প্রকাশ: শনিবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৩, ৮:৫৩ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
বঙ্গবন্ধু মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ নামে দেশকে বিশে^র মানচিত্রে তৈরী করেছিলেন। তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন সোনার বাংলা, যেখানে থাকবে না ক্ষুধা আর দারিদ্র। তার সে স্বপ্ন পূরণে তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পরপরই তাঁর প্রথম অনুভূতিতে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের মুল স্রোতধারায় নিয়ে আসতে আশ্রয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
তৃতীয় মেয়াদে ২০১৪ সালে সরকার গঠনের পর দেশের সকল মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষে, দারিদ্র ও ক্ষুধামুক্ত, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ও সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়কে অগ্রাধিকার প্রদান করা হয়। একই সাথে জনগণের দোরগোড়ায় ডিজিটাল সেবা পৌঁছানো, নারীর ক্ষমতায়ন, আশ্রয়ণ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছানো, পরিবেশ সুরক্ষা ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দশটি বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
বিশেষ উদ্যোগের মধ্যে একটি উদ্যোগ আশ্রয়ন প্রকল্প। এরপর শুরু হয় এর যাত্রা, দেশের প্রতিটি প্রান্তে এর ছোঁয়া লাগে। আর প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাল্টে দিয়েছে ভূমিহীনদের জীবনের গল্প। এই ঘর অনেকেরই জীবন পরিবর্তনের প্রধান অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করছে। মাথা গোঁজার নিজস্ব ঠিকানায় অনেকেই অনেক কিছু করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি বদলে ফেলেছেন দৈনন্দিন জীবনযাত্রা। বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহানুভবতায় দেশের গৃহহীন ও ভূমিহীন লাখ লাখ মানুষের জন্য ২ শতাংশ খাসজমির উপর সেমিপাঁকা ঘর নির্মাণ করে উপহার দিয়েছেন।
তারই ধারাবাহিকতায় এই প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫টি উপজেলায় পর্যায়ক্রমে ৪৮১৯ টি গৃহ নির্মাণ করা হয়। জানা গেছে, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ১ম পর্যায়ে জেলার ৫টি উপজেলায় ১৩১৯ টি গৃহ নির্মাণ, ২য় পর্যায়ে ২৬১৯ টি গৃহ নির্মাণ, ৩য় পর্যায়ে ৬৫১ টি গৃহ নির্মাণ করার পর তা উপকারভোগী পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। স্বপ্নের মতো পাওয়া সেই সব ঘরে বসবাস করে অনেকেই তাদের জীবন পরিবর্তনের গল্প আবার নতুন করে শুরু করেছেন। আর ৪র্থ পর্যায়ে নতুন করে বরাদ্দ পাওয়া ৩টি উপজেলায় ২৩০টি গৃহ নির্মানের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। গৃহ নির্মাণ কাজ শেষ হলে তা উপকারভোগী পরিবারের মাঝে হস্তান্তর করা হবে। এসব আশ্রয়ন প্রকল্পের গ্রাম এখন আর গ্রাম নয়, এখন শহরের মত সুবিধা পেতে শুরু করেছে। আর গড়ে উঠেছে ছিম-ছাম ও মনোরম পরিবেশে গড়ে উঠেছে এক একটি আশ্রয়ন পল্লী।
এদিকে আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দাদের ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে বিভিন্ন উচ্চ ফলনশীল সবজির বীজ, চারা, গবাদিপশুসহ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা প্রদান করা হয়। এসব মানুষগুলো নিজেদের স্থায়ী বাসস্থানে বসবাসের পাশাপাশি সৃজনশীল কর্মের মাধ্যমে নিজেদের জীবনের ফেলে আসা দুঃখময় গল্পকে পরিবর্তন করে নতুন জীবনের গল্প লেখা শুরু করতে পারবেন। অনেকেই বিভিন্ন সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর পাশাপাশি আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন।
জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন বলেন, প্রধানমন্ত্রী মুলস্রোতধারায় নিয়ে আসতে নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারই এই সব মানুষের জীবনের বড় অনুপ্রেরণা। এই ঘরগুলো পাওয়ায় একটি ছিমছাম ও সাজানো জীবন ফিরে পেয়েছে। এছাড়া বরাদ্দ পাওয়া ৩টি উপজেলায় ২৩০টি গৃহ নির্মানের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এসব গৃহ উপকারভোগীরা পাবেন। নতুন করে জীবনে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে আগামীতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে।