প্রকাশ: সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২, ৮:৩৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে নানা চ্যালেঞ্জ সত্বেও আলু চাষে ভরা মৌসুমের শেষমূহুর্তে স্থানীয় কৃষকদের কর্ম ব্যস্ততা চলছে। এরই মধ্যে উঁচু জমিগুলোতে আলুর গাছ দিনদিন বড় হচ্ছে। আবার আবাদি জমিতে জলাবদ্ধতার ফলে আলু চাষে বিড়াম্বনার শিকার হচ্ছেন অনেকে। এসব জমিতে বীজআলু বপন করতে দেখা গেছে। উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে বীরতালা আটপাড়া, তন্তর ও কুকুটিয়ায় ব্যাপক আলুর চাষাবাদ করা হচ্ছে। এর মধ্যে বীরতারা ও আটপাড়া ইউনিয়নের প্রায় আলু চাষীরা জমিতে বীজ বপনের কাজ সম্পন্ন করেছেন। উপজেলার কুকুটিয়া ও তন্তর এলাকায় এখনও জমি হালচাষ ও আলুবীজ বপনের কাজ করছেন কৃষক। ধারনা করা হচ্ছে আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ অঞ্চলে জমিতে আলুর বীজ বপনের কাজ সারতে পারবেন।
উপজেলায় এ বছর প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে। এই কৃষিযজ্ঞে হাজার হাজার কৃষক ও কৃষি শ্রমিক মাঠে কাজ করছেন। এর আগে গেলো বছর নানা প্রতিকূলতার মাঝে কৃষক তাদের উৎপাদিত আলুর কাঙ্খিত ফলন ও মূল্য পাননি। এতে শতশত আলু চাষী লোকশানের মুখে পড়েন। লোকশানের কিছুটা কাটিয়ে উঠতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ফের আলু চাষে লাভের স্বপ্ন দেখছেন। এ বছর আলু চাষের প্রথমদিকে সিত্রাংয়ের প্রভাবে ফসলী জমিতে জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থানীয় প্রশাসন বেশকিছু দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জন্য প্রদক্ষেপ নেয়। জানা গেছে, খোলা বাজারে আগাম নতুন আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা করে। হিমাগারের বস্তার খাবার আলুর পালা (৫ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বীরতারা ও আটপাড়ায় বেশীর ভাগ জমিতেই আলুর চারা গজাচ্ছে। কোন কোন জমিতে পানি দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া কুকুটিয়া ও তন্তর এলাকায় জমিতে পুরোদমে বীজ বপনের কাজ চলছে। এ কাজে হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করছেন। বীরতারা এলাকার আবুল হোসেন, নীলচাঁন, মোখলেছ খান, শহীদ শেখ, আবুল বেপারী জানান, গেলো বছর আলু লোকশান হয়েছে। এ বছর সিত্রাংয়ের প্রভাবে জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হলে বিড়ম্বনায় পড়েন। প্রথম দিকে ৫০ কেজির বস্তার বীজআলু ১৫শ’ থেকে ১৭শ’ টাকা কিনেছেন। বাক্স আলুর বীজ ২৮শ’ থেকে ৩৫শ’ টাকায় ক্রয় করেছেন। বার বার লোকশানের মুখে পরে কৃষকরা আলু চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে। বাধ্য হয়েই আমরা আলুর চাষ করতে হচ্ছে। দেখি এবার আলু চাষে ভাগ্য কি লিখা আছে বলেন তারা।
কুকুটিয়া এলাকার আলম জানান, গত বছর তিনি ১৪ একর জমিতে আলু চাষ করেছিলেন। দাম না পাওয়ায় ৭-৮ লাখ টাকা লোকশান হয়েছে। তার বীজআলু এখনও হিমাগারে পরে আছে। এগুলো এখন খাবার আলু হিসেবে বিক্রি করতে হবে। এবার নিজস্ব ৩ একর জমিতে আলু চাষাবাদ করছেন। কয়েকদিনে মধ্যেই জমিতে বীজআলু বপনের কাজ সম্পান্ন হবে।
শ্রীনগর উপজেলা কৃষি অফিসার শান্তনা রানী জানান, জমিতে আলুবীজ বপনের কাজ প্রায় শেষের দিকে। এ অঞ্চলে ফসলী জমির পানি নিস্কাশনে বিভিন্ন প্রদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে। কৃষকরা যেন তাদের জমিতে নিবিঘেœ চাষাবাদ করতে পারে সেই লক্ষে আমরা মাঠে কাজ করছি। এ বছর প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে।