প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২২, ৯:১৩ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
সুন্দরবনে আবারো শুরু হয়েছে বনদস্যুদের তৎপড়তা। মুক্তিপনের জন্য করছে জেলে অপহরণ, জেলে বহরে হামলা মারধর ও লুটপাট। নয়ন বাহিনী নামের ১৭ সদস্যের একটি দস্যুগ্রুপ এরই মধ্যে ১১ জেলেকে অপহরণ করে দস্যু বাহিনী। ৭দিন পর মুক্তিপন দিয়ে ছাড়া পায় তারা। ফলে জেলেদের মধ্যে ছড়িয়ে পরছে আতংঙ্ক। দ্রুত সদ্যুদের নির্মুল করতে না পারলে দিন দিন বাড়তে থাকবে উপকুলে দস্যুদের রাজত্ব। ফলে সুন্দরবন থেকে মুখ পিড়িয়ে নিবে বনের উপর নির্ভরশীল জেলে মহাজনরা। প্রশাসন বলছে, জেলেদের নিরাপত্তা ও সুন্দরবন দস্যুমুক্ত করতে র্যাব, কোস্টগার্ড ও পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
পুলিশ সুত্রে জানায়, সর্ব শেষ ৬টি বাহিনীর ৫৪ জন বন দস্যুর আতœসমর্পনের মধ্যদিয়ে দীর্ঘ ৪০ বছরের গোটা সুন্দরবনের জেলেদের উপর দস্যুবিত্ততার সমাপ্তি ঘটে। আর সেই আতœসমর্পনের মধ্য দিয়ে ২০১৮ পয়েলা নভেম্বর সুন্দরবনকে দস্যু মুক্ত ঘোষনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রত্যাশা ছিলো সুন্দরবনে থাকবেনা ভয়ংকর দস্যুদের নিষ্ঠুরতা। জেলেরা থাকবে নিরাপদ আর তাদের পরিবার থাকবে নিশ্চিন্তে। এমন প্রত্যাশা কে চ্যালেঞ্জ দিয়ে আবারও সুন্দরবনে দস্যুতা শুরু করেছে নতুন আর্বিভাব হওয়া নয়ন বাহিনী। নতুন করে তাদের কাছে জিম্মি হচ্ছে জেলেরা। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, এখনই নির্মুল করতে না পারলে আবারও তৈরী হতে হতে পারে নতুন নতুন বাহিনী।
চলতি মাসের ১৩ ডিসেম্বর রাতে বনের হারবাড়িয়ার চরাপুটিয়া, কলামুলো, তাম্বল বুনিয়া ও হরমল খাল থেকে পৃথক ১১ জন জেলেকে অপহরন করে দস্যু নয়ন বাহিনী সদস্যরা, মুক্তিপন চাওয়া হয় জনপ্রতি ১০-১৫ হাজার টাকা। ৭ দিন পর দস্যুদের জিম্মি দশা থেকে ২১ ডিসেম্বর প্রশাসনের অভিযানের মুখে মুক্তিপন দিয়ে ছাড়া পায় জেলেরা। এশাসনের তোপের মুখে ২৬ ডিসেম্বর ভোর রাতে চাঁদপাই রেঞ্জের মৃগামারী এলাকা থেকে ৩ বন দস্যুকে গ্রেফতার করে মোংলা থানা পুলিশ। উদ্ধার করা অগ্নেয়াস্ত্র সহ দস্যুতার কাজে ব্যাবহৃত বিভিন্ন মালামাল। নতুন করে সুন্দরবনে বন দস্যু প্রভাব বেড়ে যাওয়ায় জেলে পরিবারের মাঝে এখন চলছে দস্যু আতংক। মাছ ও কাকড়া আহরণে যাওয়া জেলেরা বনে ছেড়েও দিয়েছে অনেকে।
মোংলা-রামপাল সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আসিফ ইকবাল বলেন, সুন্দরবনে দস্যু মুক্ত রাখতে অভিযান চলমান রেখেছেন পুলিশ সহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা, জেলেদের নিরাপত্তা ও বন দস্যুদের নির্মুল করতে না পারবে ততক্ষন তাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
র্যাবের কাছে ২০১৬ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সুন্দরবনের সর্ব মোট ৩২টি বাহিনীর প্রধান সহ ৩২৪ জন দস্যু আতœসমর্পন করে। এসময় তাদের কাছ থেকে ৪২৬টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ২২ হাজার ৫০৪ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।