জেসিন্ডা আরডার্ন বলেন, ‘আমি জানি, এ সিদ্ধান্তের পর অনেক আলোচনা হবে। সিদ্ধান্তের পেছনের তথাকথিত সত্যিকারের কারণ নিয়ে কথা হবে।’
তিনি বলেন, তিনি প্রায় ৬ বছর প্রধানমন্ত্রীর কঠিন দায়িত্ব সামলেছেন। তিনি একজন মানুষ। রাজনীতিবিদেরা মানুষ। তাঁরা যত দিন পারেন, তত দিন সবটুকু দিয়েই কাজ করেন। তারপর সময় হলে সরে দাঁড়ান। এখন তাঁর সরে দাঁড়ানোর সময় হয়েছে।
জেসিন্ডা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব কঠিন হওয়ার কারণে তিনি পদত্যাগ করছেন না। তিনি বিশ্বাস করেন, অন্যরা তাঁর চেয়ে আরও ভালো কাজ করতে পারেন।
আগামী ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জেসিন্ডা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেবেন। তার আগে তাঁর দল জেসিন্ডার উত্তরসূরি নির্বাচন করবে। নিউজিল্যান্ডের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির পরবর্তী নেতা নির্বাচনে আগামী রোববার ভোট হবে।
আগামী ১৪ অক্টোবর নিউজিল্যান্ডে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়লেও জেসিন্ডা নির্বাচন পর্যন্ত পার্লামেন্টের সদস্য থাকবেন।
পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টি আবার জয় পাবে বলে জেসিন্ডা আশা প্রকাশ করেছেন।
২০১৭ সালে প্রথম নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হন জেসিন্ডা। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ৩৭ বছর। তিনি বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিউজিল্যান্ডের দায়িত্ব নেন।
প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ২০১৮ সালে মেয়েশিশুর জন্ম দিয়ে আলোচনায় আসেন জেসিন্ডা। শিশু কোলে নিয়ে তিনি জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর পর জেসিন্ডা বিশ্বের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী, যিনি সরকারপ্রধানের পদে থাকা অবস্থায় সন্তানের জন্ম দেন।
২০১৯ সালের মার্চে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরের দুটি মসজিদে মুসল্লিদের ওপর এক বন্দুকধারী নির্বিচারে গুলি চালান। গুলিতে ৫০ জন নিহত হন। আহত ৪২ জন। এই হামলা পুরো নিউজিল্যান্ডকে বদলে দেয়। জেসিন্ডা শক্ত হাতে পরিস্থিতি সামাল দেন।
ক্রাইস্টচার্চে হামলার পরবর্তী সময়ে বলিষ্ঠ ভূমিকা দেশে-বিদেশে জেসিন্ডার জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে দেয়। একই সঙ্গে করোনা মহামারি সফল ব্যবস্থাপনার জন্য তিনি প্রশংসিত হন। এসব কারণে ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী পদে পুনর্নির্বাচিত হন তিনি। তাই মেয়াদ পূর্তির আগেই বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় সরকারপ্রধান জেসিন্ডার আকস্মিক পদত্যাগের ঘোষণা অনেকেই অবাক করেছে।