প্রকাশ: রোববার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২২, ৮:০৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে সবুজের বুক চিরে সরিষা ফুলের সমারোহ জৌলুস ছড়াচ্ছে। নজরকারা হলুদের সমারোহ দৃষ্টি কেড়ে নিচ্ছে আপন মনে। মৌ-মৌ ঘ্রাণে মধু আহরণে মৌ-মাছির দল খেলা করছে হলুদ স্বপ্নপুরীতে। পৌষের শিশির ভেজা একেক খন্দ সবুজ মাঠ যেন হলুদ চাদরে ঢাকা পড়েছে। দৃষ্টিনন্দন প্রকৃতির এমন সৌন্দর্য উপভোগে পথচারীদের মনে আনন্দের দোলায় ঢেউ খেলছে হলুদের রাজ্যপুরী। মনের আনন্দে নানা শ্রেণি পেশার মানুষ হলুদের রাজ্যে ডোবে এ অপরূপ সৌন্দর্যের মাঝে সেলফি ও ছবি তুলে নিজেকে ক্যামেরা বন্দি করছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব প্রকৃতির সৌন্দর্য পোষ্ট করে প্রকাশ করছেন নিজের অনুভুতির কথা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, শ্রীনগর উপজেলার আড়িয়াল বিল এলাকার শ্রীধরপুর, বাড়ৈখালী, মদনখালী, আলামপুর ও উপজেলার বীরতারা, ছয়গাঁও, সাতগাঁও এবং ভাগ্যকুল এলাকার পদ্মা নদীর তীরবর্তী চরের জমিতে সরিষার চাষ করা হচ্ছে। প্রায় জমিতেই সরিষা গাছের সবুজের ছাঁয়া ঢাকা পরছে হলুদ ফুলের আবরণে। এ অবস্থায় সরিষা ক্ষেতের হলুদ ফুলের সমারোহ ডাকে গ্রামীন পরিবেশ মনোমুগ্ধকর হয়ে উঠেছে।
স্থানীয়রা বলেন, প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ সরিষা ক্ষেতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসছেন। বিশেষ করে শীতের বিকালে সরিষা ফুলের নজরকার দৃশ্য দেখতে মানুষ বেশী আসছেন। কয়েকজন দর্শনার্থী বলেন, সরিষার ফুলের এমন নান্দনিক সৌন্দর্য উপভোগ করা শুধু গ্রাম্য পরিবেশে। তাই বন্ধু বান্ধব নিয়ে ছুটি কাটাতে কিছুদিনের জন্য গ্রামের বাড়িতে এসেছি। সরিষা ফুলের সৌন্দর্য ঘুরে দেখছি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছর ডিসেম্বরের প্রথমদিকে অসময়ের বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে প্রায় সাড়ে ৩শ’ হেক্টর জমিতে স্থানীয়রা সরিষার চাষে তেমন সুফল পাননি। বৃষ্টিতে সরিষার জমি অনেকাংশে নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি সরিষার কাঙ্খিত ফলন পাননি স্থানীয় চাষীরা।
এ বছর উপজেলায় প্রায় ৫শ’ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কৃষক মাঠে কাজ করছেন। বাড়ৈখালী ও শ্রীধরপুরে বেশকিছু জমিতে দেশী জাতের রাই/চৈতা সরিষার চাষ করছেন স্থানীয়রা। প্রতি বছর এ অঞ্চলে সরিষার ফুলের মধু সংগ্রহের জন্য মৌ-মাছির দল নিয়ে মৌয়ালদের আসতে দেখা গেলেও এ বছর এখনও পর্যন্ত কোন মৌয়াল আসার খবর পাওয়া যায়নি।
শ্রীনগর উপজেলার কৃষি অফিসার শান্তনা রানী জানান, উপজেলায় ৪শ’ ৭৫ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করা হচ্ছে। জাতীয় ফসল উৎপাদণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে (তেল জাতীয়) প্রকল্প বাস্তবায়নের ওপর জোর দেয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় উচ্চ ফলনশীল বারি-১৪, ১৭, ৯ ও বিএডিসি-১ জাতের সরিষা চাষে ৬০টি (রাজস্ব) প্রদর্শনী রয়েছে। সরিষা চাষে উপজেলায় মোট ১১শ’ ৫০ জন কৃষককে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।