প্রকাশ: শুক্রবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৩, ৯:০২ পিএম আপডেট: ২০.০১.২০২৩ ৯:০৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
চাবাগান অধ্যুষিত পাহাড়-টিলা-হাওরের জেলা মৌলভীবাজারে জেঁকে বসেছে শীত। এবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নামল ৫.৬- এর ঘরে।
আজ শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) সকালে চলতি মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ৫.৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। গতকাল যা ছিল ৬.৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস। গত কয়েকদির ধরেই এ জেলায় তাপমাত্রা ছিল নিম্নগামী, এতে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি এ অ লে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ২ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এর পর ২০১৪ সালে ১ ফেব্রুয়ারি সর্বনি¤œ ৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলস্থ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান জানান,কুয়াশা ও মেঘ কেটে যাওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়ে গেছে। আজ সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলার উপর দিয়ে বইছে শৈত্য প্রবাহ। এটি চলতি মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। তিনি জানান,আবহাওয়ার এ অবস্থা আরও কয়েক দিন থাকতে পারে, এ অ লে মূলত জানুয়ারি মাস থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত শীতের তীব্রতা বেশি থাকে।
জরেজমিন দেখা গেছে, শৈত্য প্রবাহের কারনে সূর্যের ঝলমল আলো থাকলেও জেলা জুড়ে বইছে তীব্র হিমেল হাওয়া, তাই বিকেল থেকে ভোর পর্যন্ত শীতের তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। এতে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া এসময় কেউই ঘর থেকে বের হচ্ছেন না, টানা কয়েক দিন থেকে শীতের এমন তীব্রতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এখানকার জনজীবন। সময়মতো কাজে যোগ দিতে না পেরে সীমাহীন দুর্ভোগে আছেন শ্রমজীবি-দিনমজুররা। দুর্ভোগে পড়েছেন কৃষক আর ছিন্নমূল মানুষও। পাশাপাশি গবাদিপশু নিয়েও মানুষ পড়েছে বিপাকে। পশুর গায়ে ছেঁড়া বস্তা আর কাঁথা দিয়ে চলছে শীত নিবারণের চেষ্টা। শীতের প্রকোপে বেড়েছে নানা শীতজনিত রোগও। গরম কাপড়ের দোকানে তাই নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের ভিড়-ই সবচেয়ে বেশি।
মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সামছুদ্দিন আহমদ জানান, শীতের কারণে বোরো ধানের বীজতলায় চারা বাড়তে দেরি হচ্ছে। কৃষকরা শীতের কারণে মাঠে যেতে পারছেন না। শীত ও ঘন কুয়াশা দীর্ঘস্থায়ী হলে ধানে চিটা হতে পারে।
মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুরর্শেদ জানান, অন্য সময়ের তুলনায় এখন শীতজনিত রোগে প্রতিদিন জেলার সরকারি- বেসরবারি হাসপাতালে শিশু ও বয়স্কদের ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান জানান, এ জেলায় মোট বরাদ্দ এসেছে ৩৫ হাজার ২ শত ৮০টি কম্বল। ইতোমধ্যে এ কম্বলগুলো জেলার ৭টি উপজেলার ছিন্নমূল, দিনমজুর ও অসহায় মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। তবে আরও কম্বল বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।