কক্সবাজার কলাতলির অধিকাংশ হোটেল মোটেল গুলো মাদক,পতিতাবৃত্তি ও মৃত্যু কুপে পরিণত হয়েছে। দিন দিন এই জোনে নানান অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ই চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় হোটেল-মোটেল জোনের আবাসিক হোটেল কক্ষ থেকে পর্যটক মা ও শিশু সন্তানের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে; ঘটনার পর থেকে দুই সন্তানকে নিয়ে স্বামী পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।
শুক্রবার দুপুর আড়াইটায় কলাতলী এলাকার আবাসিক হোটেল সী আলিফ থেকে মৃতদেহ দুইটি উদ্ধার করা হয় বলে জানান পুলিশের কক্সবাজার সদর সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. মিজানুর রহমান।
নিহতরা হল- সুমা দে (৩৬) চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার নাথপুরা এলাকার শচিন্দ্র দের মেয়ে এবং তার আট মাস বয়সী এক মেয়ে শিশু সন্তান। ঘটনার পর থেকে স্বামী জেমিন বিশ্বাস পলাতক রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
হোটেল সী আলিফের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মোহাম্মদ ইসমাঈল বলেন, গত মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তিন শিশুসহ সুমা দে ও জেমিন বিশ্বাস হোটেলের ৪১১ নম্বর কক্ষে উঠেন। তারা ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হোটেল অবস্থানের কথা বলে কক্ষটি ভাড়া নেন।
" বেলা সাড়ে ১১ টায় হোটেল কক্ষটি ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে জেমিন বিশ্বাসের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে চেক আউট করতে হোটেলের এক কর্মচারি কক্ষটিতে যান। এসময় বাহির দরজা খোলা পেয়ে ভিতরে মা ও শিশু সন্তানকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। পরে ঘটনার ব্যাপারে পুলিশকে অবহিত করা হয়। " তিনি আরও জানান, তিন শিশু সন্তানসহ হোটেল কক্ষে অবস্থান করলেও ঘটনার পর থেকে দুই সন্তানকে নিয়ে স্বামীর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান এএসপি মো. মিজানুর রহমান।
এদিকে কক্সবাজারের সচেতন মহল বলেন, কক্সবাজার কলাতলির অধিকাংশ হোটেল মোটেল গুলো মাদক,পতিতাবৃত্তি ও মৃত্যু কুপে পরিণত হয়েছে। দিন দিন এই জোনে নানান অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ই চলছে। এখানে প্রশাসন এর পাশাপাশি হোটেল কর্তৃপক্ষ ও নেতৃবৃন্দের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।
হোটেল কর্তৃপক্ষের বরাতে মিজানুর বলেন, কক্সবাজার শহরের আবাসিক হোটেল সী আলিফের একটি কক্ষে দুই পর্যটকের মৃতদেহ পড়ে থাকার খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে। পরে হোটেলটির চতুর্থ তলার ৪১১ নম্বর কক্ষ থেকে মেঝে ও খাটের উপর পড়ে থাকা অবস্থায় এক গৃহবধূ এবখ আনুমানিক আট মাস বয়সী এক মেয়ে শিশুর মৃতদেহ পাওয়া যায়।
হোটেল কক্ষটির দরজা বাহির থেকে খোলা অবস্থায় ছিল। নিহতদের শরীরে কোন ধরণের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শ্বাসরোধ করে দুইজনকে হত্যার পর স্বামী পালিয়ে গেছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এএসপি বলেন, "কি কারণে এ খুনের ঘটনা ঘটেছে পুলিশ এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা, স্বামী অপর দুই সন্তান নিয়ে পলাতক থাকায় দাম্পত্য কলহের জেরে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।"
এদিকে ঘটনার পর কক্সবাজার সদর থানার পুলিশ ছাড়াও সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট এবং ট্যুরিস্ট পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।