সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: কর্মোপযোগী শিক্ষার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি সম্ভব   নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়: রাষ্ট্রপতি   নির্বাচনে ২১ সদস্যের মনিটরিং সেল গঠন ইসির   দেশজুড়ে যে তিনদিন মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা!   মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানি ৯ জানুয়ারি   প্রাথমিকের ছুটি বাড়ল ১৬ দিন (তালিকা)   নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিএনপির প্রচারণা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
উজার হচ্ছে বন, কাঠ দিয়ে পোড়ানো হচ্ছে ইট
ঝালকাঠি প্রতিনিধি
প্রকাশ: শনিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৫:৪৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

ঝালকাঠিতে হাতে গোনা কটি ছাড়া অধিকাংশ অবৈধ ইট বাটায় জ¦ালানী হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে কাঠ। প্রকাশ্যে কাঠ পোড়ানোর মহড়া চলছে এসব বাটায়। এতে এক দিকে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমান রাজস্ব। উজার হচ্ছে সরকারের সবুজ বনায়ন প্রকল্প ও বনা ল। অন্যদিকে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। এ যেন দেখার কেহ নেই। পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে ম্যাজিষ্ট্রেসি ক্ষমতা পেলেও লোকবল না থাকায় এসব বাটায় তাৎক্ষনিক অভিঝান চালানো সম্ভব না।জেলা প্রশাসন বলছে নেয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা।

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ এ পরিস্কার উল্লেখ আছেঅন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন ব্যক্তি ইটভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানি হিসাবে কোন কাঠ ব্যবহার করতে পারবে না। এক কথায় জ্বালানী কাঠের ব্যবহার নিষিদ্ধ।যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৪ বা ৪ক লঙ্ঘন করে ইট প্রস্তুত বা ইটভাটা স্থাপন, পরিচালনা বা চালু রাখেন তাহলে তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসরের কারাদন্ড বা ২০ (বিশ) লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।এ ছাড়াও ইট ভাটা লাইসেন্সের কোনো শর্ত লঙ্ঘন, এই আইনের অধীন শাস্তিযোগ্য কোনো অপরাধ সংঘটন বা ইটভাটার কারণে তৎসংলগ্ন এলাকায় পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য হুমকির সম্মুখীন হলে জেলা প্রশাসক ইটভাটার কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ, লাইসেন্স স্থগিত ও বাতিলকরার ক্ষমতা রাখেন।

ঝালকাঠি জেলা প্রশাসনের তালিকায় নেই অনেক ইটবাটার নাম। হালনাগাদ ইটবাটার তালিকা না থাকায় সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি। গত ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখ একাধিক বাটায় গিয়ে দেখা যায় হাজার হাজার মন কাঠ এনে বাটার পাশেই মজুদ করা আছে।প্রকাশ্যে একাধিক বাটায় স্বমিল বসিয়ে গাছ কেটে ছেটে পোড়াতেও দেখা গেছে। এখান থেকে সরাসরি কাঠ নিয়ে পোড়ানো হচ্ছে ইট। এসব বাটায় লোক দেখানো কিছু কয়লা রাখা আছে। জানাযায় গ্রামা ল থেকে রেনট্রি, করাই, আম, চাম্বলসহ বিভিন্ন গাছ কেটে ট্রলার ও নৌকায় বাটা মালিকরা এনে ইট পোড়ানোর শুরু করেছে। কিছুলোকে ম্যানেজ করেই প্রকাশ্যে এ অবৈধ কাজ করায় বাটা মালিকরা নিশ্চিন্তে এসব কাজ করছে প্রকাশ্যেই।

মালিক পক্ষের সাথে কথা বলে জানাযায়, ঝালকাঠি শহর ও শহর সংলগ্ন এলাকায়ই বাটা আছে প্রায় ১৫ টি। তবে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ি জেলায় ই্ট বাটার সংখ্যা ৪২ থেকে ৫৫ টি। অনুসন্ধানে জানাযায় ঝালকাঠি জেলায় সরকারি ভাবে অনুমোদিত জিগজাগ (পরিবেশ বান্ধব) বাটা আছে ১০/১৫ টি। বাকি সব গুলো অবৈধ। যদিও পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ি জেলার ৫৫ টি বাটার মধ্যে ২৫ টি জিগজাগ, ২০টি ফিক্সড, বাকি গুলো ড্রাম চিমনির বাটা। ফিক্সড ড্রাম ও চিকনির বাটা সব গুলোই অবৈধ। তবে এর মধ্যেও অধিকাংশ জিগজাগ বাটার লাইসেন্স নবায়ন না করায় সরকারকে রাজস্ব ফাকি এবং কাঠ দিয়ে অবৈধ ভাবে ইট পোড়ানো হচ্ছে। 

কয়লা ছাড়া কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানোর অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে ঝালকাঠির বাসন্ডা ইউনিয়নের আরআরএস ব্রিকসের মালিক পক্ষ মো. রাকিব বলেন, কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো হয়না। এই কাঠ শ্রমিকদের রান্নার জন্য আনা হয়েছে। আমরা কয়লা দিয়ে ইট পোড়াই। আপনার বাটায় কি পরিমান ইট পোড়াতে কত পরিমান কয়লা দরকার জানতে চাইলে রাকিব জানান, সেটা আমার জানা নেই। তিনি বলেন এটা আমার ভাই রাজ্জাক হাওলাদার বলতে পারবেন। রাজ্জাকের মোবাইল নম্বর চাইলে তা তিনি দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। 

এদিকে ঝালকাঠির বাসন্ডার নেছারাবাদ এলাকায় জিকজাক ইট বাটা মেরী ব্রিকসের মালিক সহিদ জমাদ্দার বলেন, আমি কয়লার দাম বৃদ্ধি পেলেও কয়লা দিয়ে বৈধ ভাবে ইট পোড়াচ্ছি প্রতি বছর। এ বছর কয়লার দাম অত্যাধিক বেড়ে যাওয়ায় লাভ কম হবে। কিন্তু যারা অবৈধ ভাবে কোন অনুমতি ছারাই কাঠ দিয়ে ইট পোড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখছিনা। একই জেলায় আমি সরকারকে রাজস্ব দিয়ে ইট পোড়ালেও অনেকেই রাজস্ব ফাকি দিয়ে ইট তৈরী করছে। এটা দুঃখজনক। 

এ বিষয়ে বরিশাল বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল হালিম জানান, ঝালকাঠি জেলায় ৫৫ টির মধ্যে কিছু সংখ্যক বাটায় অবৈধ ভাবে ইট পোড়ানো হচ্ছে। আমি গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ম্যজিষ্ট্রেসি ক্ষমতা পেয়েছি। তাই পর্যায় ক্রমে এদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে পারব। কবে নাগাদ এটা হতে পারে জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন ১ মাস পরে। এ সময়ের মধ্যে ইট পোড়ানো শেষ হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমার লোকবল কম। তাই বরিশাল বিভাগ সামলাতে হচ্ছে আমাকেই। জিগজাগ ছাড়া সব ইট বাটা অবৈধ বলেও তিনি জানান। 

ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ফারহ্ াগুল নিঝুম এ প্রসঙ্গে বলেন, ঝালকাঠিতে সকল অবৈধ বিষয়ের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলমান আছে। অবৈধ ইটভাটায়ও অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সকল ইটভাটায় অভিযান চালানো হবে। অবৈধ ইটভাটা ঝালকাঠিতে থাকতে দিবো না। যারা কাঠ দিয়ে ইট পোড়াবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।  এবিষয়ে তথ্য দিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানান তিনি।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]