প্রকাশ: শনিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩, ৯:১০ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
খুলনার পাইকগাছায় চিংড়ি ঘেরের কারনে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কোটি কোটি টাকার সরকারি রাস্তা। পৌরসভা সহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে যেসব সরকারি রাস্তা রয়েছে চিংড়ি ঘের মালিক বাঁধ হিসাবে ব্যবহার করছে। আর নষ্ট হচ্ছে চলাচলের সরকারি সকল রাস্তা। সরকারিভাবে রাস্তাগুলো সংস্কার করা হলেও কাজের স্থায়ীত্ব আসছে না ঘেরের কারনে। ফলে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ টাকার সরকারি সম্পদ নষ্ট হচ্ছে। সরকারি এসব রাস্তা সংরক্ষণে চলতি মাসে উপজেলা পরিষদের মাসিকসভা ও আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় নেওয়া হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ঘের মালিকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে মর্মে সতর্ক করে ঘের মালিকদের নোটিশ প্রদান করেছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌঁশল অধিদপ্তর এলজিইডি কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, আশির দশক থেকে উপজেলায় লবণ পানির চিংড়ি চাষ হয়ে আসছে। বর্তমানে পৌর সদর সহ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে চিংড়ি চাষ হচ্ছে। বেশীরভাগ ঘের মালিকরা ঘেরের পাশের সরকারি রাস্তাকে সীমানা বাঁধ ও রিং বাঁধ হিসেবে ব্যবহার করছে। চিংড়ি ঘের বছরের বেশীর ভাগ সময়ে পানিতে তলিয়ে থাকে। ফলে বাতাসে পানির চাপে ঘেরের পাশের রাস্তাগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। কোথাও কোথাও রাস্তার পিচ, ইট, বালি ভেঙ্গে ঘেরে চলে যাচ্ছে। রাস্তাগুলো সরু হয়ে চলাচলে অনুপযোগী হচ্ছে। ফলে একদিকে যেমন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সরকারি রাস্তা, অপরদিকে ঘন ঘন সংস্কার করে অপচয় হচ্ছে বিপুল পরিমাণ সরকারী অর্থ। পাশাপাশি যাতায়াতে দুর্ভোগ বাড়ছে সাধারণ মানুষের। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা পরিষদের মাসিক সাধারণসভা ও আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বরের সভায় কোন ঘের মালিকরা বাঁধ হিসেবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, এলজিইডি, ত্রাণ বিভাগ সহ সরকারি ও বেসরকারিভাবে নির্মিত কোন সড়ক বা রাস্তা ব্যবহার করতে পারবে না মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। পরিষদের এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিয়েছেন স্থানীয় সরকার, প্রকৌঁশল অধিদপ্তর এলজিইডি কর্তৃপক্ষ। এলজিইডি’র পক্ষ থেকে রাস্তার পাশের সকল ঘের মালিকদের নোটিশ দিয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌঁশলী হাফিজুর রহমান খান জানান, সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে ঘের মালিকদের নোটিশ দিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। নোটিশ পাওয়ার পর যারা ঘেরের বাঁধ হিসেবে সরকারি রাস্তা ব্যবহার কিংবা ক্ষতি করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম জানান, চিংড়ি ঘেরের কারনে প্রতিবছর অসংখ্য সরকারি রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। অপচয় হচ্ছে বিপুল পরিমাণ সরকারি অর্থ। উপজেলা পরিষদের মাসিক সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ঘের মালিকদের ৫ ফুট পর্যন্ত মাটি ভরাট করে সরকারী রাস্তা সুরক্ষিত রাখার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সরকারি সম্পদ সংরক্ষণ করা প্রতিটি নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব এবং কর্তব্য। এ ধরণের কাজে প্রশাসনের পাশাপাশি সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। যারা নির্দেশনা অমান্য করে সরকারি রাস্তা যথা ইচ্ছা ব্যবহার করে ক্ষতি করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।