাছগুলো ভেঙ্গে পড়েছে। এসব অপরিপক্ক সূর্যমুখীর ফুল থেকে কোন তেলবীজ উৎপাদণের সম্ভাবনা থাকছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে সূর্যমূখীর চাষ সম্প্রসারণের জন্য (তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদণ বৃদ্ধি প্রকল্প) এ চাষের জন্য স্থানীয় কৃষকদের সূর্যমূখী বারি-৩, হাইসান-৩৩ ও হাইসান-৩৬ জাতের প্রয়োজনীয় বীজ ও সার প্রদান করা হয়। প্রতি বিঘা জমিতে ১ কেজি সূর্যমূখীর বীজ বপন করে ৬/৭ মণ তেলবীজ উৎপাদণ হয়ে থাকে। ৯০ থেকে ১১০ দিনে ফসল সংরক্ষণ করা যায়।
আটাপাড়া ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মসিউর রহমান জানান, বাড়ৈগাঁও এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত জুনায়েদ হোসেনের জমিটি দেখেছি। নুয়ে পড়া ফুলগাছ রক্ষার জন্য বাঁশ খুঁটি দিয়ে দাড় করানোর পাশাপাশি জমির পানি নিস্কাশণের জন্য পরামর্শ দিয়েছি।
উপজেলা কৃষি অফিসার শান্তনা রানী জানান, এবার ৫০ বিঘার অধিক জমিতে সূর্যমূখীর চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে পর্যবেক্ষণ করে কাল বৈশাখী ঝড়ে সূর্যমূখীর জমির ক্ষতির চিত্র উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। কোন ধরণের সহযোগীতা আসলে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হবে।