পাবনার চাটমোহরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত বড়াল নদ,চিকনাই ও গুমানী নদী এখন অস্তিত্ব সংকটে।দখল-দূষণসহ নানা কারণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে এ অঞ্চলের নদ-নদী।
বড়াল নদে গৃহস্থালি বর্জ্য,মুরগির খামারের বিষ্ঠা,পথিলিন ফেলায় তলদেশ ফুলেফেঁপে উঠেছে। দূষিত হচ্ছে আশপাশের এলাকার পরিবেশ। অবৈধ দখলদাররা যত্রতত্র স্থাপনা নির্মাণ করে বসবাস ওব্যবসাবাণিজ্যে পরিচালনা করে আসছেন। ধানসহ নানা ধরনের সবজি চাষ করছেন বড়াল নদে। দীর্ঘদিন ধরে খনন না করা, সচেতনতা বৃদ্ধিতে সরকারি কোনো উদ্যোগ না নেওয়া, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করা, নানা কারণে একসময়ের বড়াল নদের এমন করুণ পরিণতি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। নদী নাব্যতা হারিয়েছে স্রোতহীনতায়। নদীপাড়ের মাঠে অপরিকল্পিত গভীর নলকুপ বসিয়ে আবাদ করা হচ্ছে। এতে ভূগর্ভস্থ পানিতে টান পড়ে, দ্রত ভূউপরিস্থ পানি শুকিয়ে যাচ্ছে।
চলমান গুমানী নদীর তলদেশে ইরি ও বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ হচ্ছে। গুমানী শুকিয়ে এখন চৌচির। পানি না থাকায় নদী কেন্দ্রিীক সকল কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। নদীর মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে ইটভাটায়। নদীর বুকে আবাদ ধানে পাক ধরেছে। দূষণ চলছে নানাভাবে। কিন্তু কারো কোন মাথাব্যাথা নেই।
একই অবস্থা চিকনাই নদীর।সরেজমিন শনিবার ২৪ ডিসেম্বর তিনটি নদী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে,একদার স্রোতশিনী বড়াল,চিকনাই ও গুমানী নদী শুকিয়ে গেছে। শুকনো মৌসুম না আসতেই নদীটির বুকে এখন বোরোর বীজতলা। এগুলো এখন মরা নদীতে পরিণত হয়েছে। প্রভাব পড়েছে কৃষি কাজে আর ব্যবসা বানিজ্যে। নদীগুলো খনন না করার কারনেই এমন হাল হয়েছে বলে অভিমত বড়াল ও চলনবিল রক্ষা আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব এস এম মিজানুর রহমানের।
গুমানী নদীর একাংশে খনন করা হয়েছে। বিআইডবিইটিএ এই খনন কাজ করেছে বলে জানালেন স্থানীয়রা। শুকিয়ে যাওয়া নদীর মাটি চলে যাচ্ছে অবৈধ ইটভাটাগুলোতে। নদীর অধিকাংশ এলাকার তলদেশে ধানের আবাদ করা হয়েছে।
চলনবিল রক্ষা আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব ও বাপার নির্বাহী পরিষদের সদস্য এস এম মিজানুর রহমান বলেন,আমরা নদী বাঁচাতে আন্দোলন করছি। নদনদী মানুষের জন্য আশির্বাদ। বড়াল নদসহ এ অঞ্চলের সকল নদ-নদী খননসহ পানি প্রবাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করার দাবি আমাদের।
তিনি আরও বলেন, নদীকে বানানো হচ্ছে ময়লার ভাগাড়! নদীতে চাষাবাদ করা হচ্ছে। দখল তো আছেই। আমরা সামাজিক সংগঠন হিসেবে সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউওনও মোছা. মমতাজ মহল দৈনিক ভোরের পাতাকে বলেন, বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।