খুলনার পাইকগাছায় কদর বেড়েছে ফুটপাতের পুরাতন শীতবস্ত্র দোকানের। পৌষের শুরুতে উপকূলীয় অ লে শীত জেঁকে বসেছে। শৈত প্রবাহ ও হাড় কাঁপানো শীতে জুবুথুবু মানুষসহ প্রাণীকূল। পৌষের এই শীতে প্রত্যেকের জন্য শীতবস্ত্র আবশ্যক হয়ে পড়েছে। নিন্ম আয়ের মানুষ ও দরিদ্রদের ভরসা কমদামের ফুটপাতের শীতবস্ত্রের দোকান। সাধ্যমত শীতবস্ত্র ক্রয় করছে। ফুটপাতের পুরাতন কাপড়ের দোকান গুলোতে মাঝে মধ্যে ভালো মানের পোশাক পাওয়া যায়। যা দেখতে একেবারেই নতুনের মত। তার উপর দরিদ্র নিন্ম আয়ের মানুষের জন্য একমাত্র অবলম্বন। আবার ফুটপাতের দোকানগুলোতে মধ্যবিত্ত ও ধনীদের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে। শীতের তীব্রতা বেশি হওয়ায় নতুন শীতবস্ত্রের পাশাপাশি পুরাতন শীতবস্ত্র বিক্রি হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে।
উপজেলায় ৩ থেকে ৪টি স্থায়ী পুরাতন কাপড়ের দোকান থাকলেও শীতের এ সময় পৌর সদরে পোষ্ট অফিসের সামনে, মাছ কাটা রোড, পরিবহন কাউন্টারের পাশে ও পৌরসভার পাশের ৬-৭টি পুরাতন শীত বস্ত্রের দোকান বসেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য উপজেলার বাণিজ্যিক শহর কপিলমুনি রবি ও বৃহস্পতিবার হাট বাদেও অন্যদিন শীতবস্ত্রের ফুটপাতে দোকান বসছে।
তাছাড়া বিভিন্ন হাট-বাজারে শীতের পুরাতন কাপড়ের দোকান বসেছে। এসব দোকানে শীতের জ্যাকেট, সুয়েটার, কোর্ট, মাফলার, গেঞ্জী, মোজা ও মেয়েদের বিভিন্ন ডিজাইনের গরম কাপড় পাওয়া যাচ্ছে। তাছাড়া ভ্রাম্যমাণ ভ্যানে করে বিভিন্ন হাট-বাজারে ৫০-১০০ টাকা দরে বাচ্চাদের বিভিন্ন রকম শীতবস্ত্র বিক্রি করছে। শীতের তীব্রতা বাড়ায় শীতবস্ত্রের বিক্রিও বেড়েছে। পুরাতন কাপড়ের দোকানে অনেক ভালো মানের পোশাক পাওয়া যায়। যা নতুন কাপড়ের দোকানে পাওয়া যায় না। সে জন্য মাঝে মধ্যে এসব দোকানে উচ্চ বিত্তদের দেখা যায়। গরীব মানুষ পুরাতন কাপড় কম দামে কেনার জন্য ফুটপাতের দোকানে ভীড় করে বেশি। কিন্তু ধনীরা এখানে কেনাকাটা করায় কাপড়ের দাম বেড়ে চলেছে।
নিন্ম আয়ের কয়েকজন ক্রেতা জানান, পয়সা ওয়ালাদের কাছে শীতের পোশাকটি পছন্দ হলেই হল, তাদের কাছে দাম কোন বিষয় না। এ কারনে পুরানো ভলো মানের পোশাকের দাম বেশি হওয়ায় আমার এমন হতদরিদ্র ক্রেতারা পছন্দের পোশাকটি ক্রয় করতে হিমশিম খেতে হয়। শীতবস্ত্রের চাঁহিদা বাড়ায় ব্যবসায়ীরা ঢাকা ও চট্রগ্রামের বিভিন্ন মার্কেট থেকে শীত পোষাকের গাইট কিনে আনেন। এসব গাইটে থাকে হরেক রকমের পোষাক। পুরনো এসব পোষাকের মানও ভালো দামেও সস্তা। ব্যবসায়ীরা পোষাকের গাইট ক্রয় করে ভাগ্যের উপর নির্ভর করে।
এসব গাইট কেনার আগে মুখ খুলে দেখানো হয় না। কিনে আনার পর মুখ খুলে লাভ লোকসানের হিসাব নির্ধারণ করা হয়। প্রতিটি গাইট ১০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রয় হয়। পুরনো গাইটের এসব পোষাকের নির্দিষ্ট কোনো দাম নেই। পোষাকের মানের উপরে দাম নির্ধারণ করা হয়। আর ক্রেতার পছন্দের উপর নির্ভর করে ব্যবসায়ীরা দাম চান। পুরাতন কাপড় ব্যবসায়ীরা জানায়, কিছুদিন আগেও শীত না থাকায় পুরাতন শীতবস্ত্র নিয়ে চিন্তায় পড়েছিলাম। শীত চলে গেলে এ পোষাক তো আর বিক্রি হবে না। তবে এখন শীত বেড়ে যাওয়ায় বেচাকেনা ভালো হচ্ছে।
বাচ্চাদের শীতবস্ত্র বিক্রেতা হোসেন আলী জানান, শুরুতে শীত কম থাকায় বিক্রি তেমন একটা ছিল না। তবে শীতের তীব্রতা বাড়ায় বাচ্চাদের পোশাকের চাঁহিদা বেড়েছে। ২০-৩০ টাকা থেকে শুরু করে ৫ থেকে ৮শত টাকা দর থেকে বিভিন্ন দামের পোশাক রয়েছে।
তারা আরো জানায়, উচ্চবিত্ত ক্রেতাদের কোনো পোশাক পছন্দ হলে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকায় বিক্রি করা যায়। শীতে উপকূলীয় দরিদ্র, ও নিন্ম আয়ের মানুষের পছন্দ কম দামের পুরাতন শীতবস্ত্রের ফুটপাতের দোকান। তাই শীত জেঁকে বসায় দরিদ্র ও অল্প আয়ের মানুষ শীতের হাত থেকে বাঁচতে শীতবস্ত্র কিনছে ফুটপাতে থেকে। আর সবমিলিয়ে কদর বেড়েছে শীতবস্ত্র ফুটপাত দোকানের।