সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: কর্মোপযোগী শিক্ষার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি সম্ভব   নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়: রাষ্ট্রপতি   নির্বাচনে ২১ সদস্যের মনিটরিং সেল গঠন ইসির   দেশজুড়ে যে তিনদিন মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা!   মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানি ৯ জানুয়ারি   প্রাথমিকের ছুটি বাড়ল ১৬ দিন (তালিকা)   নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিএনপির প্রচারণা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
শখের পোষা পাখি যখন আয়ের উৎস
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশ: শনিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৫:৫৩ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

দ্বিতল বাড়ির ছাদে টিনের ছাউনির ঘর। ঘরের চারপাশ কাঠ ও তারের নেট দিয়ে ঘেরা। খামারের ভেতর কবুতরের পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন জাতের পাখি। পাখির কিচিরমিচিরে বাড়িটি সবসময় মুখরিত থাকে।

বাসার কাছে আসতেই শোনা গেল পাখির কলরব। ছাঁদে গিয়ে আটকে গেল চোখ। সুন্দর পরিচ্ছন্নভাবে সাজানো পাখির খাঁচা।পাখিগুলোর মধ্যে কেউ উড়াউড়ি করছে। কেউবা বানাচ্ছে বাসা। মনোরম সব দৃশ্য দেখতে অনেকে আসছেন পাখির খামারে। পাখিপ্রেমীরা, কিনছেন পাখিও। খামারটি ছাত্রলীগ নেতা তামিমের। ‘পাখি তামিম’ নামে পরিচিত এই পাখিপ্রেমীর।

তামিম হলেন ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল পৌরশহরের বাসিন্দা মো. মোকসেদ আলীর ছেলে। তিন ভাই দুই বোনদের মধ্যে সবার ছোট । ঢাকা  কলেজ থেকে অনার্স মাস্টার্স শেষ করেছেন তিনি।

জানা যায়, পাখির প্রতি ভালোবাসা থেকেই ২০১৪ সালে অনার্সে পড়ার সময় ঢাকার কাঁটাবন একটি পাখির খামার থেকে প্রথম দুটি বাজরিগার পাখি নিয়ে বাসার ছাঁদে একটি খাচায় রাখেন তামিম। পরবর্তীতে সেই পাখি বাঁচ্চা দিলে সেটিকে বড় পরিসরে করার চিন্তা করেন তামিম। ২০১৮ সালের বগুড়া থেকে ১৮ জোড়া পাখি বাসায় কিনে নিয়ে এসে ছাঁদে তৈরী করেন একটি পাখির সেট। পরবর্তীতে পাখিগুলো ডিম দেয়া শুরু করলে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে পাখির সংখ্যা।

পাখির এই খামারটি করতে খরচ হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার মতো। তার এই খামারে প্রতি মাসে খরচ হয় ৩ হাজার টাকা। তামিম তার এই পাখির খামার থেকে ৪ বছরে প্রায় লাখ-খানেক টাকার পাখি বিক্রি করেছেন। পাখিগুলোকে প্রতিদিন কাউন,ভাত,খিচুড়ি,কুসুম দানা,কাঁচা বুট,সবজি এসব খাবার হিসেবে দেওয়া হয়।

বর্তমানে তার খামারে অনেক প্রজাতির কবুতর ও বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৬০ জোড়ার মত পাখি আছে। তারমধ্য নানা প্রজাতির অসংখ্য লাভবার্ড, কাকাতুয়া, ফন্স, ফেনসি, রেসার, বাজরিগার, ককাটিয়েল, গোল্ডিয়ান ফিঞ্চ, টেইল ফিঞ্চ, সিরাজী কবুতর অস্ট্রেলিয়ান ঘুঘু দেশি-বিদেশি কবুতরসহ বিভিন্ন পাখি।

এই যাত্রা খুব সহজ ছিল না তামিমের জন্য। শুরুতেই তিনি পরিবারের বাধার মুখে পড়েছিলেন। তবে সব বাধা ডিঙিয়ে তিনি আজ সফল। শুধু নিজের সফলতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থেকে উপজেলার আগ্রহী অনেক তরুণকেও পথ দেখাচ্ছেন তিনি।

তামিম বলেন, 'ছোট থেকেই পাখির প্রতি খুব মায়া তার। খাঁচার পোষা পাখি লাভবার্ডের সঙ্গে তার যাত্রা শুরু চার বছর আগে। প্রথমে শখ থাকলেও এখন তা আয়ের উৎসে পরিণত হয়েছে। এরপর বাণিজ্যিকভাবে কবুতর ও পাখি পালনের চিন্তা আসে।'পাখির খামারের পাশাপাশি নিজস্ব পুকুরে মাছ চাষ করেন ।

তিনি আরও বলেন, 'অনেক পরিশ্রম করে খামারটি গড়েছি। প্রথমে পরিবারের কেউ চাইত না যে কবুতর পালন করি। কিন্তু, এখন কেউ আর বাধা দেয় না।'

তার মতে, 'অনেকেই পাখি পালনে আগ্রহী হচ্ছেন। অনেকে আমার কাছ থেকে পাখি কিনছেন, পরামর্শ নিচ্ছেন। পরিশ্রম করলে সফলতা আসবেই। অনেকে শুধুই চাকরির পেছনে ছুটছেন। তাদের উচিত চাকরির পেছনে না ছুটে ভালো কোনো কাজে লেগে থাকা।'

ছোট থেকেই পাখির প্রতি ভালোবাসা। সে ভালোবাসা থেকেই পাখির খামার করা। আমি প্রথম অল্প পরিসরে এই খামার করে থাকি। এক সময়ের শখ আজ আমার একটি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। আশা করি আগামীতে আরও বড় পরিসরে করব পাখির খামারটি।

পাখি কিনতে এসেছেন আনারুল ইসলাম সহ বেশ কয়েকজন। তারা বলেন, শুনেছিলাম তামিম ভাইয়ের এই পাখির খামারে বাজরিগার পাখি আছে। তাই নিতে এসেছি। তবে তার পাখির খামারটি দেখে অনেক ভালো লাগলো। অনেক রকমের পাখি আছে এখানে।

রাণীশংকৈল  উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহরিয়ার আজম মুন্না বলেন, 'লেখাপড়ার পাশাপাশি কবুতর ও পাখি পালন করে তামিম স্বাবলম্বী হয়েছেন। তার মতো করে তরুণরা যদি লেখাপড়ার পাশাপাশি এভাবে গবাদি পশু-পাখি পালন শুরু করে, তাহলে দেশে বেকারত্ব কমবে।'



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]