এদিকে ইভিএমে আস্থা না থাকলেও নির্বাচন সুষ্ঠু হবে বলে আশাবাদ জানিয়েছেন মেয়র পদে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাফা। ভোট নিয়েও কোনো সংশয়ে নেই তিনি।
আর, নির্বাচনী আচরণবিধি মেনেই প্রচার চালাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী লুৎফা ডালিয়া। অন্যদিকে, নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে সব প্রস্তুতি নেয়ার কথা জানিয়েছে ইসি।
রোববার মধ্যরাত থেকে পর্দা নামছে রংপুর সিটি নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা। শেষ মুহূর্তের প্রচারে সরব হয়ে উঠেছে ভোটের মাঠ। কাকভোর থেকে পুরো নগরী চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা।
নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। তবে শেষ দিনের প্রচারে আবারো নির্বাচনে ইভিএম নিয়ে সংশয়ের কথা জানিয়েছেন মেয়র পদের প্রার্থীরা।
সকালে এক নম্বর ওয়ার্ডের হাজিরহাট এলাকায় গণসংযোগে নামেন জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
পরে নগরীর জীবনবীমা মোড়ে গণসংযোগের সময় বলেন, এই ভোট নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। তবে ইভিএম নিয়ে তার ও দলের আস্থা নেই বলেও জানান তিনি।
উন্নয়ন নিয়ে মোস্তফা বলেন, তার আগের পরিষদে সরকারি দলের মেয়র পাঁচ বছরে ২৭০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করলেও তার আমলে এক হাজার ২৫০ কোটি টাকার কাজ হয়েছে।
নিজের জয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, বিগত বছরগুলোতে মেয়র হিসেবে তার উন্নয়নের কর্মকাণ্ড বিচার করে জনসম্পৃক্ততা বিবেচনা করে লাঙলের পক্ষে গণজোয়ার উঠেছে।
নগরির সুরুভী উদ্যান ও ইসলামবাগ হনুমানতলায় গণসংযোগ করেন মেয়র পদে নৌকার প্রার্থী হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া। এ সময় তিনি বলেন, ইভিএমের ভোট হবে সুষ্ঠু।
তিনি আরও বলেন, নৌকার বিজয় নিশ্চিত জেনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা নানা অভিযোগ তুলছেন। যা ক্ষতিয়ে দেখবে ইসি। তিনি সবাইকে কেন্দ্রে এসে নৌক প্রতীকে ভোট দেয়ার আহবান জানান।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী লতিফুর রহমার মিলন গণসংযোগ করেন নগরীর সালেক পেট্রোল পাম্প এলাকায়। এসময় তিনি নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার প্রত্যাশা করেন।
এদিকে, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে রংপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এতে সাদা পোশাকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন থাকবে।
রোববার রংপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন জানান, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
আজ রাত আটটা থেকে ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী সব ধরনের নির্বাচনী মাইকিং ও মধ্যরাত থেকে প্রচার-প্রচারণা বন্ধ হবে। এছাড়া রোববার রাত ১২টার পর থেকে ২৭ ডিসেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত রসিক এলাকায় মোটারবাইক, ইঞ্জিনচালিত ইজিবাইকসহ ব্যক্তিগত প্রাইভেট কার ও নির্বাচনি কাজে ব্যবহৃত যানবাহন ব্যতীত সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
তিনি আরও জানান, প্রতিটি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা থাকবে। ইভিএমে ভোট দেয়ার সহজ করতে এরিমধ্যে সব ওয়ার্ডে মকভোটিংসহ জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম শেষ হয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রের বিষয়ে তিনি বলেন, রসিকে ২২৯ কেন্দ্রের মধ্যে ৮৬টি ঝুঁকিপূর্ণ। এসব কেন্দ্রে প্রয়োজনের তুলনায় অধিক সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে।
প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে অস্ত্রসহ পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন থাকবে। অস্ত্র ছাড়াও পুলিশ, বিজিবি ও আনছার সদস্যরাও সার্বক্ষণিক কেন্দ্রে অবস্থান করবে।
এর বাইরে পুরো রসিক এলাকায় ১১ প্লাটুন বিজিবি থাকবে। আর টহল টিমের পাশাপাশি প্রতিটি ওয়ার্ডে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন বলেন, ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন এর জন্য সব ব্যবস্থা সম্পন্ন করা হয়েছে।
ভোটার ছাড়া অন্য কেউ ভোটকক্ষের গোপন বুথে প্রবেশ করতে পারবে না। প্রবেশ করলেই সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়বে এবং তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।