#বাঙালি জাতির প্রত্যেকটি অর্জনের সাথে আওয়ামী লীগ জড়িত: শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। #বঙ্গবন্ধু দিয়েছেন স্বাধীনতা, শেখ হাসিনা দিচ্ছেন অর্থনৈতিক মুক্তি: ড. মো. হারুন-উর-রশিদ আসকারী। #বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আরো গতিশীল করবে মেট্রোরেল: কর্ণেল (অব.) কাজী শরীফ উদ্দীন।
প্রকাশ: বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২২, ১১:৫৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
বাঙালি জাতির প্রত্যেকটি অর্জনের সাথে আওয়ামী লীগ জড়িত। আসলে আজকের এই দিনটিকে ঘিরে একটি কথা সবার প্রথমে বলতে চাই যে, একেরপর এক ইতিহাস রচনা করে চলেছেন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু আর তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনৈতিক মুক্তি দিয়ে যাচ্ছেন।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৯৩০তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হারুন-উর-রশিদ আসকারী, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক কর্নেল (অব.) কাজী শরীফ উদ্দীন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিনিয়র সাংবাদিক, ভোরের পাতা সংলাপের সমন্বয়ক মাকসুদা সুলতানা ঐক্য।
শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, বাঙালি জাতির প্রত্যেকটি অর্জনের সাথে আওয়ামী লীগ জড়িত। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে, বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ বাঙালি জাতির সব অর্জন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বুধবার উদ্বোধন করেছেন বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোরেল। এমআরটি-৬ লাইনের দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও অংশ পর্যন্ত আজ থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। আজ প্রধানমন্ত্রীও তার সহযাত্রীরা মেট্রোরেলে চড়েছেন। আগামীকাল সকাল থেকে সাধারণ যাত্রীরা মেট্রোরেলে চড়তে পারবেন। রাজধানীর গণপরিবহন ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন নিয়ে আসবে মেট্রোরেল। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে শেখ হাসিনার সরকার রাজধানীবাসীর জন্য মেট্রোরেল চালুর উদ্যোগ নেয়। ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসেন খালেদা জিয়া, আর আলোর মুখ দেখেনি মেট্রোরেল প্রকল্পের ফাইল। ২০০৮ সালে আবার ক্ষমতায় এসে শেখ হাসিনার সরকার মেট্রোরেল নিয়ে কাজ শুরু করে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আজ চালু হলো মেট্রোরেল। উন্নয়নের ধারায় আরও একধাপ এগিয়ে গেলো দেশ। ঢাকার যানজট নিরসনে মেট্রোরেল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সে লক্ষ্যে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) গঠন করা হয়। এই কোম্পানির মাধ্যমে প্রথম প্রকল্প নেওয়া হয় ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট লাইন-৬। যা এমআরটি-৬ নামে পরিচিত। প্রকল্পটি উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে কমলাপুর পর্যন্ত বিস্তৃত। এই প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ২১ দশমিক ২৬ কিলোমিটার। আজ উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশের উদ্বোধন করা হয়েছে। এ পর্যন্ত মেগা প্রকল্প থেকে শুরু করে যত উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে, তার সবই দেশ ও মানুষের উন্নয়ন ঘিরে। অবকাঠামো উন্নয়নের কথাই ধরা যাক। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্প, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রকল্প, রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ, বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ প্রকল্প, ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ যখন পুরোপুরি শেষ হবে তখন আমরা অবশ্যই উন্নত দেশের কাতারে চলে যাবো।
অধ্যাপক ড. মোঃ হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, আসলে আজকের এই দিনটিকে ঘিরে একটি কথা সবার প্রথমে বলতে চাই যে, একেরপর এক ইতিহাস রচনা করে চলেছেন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু আর তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনৈতিক মুক্তি দিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে বিজয়ের মাসের শুরুর দিকে তিনি আমাদের সামনে নতুন কনসেপ্ট দিয়েছেন যে আমরা এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের দিক যাচ্ছি। আমরা ভিশন ২০২১ এর পর থেকে মিশন ২০৪১ দিকে ধাবিত হচ্ছি। ডিজিটাল বাংলাদেশের সাফল্যের পর আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে যেতে যাচ্ছি। সেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে