প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৪:৪৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শীতের হিমেল হাওয়ায় চলতি মৌসুমে বোরো আবাদের কর্মযজ্ঞে ব্যস্ত কিষাণ ও কিষানীরা। বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে চলছে বোরোর আবাদ। শীতকে উপেক্ষা করে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলছে আবাদ। পুরুষ শ্রমিকের পাশাপাশি নারী শ্রমিকরাও সমানতালে মাঠে সরব। এ কাজে একজন পুরুষ শ্রমিকের দৈনিক মজুরী ধরা হচ্ছে ৫শ’ টাকা।
অন্যদিকে একজন নারী শ্রমিককে পারশ্রমিক দেওয়া হচ্ছে ৩-৪শ’ টাকা করে। যদিও পারিশ্রমিকের দিক থেকে বিবেচনায় এখনও বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন নারীরা। তার পরেও জীবন যুদ্ধে জীবিকার তাগিদে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। ইতোমধ্যে ৫২ ভাগ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে আবাদে তেমন সমস্যা হবে না বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তর সুত্রে জানা গেছে, এবারের বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫১ হাজার ১’শ ৫০ হেক্টর এবং ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজার ৩৬৩ মেট্রিক টন। তবে, গত বছর এ মৌসুমে ৫০ হাজার ২’শ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছিল। এরমধ্যে সদর উপজেলার ১২,৮০০ হেক্টর জমির বিপরীতে চাষাবাদ হয়েছে ৮,২৯০ হেক্টর জমিতে, গোমস্তাপুরে ১৫,৪২০ হেক্টরের বিপরীতে ১২,১৭০ হেক্টর জমিতে, নাচোলে ৯,৯৭০ হেক্টরের বিপরীতে ৬,৩৪০ হেক্টর, শিবগঞ্জে ৭,০০০ হেক্টরের বিপরীতে ৫,২৯০ হেক্টর ও ভোলাহাটে ৫,৯৬০ হেক্টর জমির বিপরীতে ৫,৩০০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হয়েছে। সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের ঠাকুর পলশা কালুপুর ও নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের এলাকা গিয়ে দেখা যায়, কেউ কেউ ট্রাক্টর, ট্রলি দিয়ে জমির নিবিড় পরিচর্যা করে বোরোর আবাদ করছেন কৃষাণ ও কৃষানীরা।
গোবরাতলার কৃষক শাহালাল ও নেজামপুরের দুলাল হোসেন জানান, আমন ধানের ফলন এবং ধানের দাম ভাল হওয়ায় এবার তারা বোরো ধানের আবাদ শুরু করেছে। বিঘা প্রতি জমি কাদা করতে ট্রলির ভাড়া ১২০০ টাকা এবং গভীর নলকূপে সেচের খরচ ১৬’শ টাকা করে নিচ্ছে। চারা রোপণে ১ জন পুরুষ শ্রমিকের দৈনিক মজুরী দিতে হচ্ছে ৫শ’ টাকা এবং সেই সাথে খাবারও দিতে হয়। অন্যদিকে ১জন নারী শ্রমিককে পারশ্রমিক দেওয়া হচ্ছে ৩’শ থেকে ৪’শ টাকা করে। সারের দাম সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। কৃষকরা বলছেন, এ ধান আবাদে খরচও বা তাতে সমস্যা নেই। তবে কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে এবারে বোরো ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার জানান, বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬ হাজার হেক্টর বেশী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া ও পরিবেশ অনুকূলে থাকলে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে এবার। এজন্য কৃষি বিভাগ থেকে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া বাজারে ধানের দাম ভাল থাকায় কৃষকরা বোরো আবাদের পাশাপাশি ভূট্টা ও সরিষাসহ অন্যান্য ফসল চাষাবাদ করেছে। কৃষি উপকরণের দাম সহনীয় থাকায় কৃষকদের তেমন কোন সমস্যা হবে না এবং ফেব্রুয়ারীর শেষ ভাগ পর্যন্ত আবাদ চলবে।