সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের ২য় বর্ষের এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে সোহরাওয়ার্দী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুল ইসলাম আশিক ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হলেন ছাত্রলীগের কর্মী সাদিয়া খন্দকার।
এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর সূত্রাপুর থানায় জিডি করতে গেলে বর্তমান সাধারণ সম্পাদকের নাম বাদ দিয়ে জিডি করতে বলে। এতে বাধ্য হয়ে ছাত্রলীগ কর্মী রাকিবুল হাসান রাকিবের বিরুদ্ধে জিড়ি করে।
ভুক্তভোগী সাদিয়া খন্দকারের করা জিডি থেকে জানা যায়, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) কলেজ ক্যাম্পাসের ছাত্র সংসদের সামনে সাদিয়া রাকিবকে তাকে উত্যক্ত করার কারণ জিজ্ঞেস করলে মো. রাকিবুল হাসান রাকিব সাদিয়ার ওড়না ধরে টান দেয়। পরে অভিযুক্ত রাকিব ভুক্তভোগী সাদিয়ার স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। বাঁধা দিলে তাকে মারধর করা হয়। পরে তার সহপাঠীরা তাকে সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।’
তবে বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছেন সোহরাওয়ার্দী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুল ইসলাম আশিক।
আশিক বলেন, ‘ও আমার ছোট বোন হয়। ওদের নিজেদের মধ্যে ঝামেলা ছিল। আমি মিটিয়ে দিয়েছি। পরে যখন মারামারি ঘটনা হয় তখন আমি ছাত্র সংসদে ছিলাম না। পরে সে থানায় মামলা করে। আমি বিষয়টির সাথে যুক্ত নই।’
এদিকে ভুক্তভোগী সাদিয়া খন্দকার বলেন, ‘আমাকে এক ঘন্টার বেশি কলেজ ছাত্র সংসদের মধ্যে রেখে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে। পরে ওয়াশরুমে যাওয়ার কথা বলে আমি হাসপাতালে যাই চিকিৎসা নিতে। আমাকে জীবন নাশের হুমকি দিয়েছে আশিক ভাই। আমি নিরাপত্তার জন্য থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি।’
কিন্তু সূত্রাপুর থানায় আশিক ভাইয়ের নাম বলায় মামলা নিচ্ছিল না। পরে অনেক অনুরোধের পর তার নাম না লিখে জিডি নিয়েছে।
সাদিয়া বলেন, ‘আমাকে শারীরিকভাবে অনেক নির্যাতন করেছে ওরা। আমি এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছি। আমাকে সংসদের ভেতরে ধরে নিয়ে গেলে মারধরের পর আশিক ভাই বলে এসব বিষয় কাউকে বললে আমাকে মেরে ফেলবে। এক ফোঁটাও বলা যাবে না। দেয়ালের বাহিরে গেলে তোমাকে মেরে ফেলবো। আমাকে অনেক ধরনের থ্রেট দিছে। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি। আমাকে যখন মারতেছিল তখন সেই ভিডিও ধারণ করেছিল কলেজের রবিউল ভাইয়া। তিনি কলেজ ছাত্রলীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট। তাকে চড় থাপ্পড় মেরে পরে তার মোবাইল থেকে ভিডিওগুলি ডিলিট করিয়েছে।’
এই ভুক্তভোগী বলেন, ‘তারা আমাকে অনেকবার কুপ্রস্তাব দিয়েছে। আমি রাজি হয়নি। এ দিন আমাকে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে যায়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল ধর্ষণ করা। রাকিব টেনে নিয়ে যাচ্ছিল মৃত্তিকা ডিপার্টমেন্টের ভেতরের দিকে।’
সাদিয়া বলেন, ‘আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ভাই ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান ভাই এর কাছে সুষ্ঠ বিচার চাই। আমি অনেক নিরাপত্তাহীনায় ভুগতেছি। তারা যে কোনো সময় আমার ক্ষতি করতে পারে।’
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও পাওয়া যায় নি। পরে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পাঠালেও কোন মন্তব্য দেন নি।