আজকে আমরা যে বিষয়ের সম্মুখীন হলাম সেটা হচ্ছে আমাদের গণপরিবহনে এই প্রথমবারের মতো মেট্রোরেলের সংযোজন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আজ ২৮ ডিসেম্বর চালু হচ্ছে মেট্রোরেল। উন্নয়নের ধারায় আরও একধাপ এগিয়ে গেলো দেশ। এটা কিন্তু আমাদের উন্নয়নের একটি ঐতিহাসিক ধাপ। পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, কর্ণফুলী টানেলসহ অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ এখন একটি শক্তিশালী অর্থনীতির উপর দাঁড়িয়ে আছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান। সারা বিশ্ব বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করছে। পদ্মাসেতুর পর মেট্রোরেল হলো বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম যোগাযোগ প্রকল্প। যানজটের নাজেহাল পরিস্থিতি থেকে মুক্তির স্বপ্ন দেখাচ্ছে মেট্রোরেল প্রকল্প। অবকাঠামো থেকে শুরু করে যার সবকিছুই তৈরি করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে। সরকারি-বেসরকারি তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকায় প্রায় ২ কোটি লোকের বসবাস। আমরা যদি ধরে নেই ১ কোটি লোকও যদি কাজের সঙ্গে জড়িত থাকে তাহলে ৮০ লক্ষ কর্মঘণ্টা একদিনে নষ্ট হচ্ছে এই যানজটের কারণে। এখন আমরা যদি একজনের নূন্যতম আয় ২০০ টাকা করে ধরি তাহলে এক বছরে ২০ হাজার কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে আর ৮০ লক্ষ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। সেজন্য আমাদের ঢাকা শহরে যানবাহনের সহায়ক হিসেবে এই মেট্রোরেল সংযুক্ত হয়েছে।
অধ্যাপক কর্ণেল (অব.) কাজী শরীফ উদ্দীন বলেন, মেট্রোরেল এখন আর স্বপ্ন নয়। এটি বাস্তব। এক দশকের অপেক্ষার পর উদ্বোধন হয়েছে মেট্রোরেল। উন্নত দেশগুলো বহু আগে মেট্রোরেল করলেও এর আগে বাংলাদেশের কোনো সরকার এটা নির্মাণের সাহস দেখায়নি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা বাংলাদেশের রূপান্তরের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেল নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে ২০১২ সালে প্রকল্প অনুমোদন করেন। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে দৃঢ়তার সঙ্গে প্রকল্পের কাজ অব্যাহত রেখেছেন। মূলত মেট্রোরেল নির্মাণ হবে রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত। এ জন্য ২০১২ সালের জুলাই মাসে মেট্রোরেল প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এটি বাস্তবায়নের প্রাথমিক মেয়াদ ছিল ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। যদিও পরে মেয়াদ বাড়ানো হয়। কিন্তু তার আগেই মেট্রোরেলের একটি অংশ উদ্বোধন হয়েছে আজ। বাংলাদেশের অব্যাহত উন্নয়ন অভিযাত্রায় স্বপ্নের পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের পর মেট্রোরেল আরো একটি বিস্ময় জাগানো মাইলফলক অর্জন। চলতি বছরের ২৫ জুন চালু হওয়া পদ্মা শুধুই একটি সেতু নয়। এটি একসময়ের ৮৮ ভাগ বৈদেশিক সাহায্যনির্ভর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতার ইতিহাস এবং ষড়যন্ত্র ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সাহস ও সততার উদাহরণ সৃষ্টির সেতু। রাজধানীর যানজট নিরসন ও সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব যাতায়াতব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগেই শুরু হয় মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ। ঢাকা শহর ও পার্শ্ববর্তী এলাকার যানজট নিরসনে ২০৩০ সালের মধ্যে ছয়টি মেট্রোরেলের মাধ্যমে একটি আধুনিক ও সমন্বিত যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও মেট্রোরেলের পাশাপাশি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও পাতালরেলের কাজও হাতে নেওয়া হয়েছে।সাধারণ মানুষ যখন এসব কার্যক্রমের সুফল ভোগ করতে শুরু করবে, ঠিক তখনই বদলে যাবে রাজধানী ঢাকা। আজকের এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে স্মরণ করতেই হয় ২০১৬ সালের ১ জুলাই হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় নিহত জাপানী বন্ধুদের কথা। তারা মেট্রোরেলের কাজেই বাংলাদেশে অবস্থান করছিলেন। অথচ ভাগ্যের নির্মমতা এই যে তারাও রেহাই পায়নি জঙ্গি আক্রমণের হাত থেকে। আজকের এই ঐতিহাসিক দিনে আমি তাদেরকেও স্মরণ করছি। ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলার অংশ হিসেবে এ খাতে মেগা প্রকল্পসহ অসংখ্য উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়, যা বাস্তবায়নের পর একের পর এক উদ্বোধন করা হচ্ছে। আমরা আশা করছি ২০৪১ সালের আগে সেক হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। আর সেই বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ।