নরসিংদীর রায়পুরা পৌর আওয়ামী লীগ আনুষ্ঠানিকভাবে দলের বহিষ্কারাদেশ থেকে মুক্তি পেলেন রায়পুরা পৌরসভার জননন্দিত নগরপিতা পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ জামাল মোল্লা। তাঁর অনুসারীরা এখন আগের মতো চাঙা হয়ে উঠেছেন।
মোঃ জামাল মোল্লাকে আনুষ্ঠানিকভাবে দলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে—এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে নেতা–কর্মী ও সাধারণ মানুষ গত ১৯ই ফেব্রুয়ারী রবিবারে বিকাল থেকে ভিড় করছেন রায়পুরা পৌরসভার অফিসে। এছাড়া তাঁকে অভিনন্দন ও প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন পোস্ট ও স্ট্যাটাস দিচ্ছেন সমর্থকেরা।
ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থ পরিপন্থী ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে রায়পুরা পৌরসভার নগরপিতা মোঃজামাল মোল্লাকে ক্ষমা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ও দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সই করা এক চিঠিতে এই ক্ষমা করার কথা জানানো হয়েছে।
গত ১৯ই ফেব্রুয়ারী রবিবার দলের চিঠি পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে 'দৈনিক ভোরের পাতাকে মোঃ জামাল মোল্লা বলেন, ‘দল আমাকে ক্ষমা করে সাধারণ সম্পাদক পদটি পূর্ণবহাল করে আবার দলে ফিরিয়ে আনায় আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চির কৃতজ্ঞ। আমি দলের জন্য ও দেশের জন্য কাজ করে যেতে চাই। নরসিংদী-৫ আসনের বার বার নির্বাচিত এমপি ও সাবেক সফল মন্ত্রীর সহযোগিতায় সংসদ সদস্যদের সঙ্গে আলাপ–আলোচনা করে পরবর্তী কার্যক্রম চালিয়ে যাব।’
২০১৬ সালে রায়পুরা পৌরসভার স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হয়েছে বলে অভিযোগ করেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। এর জেরে বিগত ২০১৬ সালে রায়পুরা পৌর আওয়ামী লীগ থেকে সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কার হন দুই দুই বারের জননন্দিত নগরপিতা মোঃ জামাল মোল্লা ।
গতকাল রোববার সকালে রায়পুরা পৌর এলাকায় মো: জামাল মোল্লার বাসভবনে গিয়ে দেখা যায় পুরোনো দৃশ্য। নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা ভিড় করছেন। জননন্দিত নগরপিতাকে দেখতে ও তাঁর মুখ থেকে কিছু শুনতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন তাঁরা। কেউ বাড়ির ফটকে,কেউ পৌরসভায় অবস্থান নিয়েছে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই আছেন, যাঁরা উৎসুক জনতা, তাঁরা এসেছেন ভেতরের পরিবেশ দেখতে। এ সময়ে নেতা–কর্মীদের জননন্দিত নগরপিতা মোঃজামাল মোল্লাকে নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতেও দেখা গেছে। অথচ মোঃ জামাল মোল্লাকে দলীয় পদে বরখাস্ত হওয়ার পর চিত্রটি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন।
রায়পুরা পৌর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলেন, ‘জননন্দিত নগরপিতা মোঃ জামাল মোল্লাকে পছন্দ করতাম, কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্ত হয়েছিল এ জন্য তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি। তবে দল যেহেতু তাঁকে ক্ষমা করে দিয়েছে, এখন তাঁর সঙ্গে চলতে আর কোনো সমস্যা নেই। শুধু আমরা নয়, আমাদের মতো রায়পুরার হাজার হাজার নেতা–কর্মী শুধু দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে তাঁর থেকে দূরে ছিলেন।’
রায়পুরা পৌর আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের পর স্থানীয় নেতা–কর্মীদের অনেকে বলছেন, দলে ফেরানোর পাশাপাশি খুব শিগগির পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদটি ভারমুক্ত করা হয়েছে, যার ইঙ্গিত এরই মধ্যে দিয়েছেন নরসিংদী -৫আসনের বার বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর সঙ্গে আলোচনা করে আগামীতে দল ও স্থানীয় মানুষের জন্য কাজ করে যাবেন।
মোঃজামাল মোল্লাকে সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কারের পর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক করা হয় মোঃ গোলাপ মিয়াকে। দলীয় নেতা–কর্মীরা জানান, মোঃ জামাল মোল্লাকে যখন সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়, তখন রায়পুরা পৌর আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যক্রম থেমে আছে। আমরা খুবই দুর্ভোগের মধ্যে আছি বলে জানান।
রায়পুরা পৌর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা আরও জানালেন, মোঃ জামাল মোল্লা দলে ফেরার খবর পেয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এর চিঠিও দেখেছেন। এখন মোঃ জামাল মোল্লাকে নিয়ে আমরা কীভাবে দলীয় কাজ করবেন জানতে চাইলে নেতাকর্মীরা বলেন, ‘তাঁকে নিয়ে আমাদের কোনো সমস্যা নেই, অন্যান্য নেতাদের মতোই তিনি দলের জন্য কাজ করবেন। দলের কর্মসূচিতেও থাকবেন।’