নোয়াখালীর সদর উপজেলায় এক পোলিং এজেন্টকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখলেন জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মেসবাহ উদ্দিন। বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে উপজেলার নোয়াখালী ইউনিয়নের পশ্চিম চড় উড়িয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, পশ্চিম চড় উড়িয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে কেন্দ্রে নোয়াখালী ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার প্রার্থীর (তালগাছ পপ্রতীক) পোলিং এজেন্টের দায়িত্ব পালন করছিলেন মো: সেলিম। এ সময় এক নারী ভোটারকে ইভিএম এ ভোট দেওয়ার পদ্ধতি দেখিয়ে দেওয়ার অভিযোগে জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মেসবাহ উদ্দিন সেলিমকে স্কুলের পিলারের সঙ্গে বেঁধে রাখেন।
মো. মেসবাহ উদ্দিন বলেন, নির্বাচনে অনিয়ম করলেই শাস্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মাত্র একজনকে বেঁধে রেখেছি। আপনারা সাংবাদিক যারা আছেন তারা ছবি তোলেন ও সংবাদ করেন। যারা অনিয়ম করতে করতে চায় এটা তাদের জন্য একটা ম্যাসেজ।
দড়ি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় মো. সেলিম বলেন, ইভিএম নতুন পদ্ধতি। গ্রামের নারীরা কখনো ইভিএম দেখেনি, ভোটও দেয়নি। আমি তাদের দেখিয়ে দিয়েছি। আমাকে এভাবে বেঁধে রাখার চেয়ে মেরে ফেললে ভালো হতো। ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়েছে।
নোয়াখালীর মানবাধিকার কমিশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এ বি এম কামাল উদ্দিন বলেন, এভাবে প্রকাশ্যে বেঁধে রাখা মানবাধিকার লঙ্ঘন। তিনি দোষী হলে শাস্তির ব্যবস্থা আছে। কিন্তু এভাবে বেঁধে রাখা ঠিক হয়নি।
তালগাছ প্রতীকের প্রার্থী জোছনা বেগম বলেন, যারা বুঝেনা তাদের এভাবে দেখিয়ে দিচ্ছে। এটা ভোটারদের সুবিধার জন্য। কিন্তু একটা মানুষকে এভাবে বেঁধে রাখার কোনো মানে হয় না। আমি অনেকবার বলেছি, আমার কথা শুনছে না নির্বাচন কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সদর উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জুলকার নাঈম বলেন, আমি বিষয়টা মাত্র জেনেছি। দ্রæতত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।
কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বাধন খুলে দিচ্ছি।
উল্লেখ্য, নোয়াখালীর সদর উপজেলার ৩টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৩৫ জন, সাধারণ সদস্যপদে ৯৫ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্যপদে ৬০ জনসহ মোট ১৯০ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। ৩৮টি কেন্দ্রের ২৫৯টি বুথে ইভিএমে বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ হচ্ছে। ধর্মপুর ইউনিয়নে ৩১ হাজার ৭৫৬ জন, নোয়ান্নই ইউনিয়নে ২৫ হাজার ৮০৯ জন ও নোয়াখালী ইউনিয়নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন ২৬ হাজার ৫৭৫ জন ভোটার।